ঝুঁকিপূর্ন নীল কমল ও জিন্নাগড়

চরফ্যাশনে ভোটারদের মাঝে হেলমেট ও মটরসাইকেল বাহিনী আতংক

মো: আফজাল হোসেন ॥ ভোলার চরফ্যাশনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলা, ভাংচুরসহ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মহরায় তীব্র আতংক বিরাজ করছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে। অবরুদ্ধ অবস্থায় থাকতে হচ্ছে প্রার্থীকে। অংশ নিতে পারছে না প্রচারনায়। যদিও আজ মধ্যরাত থেকে প্রচার-প্রচারনা শেষ হচ্ছে। তবে প্রশাশন বলছে যেকোন মুল্যেই নির্বাচন সুষ্ঠ শান্তিপূর্ন করার দ্বায়িত্ব তাদের।
আগামী ২৯ডিসেম্বর ভোলার চরপ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড়, আমিনাবাদ ও নীল কমল ইউনিয়নে নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এসব ইউনিয়নে হেলমেট ও মটরসাইকেল বাহিনীর নিয়মিত মহড়া, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রচারনায় বাঁধা দেয়, হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। প্রার্থীকে অবরুদ্ধ করে রাখা, প্রচারনায় বাঁধা দেয়ার ঘটনা নিয়মিত। এসব ঘটনায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে তীব্র আতংক বিরাজ করছে। তবে সাধারণ এসব ভোটারদের দাবী তারা নিরাপদে কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোট নিজেই দিয়ে পুনরায় নিরাপদে নিজ ঘরে পৌছতে নিরাপত্তা চায় বলে জানালেন, নীল কমল ইউনিয়নের ৬৭ বছরের বৃদ্ধ মো: ইয়াছিন।
আর মো: ই্উসুফ বলেন, দীর্য দিন ধরেই নিজের ভোট নিজে দিতে পারছেন না। এবার চাচ্ছেন অন্তত কেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোট নিজেই দিতে। তবে শংকা শান্তিপূর্ন পরিবেশের ভোট দেয়া নিয়ে। এমন শংকার কথা নীল কমল ইউনিয়ের বাংলা বাজারে চায়ের আড্ডায় তুলে ধরেন একাধিক বৃদ্ধ ভোটাররা। তারা বলছেন, দীর্য ধরেই শান্তিপূর্ন পরিবেশ ভোট দিতে পারছি না। এবছর কেমন হবে জানি না। প্রতিদিন হেলমেট ও মটরসাইকেল বাহিনীর অত্যাচারে বাজারে আসতে পারছি না। গতরাতে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে দুই গ্রুপের মধ্যে। মাস্তানরা হুমকি দিচ্ছে কেন্দ্রে যেতে দিবে না। প্রতিটি রাস্তার মোরে মোরে অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান নিবে।
এদিকে আজ মধ্যরাত থেকে প্রচার প্রচারনা শেষ হলেও প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত প্রচারনা চালাতে পারেনি নিল কমল ইউনিয়নের মটরসাইকেল মার্কা নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করা ইকবাল হোসেন লিখন। সরেজমিন গেলে দেখা যায়, ঘোষের হাট বাজার নৌকার প্রার্থী ও সমর্থকরা সমাবেশ করে নানান ধরনের উস্কানীমূলক বক্তব্য রাখছেন। একই সময় বিকেল থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বাজারের পাশেই স্বতন্ত্র প্রার্থী ইকবাল হোসেন লিখনের বাড়ীর সামনে বিপুল সংক্ষক পুলিশ পাহাড়ায় দাড়িয়ে আছে। জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার স্বর্থে পুলিশ সদস্যরা বলেন, ভাই এটা প্রতি দিনের ঘটনা। লিখন চেয়ারম্যানের বাড়িতে যাতে হামলা না করতে পারে সেজন্যই তার বাড়ির দরজায় দাড়িয়ে পাহাড়া দিচ্ছি। এসমন ডিএসবির একজন ছবি তুলছে অন্য পুলিশ সদস্যদের।
অপরদিকে জিন্নাগড় ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবুর কালাম আজাদ নৌকা মার্কার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে বাঁধা দেয়া এবং হামলা, ভাংচুর করার অভিযোগ আগেই সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেছেন। সরেজমিন জিন্নাগড় ইউনিয়নে গেলে সাধারণ ভোটাররা জানান, তাদের আতংকের কথা। সবার মুখেই প্রকাশ্যে চেয়ারম্যানী মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করার কথা। এছাড়া নিয়মিত মটরসাইকেল শো-ডাউন করা যেন ফ্যাশনে পরিনত হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে সাধারণ ভোটারদের দাবী নিজের ভোট যেন নিজেই দিতে পারে সেই নিশ্চয়তা চায় প্রশাসনের কাছে।
এসব বিষয় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ শফিকুল হক বলেন, তিনটি ইউনিয়নের নির্বাচন সুষ্ঠ ও শান্তিপুর্ন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য আমাদের সকল ধরনের প্রস্ততি নেয়া হয়েছে। যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তত রয়েছে। যেখানে ঝামেলার কথা শুনেছি সেখানেই পুলিশ প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। নির্বাচনের আগের দিন থেকেই নির্বাচনী মাঠ থাকবে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে। কোন ধরনের অপ্রতিকর ঘটনা সহ্য করা হবে না। নির্বাচনের দিন ৭দিন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কেন্দ্রের দ্বায়িত্বপালন করবেন। যে কোন পরিস্থিতিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার জন্য প্রস্তত থাকবেন তারা। এছাড়া কোস্টগার্ড, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নিরাপত্তার দ্বায়িত্ব পালন করবেন। আশা করছি সুন্দর একটি ভোট উপহার পাবে এলাকাবাসী।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।