একটি ঘরের স্বপ্ন সবুজা বেগম’র

সবুজা বেগম ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার পৌরসভার অস্থায়ী বাসিন্দা। মাথা গোজার মতো যার নিজের কোনো ঠাঁই নেই। নেই থাকার ঘরবাড়ি ও কোনো জমিজমা। এক কথায় ভূমিহীন ও গৃহহীন অসহায় এ স্বামী পরিত্যক্তা নারী। তার স্বামী মোহাম্মদ মোসলেম প্রায় ১৯ বছর আগে ছেড়ে গেছেন ছোট ছোট দুটো কন্যা রেখে। তারপর, শুরু হয় বাঁচার তাগিদে একা জীবন যুদ্ধ। এই নারীর আপন বলতে দুই মেয়ে ছাড়া কেউ নেই। নেই তার কোনো সহায়-সম্বলও। কথা বলতেই কান্নায় ভেঙে পরেন তিনি। তার স্বপ্ন (মুজিব শতবর্ষের উপহার) আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ঘরের।
তিনি বর্তমানে থাকেন ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার পৌর ৭নং ওয়ার্ডের (কবিরাজ বাড়ি সংলগ্ন, কালু ড্রাইভার) এর একটি ভাড়া বাসায়। সেই ঘরেও চালা দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। তিনি কাজ করেন বাসা-বাড়িতে। যার মানুষের বাসা বাড়িতে কাজ করে দু’মুঠো ভাত জোটে। তার শরীর অসুস্থ হলেও খাবার জোগাড়ের চিন্তা করতে হয়। পেটের তাগিদে রোজ ছুটতে হয় কাজের সন্ধানে বাসাবাড়িতে।
পঞ্চাশোর্ধ সবুজা বেগম দীর্ঘদিন যাবৎ অভাব অনটন আর সীমাহীন দারিদ্রতায় সঙ্গে যুদ্ধ করে নানা রকম সমস্যায় ভুগছেন। অসহায় ও অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে কোন রকমে অতি কষ্টে সংসার চালিয়ে আসছেন তিনি। স্বামী মোহাম্মদ মোসলেম তাকে ছেড়ে গেছেন প্রায় ১৯ বছর আগে। শুরু তার দুটো মেয়ে রুমা তাছলিমাকে নিয়ে একা জীবন যুদ্ধ। পরে বিয়েও দেন মেয়েদের। মেয়েরাও স্বপ্ন দেখে তার মায়ের থাকার মতো একটি ঘরের। অতি দুঃখ, কষ্ট ও দুর্দশায়ার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছেন এ নারী।
স্বামী হারা এই সবুজা বেগম তার বাকি জীবন ভালোভাবে বসবাস করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন প্রকল্পের আওতায় একটি ঘর পাওয়ার আশায় পথ চেয়ে বসে আছেন স্বামী পরিত্যক্তা নারী সবুজা বেগম। ঘুরছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। কিন্তু প্রশাসনের নিকট প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া একটি ঘরের আবেদন জানিয়েও তার ভাগ্যে আজও জুটলো না প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভূমিহীন গৃহহীন মানুষের জন্য দেওয়া একটি ঘর।
হতদরিদ্র গৃহহীন ও ভূমিহীন সবুজা বেগম বলেন, আমার দুটি মাত্র মেয়ে। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে অর্থ উপার্জন করার ব্যক্তি না থাকায় অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পাই তা দিয়ে তিন বেলায় খাবার ও জোটে না ঠিকমত। জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে অনেক কষ্টে বেঁচে আছি। সরকার যদি আমার মত অসহায় মানুষকে একটি ঘর উপহার দিত তাহলে খুব উপকৃত হতাম আমি। জীবনের বাকি শেষকটা দিন একটু ভাল ভাবে কাটাতে পারতাম। যদি আমার পাশে এসে কেউ দাঁড়াতো। আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান বলেন, ঘর দেওয়া শেষ। তবে মাঝে মধ্যে দেখা যায়, যারা ঘর পেয়েও এক বা দেড় বছরের মধ্যে ঘরে ওঠে না, তখন মিটিং করে অন্য জনকে রেজিস্ট্রেশন করে দিই। চেস্টা করবো এমন ঘর পেলে তাকে ব্যবস্থা করে দেওয়ার।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।