লোকসান কয়েক কোটি টাকা, কোন তথ্য জানা নেই জেলা কৃষি অফিসে

সিত্রাং’এ ক্ষতিগ্রস্ত ভোলার ৫শত একর পানের বরজ ॥ চাষিদের খবর রাখেনি কেউ

ঘূর্ণীঝড় সিত্রাং’এর প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি, আর বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারে পানি এবং ঝড়ো বাতাসে ভোলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৫’শত (২’শত হেক্টর) একর জমির পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ৫ হাজার পান চাষি। ধান ও অন্যান্য সবজি চাষিদের ক্ষয় ক্ষতির তালিকা করা হলেও জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর এখনো কোন খবর রাখেনি জেলার পান চাষিদের। এনিয়ে চরম হতাশাগ্রস্ত দিন পার করছেন জেলার কয়েক হাজার পান চাষি তারা।
সূত্রমতে, ভোলা সদর উপজেলায় প্রায় ১শ’ ৫০ একর, দৌলতখান উপজেলায় ৫ একর, বোরহানউদ্দিনে ৩৫ একর, লালমোহনে ১শ’ ১০ একর, চরফ্যাশনে ১শ’ ৯৫ একর, তজুমদ্দিনে ১০ একর, মনপুরায় ৫ একর জমির পান সহ জেলায় প্রায় ৫শ’ ১০ (২’শত হেক্টর) একর জমির বরজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার রাজাপুর, পূর্ব ইলিশা ও পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে পানের বরজ সিত্রাং’এর ছোবলে মাটির সাথে মিশে গেছে। পানপাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ছে। পচে গেছে বীজলতা।
রাজাপুর ইউনিয়নের কন্দকপূর মৌজার ৫ নং ওয়ার্ডের আলমগীর (৫০), মহিউদ্দিন (৪৫), মাকসুদ (৩০), সবুজ (৩০) বলেন, আমরা প্রায় ৫ একর জমি লগ্নি নিয়ে ধার দেনা করে পান চাষ করেছি, এই তুফানে সব শেষ। আমাদের প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত চেয়ারম্যান, মেম্বার আমাগো কোন খোঁজ নিলনা।
একই ওয়াডের আব্দুল হক (৭০) বলেন, গত বছর ইলিশা বাজার কৃষি ব্যাংক থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা লোন নিয়ে ২ একর জমিতে পান চাষ করি,বন্যায় আমার সব বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোন কৃষি কর্মকর্তা এসে আমাদের কোন খোঁজ নিলানা
পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের পান চাষি মোতাহার মাষ্টার (৫৫) বলেন, বরজের সব পান নষ্ট হয়ে গেছে। বীজলতাও পচে গেছে। নতুন লতা বুনতে হবে। কিন্তু বর্তমানে কোথাও কোন লতা পাওয়া যাচ্ছে না। বাইরে থেকে এখন লতা চড়া দামে কিনতে হবে।


সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন বলেন, উপজেলার পান চাষিদের খোজ খবররের জন্য সরকারি ভাবে আমাদের কোন নির্দেশনা নাই তার পরেও কোন পান চাষি যদি ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আমাদের জানায় তাহলে আমরা বিষয়টি দেখবো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ ওয়ারিসুল কবীর বলেন, আমাদের কাছে তথ্য অনুসারে জেলায় প্রায় ৫৩৬ হেক্টর জমিতে ৯০ জন পান চাষি পান চাষ করেছেন। সিত্রাং’এর প্রভাবে মাত্র ১২ হেক্টর পানের বরজ’র প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার মত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন খবর নিয়ে দেখি কি করা যায়।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।