লালমোহনে দাফনের ৯ দিন পর প্রতিবেশির মারধরে বৃদ্ধের মৃত্যুর অভিযোগ
কমছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমান
![](https://bholarbani.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
বছরখানেক আগেও আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। তা এখন ৩২ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। আইএমএফের হিসাবে আরো কম, ২৪ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। ফলে রিজার্ভ নিয়ে দেশ বড় সংকটের মুখোমুখি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। অথচ অপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবা আমদানি কমছে না। এমন অনেক পণ্য অবাধে আমদানি করা হচ্ছে, যেগুলো দেশীয় শিল্পের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে।
অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক নানা কারণে দেশের অর্থনীতি ক্রমেই গভীরতর সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁদের মতে, এই সংকট থেকে রক্ষা পেতে হলে অপ্রয়োজনীয় আমদানি উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনতে হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চিতি শক্তিশালী করতে হবে। একই সঙ্গে দেশীয় শিল্প রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
তিন বছর ধরে চলা কভিড মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অবরোধ-নিষেধাজ্ঞার কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ ব্যাহত হওয়াসহ নানা কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে সংকট ক্রমেই গভীরতর হচ্ছে। এ অবস্থায় অনেক দেশই নিজ নিজ অর্থনীতির স্বার্থে বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় রোধে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাংলাদেশও তেমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু অর্থনীতিবিদদের মতে তা পর্যাপ্ত নয়। ফলে অপ্রয়োজনীয় বা কম প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির পাশাপাশি এমন সব পণ্য আমদানি করা হচ্ছে, যেগুলো দেশেই চাহিদা অনুযায়ী প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে এ ধরনের পণ্য আমদানির পেছনেই খরচ হয়ে গেছে মোট আমদানি ব্যয়ের ৪৫ শতাংশ। ফলে দেশে তৈরি অনেক পণ্য অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে। দেশের শিল্প ও কর্মসংস্থানের ক্ষতি হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে অনেক দেশেই অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক আরোপ করা হয়। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও বাংলাদেশের পাটসহ আরো অনেক পণ্যে অ্যান্টিডাম্পিং শুল্ক রয়েছে। অনেক দেশেই স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষায় অধিক হারে সম্পূরক শুল্ক বা নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়। বাংলাদেশেও এসব উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। তাতে অপ্রয়োজনীয় আমদানি যেমন কমবে, তেমনি দেশীয় শিল্প সুরক্ষা পাবে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে এবং সরকারের রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়বে।
দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে এখন বিশ্বমানের মোবাইল ফোনসেট তৈরি হচ্ছে এবং দেশ এ ক্ষেত্রে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। রপ্তানিও হচ্ছে। এই খাতে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে। তার পরও প্রচুর মোবাইল ফোনসেট আমদানি হচ্ছে। দেশীয় শিল্পের বাজার সংকুচিত হয়ে পড়ছে। একই অবস্থা নিত্যব্যবহার্য ইলেকট্রনিক জিনিসপত্র, টাইলস, সিরামিকশিল্পের ক্ষেত্রেও। আমদানির ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে সফটওয়্যার শিল্পেও। কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের অনেক পণ্য রয়েছে, যেগুলো অপ্রয়োজনীয়ভাবে আমদানি করা হচ্ছে এবং হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হচ্ছে। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় আমাদের আরো তৎপর হতে হবে। অ্যান্টিডাম্পিং আইন প্রণয়নের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে।