মধ্যরাত : পর্ব-১৩১

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),

 (গত পর্বের পর) : অমিয় বলল আপনার নাতনীর নাকি টরেন্টোয় বিয়ে দেবেন। বিজন আবার বলল, আপনি কলিগ অথচ আমাদেরই এক কলিগের শালার জন্য বললাম, আপনি পাত্তাই দিলেন না। হেসে উড়িয়ে দিলেন। সুশীল বলল, স্বাস্থ্যবান-সুন্দর-ব্রিলিয়ান্ট ছেলে আপনার নাতনীর সাথে ভাল মানাত। আমি উত্তর দেবার আগেই সুশান্ত ঢুকে বলল, আপনারা সকলে প্রশান্তের বন্ধু ও এত বড় অসুখের থেকে উঠল। আর তা ছাড়া ব্লাড প্রেসারটা এখন উঠা-নামা করছে। এসব বিয়ে সাদীর কথা বলে উত্তেজিত করা কি ঠিক হবে ? সকলেই এ-ওর মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। সুশান্ত বলল, বিয়ে ভবিতব্যের লিখন, প্রজাপ্রতির নির্বন্ধ। থাকলে হবে। কোথায় হবে আমরা আপনারা কেউই বলতে পারব না।
সুশান্ত বলল, আমাদের মেয়েও শিক্ষিত বয়স্কা, তারও মতামতের মূল্য দিতে হবে। তার যেখানে মত আমরা সেখানে মত দিব। আপনারা বললে, আমরা বললে হবে না। আমি বললাম, ভাই আমার শরীর খুবই দুর্বল। নাতনীর ব্যাপারে কিছুই ভেবে দেখিনি। মেয়ে বড় হলে সকলেই বিয়ের কথা বলে, সেটা স্বাভাবিক। প্রফেসররা দল বেধে এসেছিল, দল বেধে চলে গেল। আমি চুপ করে শুয়ে থাকলাম। সুশান্ত বসে বসে উমার সাথে গল্প জুড়ে দিয়েছে। সুশান্ত বলে, প্রফেসররা মগের মুল্লুক পেয়েছে ?
আমি শুয়ে শুয়ে আকাশ-পাতাল ভাবছি। নিজে কোনদিন বিয়ে সাদী করলাম না। আর আজ দোলার বিয়ের জন্য আমাকে লোকে বিব্রত করে তুলছে। বিয়ে সাদী হচ্ছে আন্তরিকতার জিনিস। দু-পক্ষের আন্তরিকতার উপর একটা শুভ কাজ নির্ভর করে। জোর করে কোন কিছু হয় না। সুশান্ত বলল, প্রশান্ত তুইত একটু সুস্থ হয়েছিল চল। আমরা এখন টরেন্টোয় চলে যাই। আমি বললাম, সুশান্ত আর দু-চার দিন পর চল আমরা চলে যাই। আমি শুয়ে শুয়ে দোলাকে আমার কাপড়-চোপড় গুছিয়ে নিতে বললাম। আর বললাম, তোর কাপড়-চোপড় গুছিয়ে নে। আমরা দু-একদিনের মধ্যে টরেন্টোয় যাব। এখানে এদের জ্বালায় বিশ্রাম নিতে পারবনা।
দোলা দাঁড়িয়ে থেকে চুপ করে থাকল। কিছু বললনা। উমা বলল, এ মন্ট্রিলের লোকগুলো কি রকম। আমি বললাম, ওরা সবাই বাংলাদেশের লোক। এখন এদেশে চাকুরী করতে এসেছে। ওদের জন্মস্থান মন্ট্রিলে না। সুশান্ত খুব রেগে গেছে। দেখলাম মুখ ভার ভার। আমি ওকে চিনি, ও মানুষ খুব সোজা। আবার রেগে গেলে সামলানো মুস্কিল। সুশান্ত বলল, প্রশান্ত দু’দিনের ভিতর আমরা চলে যাব। এখানে আমার আর থাকতে ইচ্ছে করেনা। আমাদের টরেন্টোয় কেউ জোর খাটাতে আসেনা। মানুষের ব্যক্তিগত বলে একটা জিনিস আছে, তা আর মানতে চায় না। এডুকেশন লাভ করে ভদ্রলোকদের এই শিক্ষা লাভ হয় ?

(চলবে——-)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।