চেয়ারম্যান হয়ে জনগণের সাথে প্রতারণা করছেন

বোরহানউদ্দিনে চেয়ারম্যান আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দার এর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন বর্তমান মেম্বার মামুন হাসান। বৃহস্পতিবার (০৩ নভেম্বর) এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মামুন হাসান বলেন, পূর্বের শত্রুতার জের ধরে গত ২৯/১০/২০২২ ইং তারিখ রোজ শনিবার বিকাল আনুমানিক ৩ ঘটিকার সময় বোরহানগঞ্চ বাজারে আসলে পক্ষিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দার এর নেতৃত্বে রোহান সরদার (২২), মোঃ জাকির হোসেন (৩৩), মোঃ রুবেল (৩৫), লিমন হোসেন করীম (২৪), মোঃ মহসিন (২৩), মোঃ হাসান (২৬), মোঃ রায়হান শুভেল (২২), মোঃ লিটন সহ আরও অজ্ঞাত ৫/৬ জন দেশীও অস্ত্র, দা, কুড়াল, লোহার রড, দিয়ে আমাকে খুন করার উদ্দেশ্য হামলা এবং বেধরক মারধর করে। আমাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসলে রবি আলম, মোঃ রাশেদ, মোঃ বাবলু মোল্লা, মোঃ হাসানুজ্জামান সবুজ, ও নুরে আলম, ও আজগরকে পিটিয়ে রক্তাক্ত ও ফুলা জখম করে। পরে স্থানীয়রা আমাদেরকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন। রবি আলম, মোঃ রাশেদ সহ আমি ৩দিন যাবৎ বোরহানউদ্দিন উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি ছিলাম। আমরা কি বেঁচে আছি কিনা একটু খোঁজ খবর নেয়নি আমার অভিভাবক বর্তমান চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দার।
তিনি আরো বলেন, আমি যদি কোন অপরাধ করে থাকতাম, তাহলে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আমার অভিভাবক হিসেবে বিচার করতে পারতেন। সেটা না করে আলাউদ্দিন সর্দার নিজে উপস্থিত থেকে প্রথমে তিনি আমার ওপর হামলা করেন। এরপর তার ছেলে রোহান সরদার সহ ১৩/১৪ জন পাকা রাস্তার ওপর ফেলে বেধরক মারে। ভোলা-২ আসনের এমপি আলী আজম মুকুল এমপি মহোদয়ের কাছে আমার অনুরোধ, আমি পক্ষিয়া ইউনিয়নের ৩ বারের মেম্বার এবং আওয়ামী লীগের নির্যাতিত কর্মী, নৌকার প্রতীকের সমর্থন করায় আমার ওপর এইভাবে নির্মম ভাবে নির্যাতন করে, আলাউদ্দিন সর্দার।
পক্ষিয়া ইউনিয়নের অপর ইউপি সদস্য মোঃ নোমান জানান, আমি বর্তমানে মেম্বার। ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে সেই মূল্যায়ন আমি পাইনা। গত কয়েক মাস আগে পক্ষিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের নাজমা (৩৩) নামে এক গৃহবধূ পরকীয় অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ছেলে সহ উভয়কে হাতে নাতে আটক করে। পরে আমাকে খবর দিলে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জানি। তার কিছুক্ষণ পরে চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দার আমাকে কল করে মেয়েটিকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসার জন্য বলে, আমি চৌকিদারকে ডেকে মেয়ে ও ছেলেকে পরিষদে পাঠিয়ে দেই।
বর্তমান চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দার নাজমাকে দিয়ে আমার নামে উল্টা-পাল্টা বুজিয়ে নারী নির্যাতন মামলা করান। মামলা নং-৬০১/২২। তদন্তে করে কোন সত্যতা না পাওয়ায় মামলাটি খারিজ করে দেয়ায় হয়। এই মামলা দিয়ে আমাকে ফাঁসাতে না পেরে, একই ব্যক্তিকে দিয়ে নতুন আরও একটি মামলা দায়ের করেন, বর্তমানে মামলাটি তদন্তে রয়েছে।
তারা আরো বলেন, জনতার সাথে প্রতারণা করে, অসহায় মানুষদের ভালবাসাকে ব্লাকমেইল করে ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান হয়েছেন আলাউদ্দিন সর্দার। চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে বিএনপি ও জামাতের লোকজনকে নিয়ে একটি সংগঠন করে। আওয়ামী লীগের ত্যাগী কর্মীদের পাত্তা না দিয়ে হাইব্রিড দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করেন। সাবেক চেয়ারম্যান নাগর হাওলাদারের আমলে এমন কোন নেতা-কর্মী নাই। ঈদে-চান্দে, যে কোন বিপদ-আপদে সহযোগিতা না করেছে, এমন কথা কেউ বলতে পারবেনা। সাবেক চেয়ারম্যান সব সময় নেতা-কর্মীদের প্রাধান্য দিতেন আগে। বর্তমান সাধারণ জনগণ তো দূরের কথা; ইউপি সদস্যদেরকে ইউনিয়ন পরিষদের পাত্তা দেয় না।
বক্তারা আরো বলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দার পক্ষিয়া ইউনিয়নের আওয়ামিলীগের নেতা-কর্মীদের সাথে প্রতিনিয়ত প্রতারণা করে আসছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে পক্ষিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগকে শক্তি শালী করার লক্ষ্য, আমি বর্তমান চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন সর্দার এর ইউপি পদ থেকে প্রত্যাহার চাই।
এছাড়াও মহিলা সংরক্ষিত আসনের মেম্বার, মহিউদ্দিন মেম্বার, রিপন মেম্বার সহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, সাধারণ জনগণ তাকে জনতার চেয়ারম্যান বললেও আমরা তাদের সাথে একমত নই। তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। নিজেকে শুফি সাজাছে। তিনি চেয়ারম্যান হওয়াই পক্ষিয়া ইউনিয়নে বিএনপির ঘাটি আরও মজবুত হয়েছে আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবহেলিত হয়েছে। পক্ষিয়া ইউনিয়ন এর আম জনতা আলাউদ্দিন সর্দার এর মুখোশ জেনে গেছে, দলমত নির্বিশেষে সবাই তার আসল চেহারা চিনে গেছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।