সর্বশেষঃ

বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশ

ভোলায় লঞ্চের পর এবার বাস চলাচল বন্ধ ॥ যাত্রীদের ভোগান্তি

সারাদেশে ধারাবাহিক গণসমাবেশের অংশ হিসেবে শনিবার বরিশাল শহরে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। ওই সমাবেশকে কেন্দ্র করে ভোলায় নৌ রুটে লঞ্চ বন্ধ হওয়ার পর শুক্রবার থেকে ভোলা-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়কে বন্ধ করা হয়েছে পরিবহন। এতে করে শুক্রবার সকাল থেকে এ সড়কে যাত্রীবাহী বাসসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আকস্মিকভাবে এ সড়কে পরিবহন বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
জানা গেছে, বরিশালের গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বরিশালে ৪ ও ৫ নভেম্বর বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বরিশালের গণসমাবেশে যোগ দিতে গত ২-৩ দিন আগে থেকেই ভোলার বিএনপি নেতাকর্মীরা বরিশালের সমাবেশস্থলে রওনা হন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ভোর থেকে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় ভোলা-বরিশাল রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী লঞ্চ। কিন্তু লঞ্চ বন্ধ থাকার বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারছেনা।

বিআইডব্লিউটিএ ভোলার কর্মকর্তা বলছেন, সরকারের তরফ থেকে লঞ্চ বন্ধ করা হয়নি। তবুও থামানো যায়নি বিএনপি নেতাকর্মীদের। ভোলা সদর উপজেলা ছাড়াও চরফ্যাশন, মনপুরা, লালমোহন, তজুমদ্দিন, দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলা থেকে হাজার হাজার বিএনপি নেতাকর্মী কেউ সড়ক পথে, আবার অনেকে ট্রলার-স্পিটবোটে চড়ে দলে দলে ছুটে চলেছেন বরিশালের গণসমাবেশস্থলে। এরপর শুক্রবার সকাল থেকে ভোলা-চরফ্যাশন রুটে দূরপাল্লার পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাস বন্ধ হওয়ায় সারা দিন চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের।


সেই সূযোগে সিএনজি, মাইক্রোবাস ও ব্যটারিচালিত অটোরিকশাগুলোতে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। তারা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন বলেও অভিযোগ করেন যাত্রীরা।
বাস বন্ধ থাকায় সকালে বোরহানউদ্দিন উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের এক গৃহবধূ লাইজু তার দুই ছেলে তামিম ও হৃদয়কে ডাক্তার দেখাতে ভোলা জেলা সদরে এসেছিলেন ভেঙে ভেঙে বোরাকে (অটোরিকসা) করে। লাইজু বলেন, বাংলাবাজার থেকে ভোলা বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তাফা কামাল বাস টার্মিনাল পর্যন্ত বোরাক ভাড়া নিয়েছেন জনপ্রতি ৪০ টাকা। এরপর বাস টার্মিনাল থেকে আবার ভোলা সদর পর্যন্ত বোরাক ভাড়া আদায় করেন ৩০ টাকা।
তজুমদ্দিন উপজেলার ব্যবসায়ী মোঃ সিরাজ বলেন, বাস বন্ধ থাকায় আমরা অনেক ভোগান্তির শিকার হয়েছি। তিনি বলেন, আমার নানু বিবি হরমুজাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য তজুমদ্দিন থেকে অটোরিকশায় চড়ে কুঞ্জেরহাট পর্যন্ত এসেছি ৩০ টাকা দিয়ে। সেখান থেকে আবার বাংলাবাজার এসেছি ৪০ টাকা দিয়ে। আবার বাংলাবাজার থেকে ভোলা বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তাফা কামাল বাস টার্মিনাল পর্যন্ত এসেছি ৯০ টাকা দিয়ে। আবার বাস টার্মিনাল থেকে ভোলা শহরে এসেছি ৩০ টাকা দিয়ে। এতে আমার মোট ১৯০ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বাসে আসলে মোট খরচ হতো শুধু ৯০ টাকা।
বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুঞ্জেরহাট এলাকার একজন কৃষক সূজিত বলেন আমি
কুঞ্জেরহাট থেকে ভোলা সদরে সিএনজিতে করে এসেছি ১৫০ টাকা দিয়ে। অথচ এ রুটে প্রতিদিন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১০০টাকা। সাধারণ যাত্রীরা অভিযোগ করেন, বাস বন্ধ থাকায় অটোরিকশা ও সিএনজি চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন।


এ বিষয়ে রাসেল নামের একজন সিএনজি চালক বলেন, আমরা ভোলা থেকে লালমোহন উপজেলা পর্যন্ত প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছি ১৫০ টাকা করে। কিন্তু আজ (গতকাল শুক্রবার) বাস বন্ধ থাকায় ভোলা থেকে লালমোহন উপজেলা পর্যন্ত প্রত্যেক যাত্রীর কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছি ২০০ টাকা করে।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভোলা-চরফ্যাশন রুটে সব ধরনের অবৈধ যান চলাচল নিষিদ্ধ করার দাবিতে আমরা শুক্রবার সকাল থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। আগামী রোববার থেকে যথারীতি বাস চলাচল করবে।
তবে, জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীর বলেন, বরিশালের গণসমাবেশে যাতে বিএনপি নেতাকর্মীরা ভোলা থেকে না যেতে পারে সেজন্য বাস মালিক সমিতি এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।