প্রিন্ট এর তারিখঃ মে ১৮, ২০২৪, ৭:৩৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ২৪, ২০২২, ৯:৪৬ এ.এম
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং’ এর সবশেষ অবস্থান
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ধীরে ধীরে গতি সঞ্চার করে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে। ক্রমশই এগিয়ে আসছে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর অভিমূখে। আবহাওয়া অফিস আশঙ্কা করছে, ভয়াবহ গতি সঞ্চয় করে আছড়ে পড়তে পারে সিত্রাং নামে এই সাইক্লোনটি।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকালে আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সবশেষ অবস্থান জানিয়েছে। সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্যবঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় 'সিত্রাং' উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি গত মধ্যরাতে (২৩ অক্টোবর, ২০২২) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘণীভূত হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্ব্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০-৫০ কি.মি. বেগে দমকা/ঝড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে, সেইসাথে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত (পুনঃ) ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে রবিবার সকাল থেকেই ভোলার উপকূলীয় এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও ভারি বৃষ্টিপাতেরও খবর পাওয়া গেছে। তবে সোমবার সকাল থেকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বৃষ্টি ও বাতাসের পরিমাণও কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রোববার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় ভোলার জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলার বিচ্ছিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ৭৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলায় মোট ৮টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ১৩ হাজার ৬৬০ জন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। জেলার ৭০টি ইউনিয়ন ও সাতটি উপজেলায় একটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
সম্পাদকঃ মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ভোলার বাণী ২০২২ ইং