চরফ্যাশনে রোগাক্রান্ত গরু জবাই, মাংশ উদ্ধার

ভোলার চরফ্যাশনে রোগাক্রান্ত গরু জবাইয়ের পর কাউন্সিলর ঘটনাস্থল গেলে বিক্ষুব্দ জনতার তোপের মুখে পালিয়ে যায় কসাইরা। জনতার গণধোলাইর ভয়ে পালিয়ে যায় চার কসাই। এরা হলেন, নোমান মোঃ রাসেল, কবির ও রায়হান। আজ (২৭সেপ্টেন্বর) মঙ্গলবার সকালে চরফ্যাশন কসাই বাজারে রুগ্ন গরুটি জবাইয়ের জন্য প্রস্তুত করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ সহকারি প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা আবু সাইদ গরুটি জবাই করতে নিষেধ করে। কিছুক্ষণ পরেই পরেই চার কিশোর কসাই মিলে বাজার থেকে ২শ গজ দূরে হাবিবুর রহমান দফাদার বাড়ির বাগানে লোকচক্ষুর আড়ালে রোগাক্রান্ত গরুটি জবাই করে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, গরুটি জবাই করা হয়েছে মারা যাওয়ার পরে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা আরও জানান, কিশোর কসাইরা কাকডাকা ভোরে খালপাড় দিয়ে টানা হেঁচড়া করে পশুটি নিয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরান যায়-যায় অবস্থায় খালপাড়ের পাশে বাগানে নিয়ে লোক চক্ষুর আড়ালে কসাইদের ব্যাগে থাকা দা দিয়ে জবাই করে।
আরো জানা গেছে, মাংশ বাজারে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঙ্গলবার ভোরে কসাইঘরে পরিক্ষা নিরিক্ষার পরে গরুটি অসুস্থ ও রোগে আক্রান্ত হওয়ায় গো-মাংশ মানব দেহের জন্য উপযোগী না হওয়ায় জবাই দিতে নিষেধ করে। এরপর কিশোর কসাইচক্ররা মালিকের সাথে শর্তআরোপ করে বাজার থেকে নিয়ে যায় গরুটি।
জনস্বাস্থের জন্য ঝূঁকি এমন গো-খাদ্য ও ভেজাল খাদ্যপণ্যের বিরুদ্ধে স্বোচ্ছার পৌর কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু বলেন, ভোরে আমার কাছে এই খবর আসলে দ্রুত ঘটনাস্থলে গেলে কসাইরা মাংশ ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পৌর মেয়র ঘটনাস্থলে আসার পরে পুলিশ বাগান থেকে গো-মাংশ উদ্ধার করে থানা নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ মাংশের বাজারে রোগাক্রান্ত মাংশ বেচাকেনা নিয়ে ভোক্তাদের অনেক অভিযোগ ছিল। পৌর মেয়রের সাথে কসাইদের মতবিনিময়ের হওয়ার পরে বাজারে এধরনের ঘটনায় আর ঘটেনি। পৌরসভার লাইসেন্সপ্রাপ্ত কসাইরা এ কাজে যুক্ত না থাকলেও কিছু সংখ্যক নামধারী কিশোর কসাই চুক্তির বিণিময়ে রোগাক্রান্ত পশু জবাই করে বদনাম করছে।

ঘটনার পরপরই চরফ্যাশন পৌর মেয়র মোঃ মোরশেদ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষুব্দ জনতাকে বলেন, আপনারা শান্ত থাকেন। যে ৪জন এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে কোন মানুষ ভবিস্যতে রোগাক্রান্ত পশুর মাংশ ক্রয় করে স্বাস্থ্য ঝূঁকিতে না পরে। আমি যতদিন মেয়র থাকি ততদিন ভেজাল ও রোগাক্রান্ত মুক্ত গো মাংশ ক্রয়-বিক্রিতে কঠোর অবস্থানে থাকবে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। জড়িতদের বিষয়ে কোন আপোষ করা হবে না। এ সময় চরফ্যাশন পৌরসভার প্যানেল মেয়র আবদুল মতিন মোল্লা, ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু ও বিভিন্ন মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোরাদ হোসেন বলেন, এই ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে পৌরসভার স্বাস্থ্য সহকারি বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়া হবে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের উপ সহকারী কর্মকর্তা আবু সাইদ বলেন, নিষেধ করার পরও রোগাক্রান্ত গরুটি বাজারে বা ফ্রিজিং করে বিক্রির জন্য কসাইরা লোক চক্ষুর আড়ালে গরুটি জবাই করে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।