পিয়ন দিয়েই চলছে সেবা! 

ভেলুমিয়া মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে রোগীদের জীবন নিয়ে তামাসা করছেন ভিজিটর হাফসা

ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিমাংশে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন চর নিয়ে অবস্থিত ভেলুমিয়া ইউনিয়ন। ওই এলাকার মা ও শিশুদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদ এমপি এর উদ্যােগে ভেলুমিয়া বাজার সংলগ্ম ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র গঠন করা হয়।
ভেলুমিয়া ও ভেদুরিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে সেবা নিতে আসা রোগীরা প্রতিনিয়ত সেবার নামে হয়রানীর স্বীকার হোন এবং পাচ্ছে না সঠিক সেবা। মা ও শিশু কল্যাণের অফিস সহায়কই রোগীদের শেষ ভরসা। অফিসের দায়িত্বর ভিজিটর হাফসা বেগম নানান অযুহাতে বাহিরেই থাকার অভিযোগ করেন সেবা প্রার্থীরা।
অবশেষে শনিবার (২১জানুয়ারী) সকাল ১১ টায় ভেলুমিয়া মা ও শিশু কেন্দ্রে সাংবাদিকরা গিয়ে দেখেন সেবা প্রার্থীদের অভিযোগই সঠিক। প্রশাসনিক ভবন ও চিকিৎসকের আবাসিক ডরমিটরি নির্মাণ করা হয়েছে এই সেবা কেন্দ্রে। একজন চিকিৎসক এখানে সর্বদা সেবা প্রদান করার কথা থাকলেও তা বাস্তবে দেখা মিলেনি ।
যদিও হাসপাতালের সামনে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন  আগের চেয়ে হাসপাতালে সেবার মান কিছুটা কমেছে। আগে হাসপাতালে ডাক্তার থাকতেন রীতিমত এখন নিয়মিত ডাক্তার পাওয়া যায় না ।  কিন্তু দেশের মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম একটি  চাহিদা চিকিৎসা সেবা । ভেদুরিয়া ও ভেলুমিয়া দুটি ইউনিয়ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বেশ দুরত্বে বলে এখানকার নবজাতক শিশু ও মায়েদের কথা চিন্তা করেই  সরকার ১০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র স্থাপন করেন। আর এ কেন্দ্রে  প্রতিনিয়ত চিকিৎসার জন্য আগত রোগীদের সেবা দিচ্ছেন অফিস সহায়ক আবুল কাশেম। সরেজমিনে এ হাসপাতালে গিয়ে আরো দেখা যায় লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায়  অফিস সহায়ক কাশেম রোগীদের চিকিৎসা ও ঔষধ বিতরন করছেন । তার পাশেই দাড়িয়ে আছেন এফডব্লিউ বি এর কর্মী সিমু বেগম। এই হাসপাতালের ভিজিটর এর দায়িত্ব প্রাপ্ত হাফসা বেগমের অনুপস্থিত ছিলেন তখন। ভিজিটর এর  কথা জানতে চাইলে কাশেম জানান মেডাম বাজারে গেছেন। আপনারা বসেন। একথা বলেই এই প্রতিবেদক এর সামনে এফডব্লিউ বি এর কর্মীর মোবাইল দিয়ে কল দিয়ে কথা বলেন অফিস সহায়ক কাশেম ভিজিটর হাফসার সাথে। কাশেম বলেন ম্যাডাম সাংবাদিক এসেছে। হাফসা বলেন ও আচ্ছা আপনি কি বলেছেন?  অফিস সহায়ক কাশেম বললেন আমি বলছি বাজারে গেছে। না বলেন আমি অফিসে গেছি। একথা বলে লাইন কেটে দিয়েছে।
কিছুক্ষন পরেই হাজির হন পরিবার পরিকল্পনার কর্মী মাসুদ -তিনি বলেন আমি  ভিজিটর ম্যাডাম কে ফোন করেছিলাম সে বলেছে তিনি দিঘলদী আছেন। এদিকে হাসপাতালের ভিজিটর হাফসা বেগম মুঠোফোনে জানান আমি ডিডি অফিসে আসছি, আমার বদলির ঝামেলা নিয়ে বলে লাইন কেটে দিয়েছেন।
রোগীদের প্রশ্ন সেবা দেয়ার দায়িত্ব অফিস সহায়ক কাশেম কে দিয়েই যদি চলে তাহলে ভিজিটর (চিকিৎসক) হাফসা ম্যাডামের কাজ কি? চিকিৎসা নিতে আসা অন্তঃসত্ত্বা এক  নারী  বলেন আমরা অনেক দুর থেকে পায়ে হেঁটে এসেছি এহন দেহি ডাঃ আপা নাই।
 কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা ভবনের বেশিরভাগ কক্ষ ফাঁকা পড়ে আছে। মূলত ভেলুমিয়া ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র চিকিৎসা সেবা বেসতে গিয়ে  বাস্তবে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন অফিস সহায়ক কাশেম।
কেউ না থাকায় এখানে রোগীদের একমাত্র ভরসা হলো হাসপাতালের অফিস সহায়ক আবুল কাশেম। তিনিই রোগীদের সেবা দেন।
স্থানীয়রা জানান, হাফসা ম্যাডাম নাকি ভোলার প্রভাবশালী এক নেতার আত্মীয় তাই তিনি সব সময় ডিউটি না করলেও চলে।
যার জন্যই তার অনুপস্থিতিতে চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারি দিয়ে সেবা চালানোর মতো  চিত্র তৈরি হয়েছে।
মা ও শিশু কল্যাণ বিভাগের ভোলা সদর উপজেলা কর্মকর্তা ডাঃ মেহেদী হাসান সাগর  বলেন, বর্তমানে একজন  সরকারি  ভিজিটর ওই হাসপাতালে কর্মরত আছেন। তিনি  আউটডোর সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, তবে অফিসের কাজে তিনি বাহিরে যেতে পারেন । তবে ভিজিটর একই সময় বাজারে, দিঘলদী তে ও ডিডি অফিসে এ রয়েছেন এমন ভিত্তিহীন বক্তব্য খতিয়ে দেখা হবে বলে ও জানান তিনি ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।