ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
ভোলায় ত্রাণ-সাহায্য পাওয়ার আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ঘর চাঁপায় নিহতের ছেলে
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্তরা গত চার দিনেও সরকারি কোন ত্রাণ-সাহায্য পাননি। সরকারি সহায়তা পাওয়ার আশায় সরাকারি বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ঘর চাঁপায় নিহত মফিজুল হকের বড় ছেলে মোঃ মহসিন। তিনি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোলা জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন সরকারি একটু সাহায্য সহযোগীতার জন্য। গিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় ও সদর উপজেলা প্রশাসনের দপ্তরে। কিন্তু এখনো মেলেনি সরকারি কোন সাহায্য-সহায়তা। পাননি লাশ দাফন কাঁপনের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ২৫ হাজার টাকা। এমনকি তার কপালে জোটেনি একটু শুকনো খাবারও।
ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নে মফিজুল হকের ছেলে মহসিন ভোলার বাণী’কে জানান, গত সোমবার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে ঘরচাপায় তার বাবা মফিজুল হক। নিহত হওয়ার পর থেকে সরকারিভাবে কোন আর্থিক সহায়তা কিংবা ত্রান সামগ্রী পাননি। অথচ গত চার দিনেও আমরা সরকারিভাবে এক টাকাও সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ঘরচাপায় বাবা মারা যাওয়ার পর আমার চাচা রফিজল হক ও পাশ্ববর্তী দিন ইসলাম ভাত খাওয়াচ্ছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের কেউ কোন খোঁজ নেইনি।
মহসিন বলেন, একটু সরকারি সাহায্য সহায়তার আশায় বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দোতলায় জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়েছি। তিনি আমাকে তার অফিসে বসিয়ে ভোলা সদর উপজেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তাকে ফোনে জানতে চেয়েছেন কেন এতো দিনেও আমি কোন সাহায্য সহায়তা পাইনি। পরে জেলা ত্রাণ ও পূর্বাসন কর্মকর্তা আমাকে বাবার দাফন কাঁপনের জন্য বরাদ্দকৃত ২৫ হাজার টাকা ও সরকারি সাহায্য সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দমকা হাওয়ায় ভোলা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে যুগীরঘোল এলাকায় গাছ উপড়ে পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে মোঃ শহিদুল ইসলাম (৩২) নামের এক চায়ের দোকানীর বসতঘর। এতে দুমড়ে মুচড়ে যায় তার টিনের ছোট বসতঘরটি। অল্পের জন্য রক্ষা পান তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হওয়া ক্ষতিগ্রস্ত শহিদুল ইসলাম (অপু)ও সরকারি কোন ত্রান-সহায়তা পাননি।
শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আমার ঘর ভেঙে যাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের কেউ কোন খোঁজখবর নেন নি। আমি যুগিরঘোল এলাকায় ছোট একটি চায়ের দোকান করে সংসার চালাই। তরিকুল ইসলাম দোলন নামের একজনের জমিতে কোন রকমের টিনের ঘর তোলে তার ওই জায়গা পাহারা দেই। এখন আমার এই ঘর মেরামত করার মতো কোন টাকা নেই। তাই ঘরও মেরামত করতে পারছি না। খেতেও পারছি না। আমি এখন অসহায় হয়ে পড়েছি। আমার এলাকার লোকজন আমাকে ও আমার পরিবারকে খাওয়াচ্ছেন।
এ বিষয়ে ভোলা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাইনুল ইসলাম শামীম বলেন, আমি অসুস্থ্যতার কারণে ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত ঘরের মালিকের খোঁজ নিতে পারিনি। ভোলা জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা এস এম দেলোয়ার হোসাইন বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভোলা সদর উপজেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তাকে ফোন করেছি। আশা করছি আগামি রোববার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এ মৃত ব্যক্তির দাফন কাঁপনের জন্য ২৫ হাজার টাকা দেওয়া সম্ভব হবে। আর শুকনো খাবারও দেওয়া হবে।