ভোলায় স্ত্রীকে ইভটিজিং এর প্রতিবাদে স্বামীর উপর হামলা ॥ ৫ দুষ্কৃতিকারী গ্রেফতার

ভোলায় স্ত্রীকে ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় স্বামীর উপর হামলা চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত ৫ সদস্যকে ভোলা পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফরহাদ সর্দার।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার পৌরসভার ০২নং ওয়ার্ডস্থ জেলা পরিষদের উত্তর-পশ্চিম পাশের পার্কের ভিতরের (বক ফোয়ারার নিকট) ভিকটিম পুলিশ সদস্য মোঃ এনামুল বেপারী ও তার স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে আসে। তখন দুষ্কৃতিকারীরা ভিকটিমের স্ত্রীকে উত্যক্ত করা সহ অশালীন কথাবার্তা বললে সে এর প্রতিবাদ করে। তখন দুষ্কৃতিকারীরা তাকে অকথ্যভাষায় গালাগালি সহ মারতে উদ্ধ্যত হয়। ভিকটিম এনামুল বাধা দেয় এবং নিজেকে ভোলা জেলা পুলিশের সদস্য বলে পরিচয় দিলে দুষ্কৃতিকারীরা “পুলিশ হইছোস তো কি হইছে” এই বাক্য বলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিম ও তার স্ত্রীকে বেআইনী জনতাবদ্ধে চারদিক থেকে ঘিরিয়া ধরে এলোপাথারী কিল, ঘুষি, লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। তখন দুষ্কৃতিকারীরা ভিকটিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাদের হাতে থাকা ধারালো দেশীয় অস্ত্র দ্বারা ভিকটিমের ডান গলা, কানের নিচে, বাম পেটে, পিঠে সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। ভিকটিম এনামুল এর স্ত্রী উর্মি আক্তার তার স্বামীকে দুষ্কৃতিকারীদের হাত হতে বাঁচাতে গেলে তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শ কাতর স্থানে হাত দিয়ে যৌন পীড়ন করা সহ টানা হেচড়া করে নীলা ফুলা জখম করে এবং ভিকটিমের স্ত্রীর গলায় থাকা ০১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন মূল্য অনুমান ৮৩ হাজার টাকা দুষ্কৃতিকারীরা নিয়ে যায়। তখন ভিকটিম সহ তার স্ত্রী ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে চলে আসলে দুষ্কৃতিকারীরা প্রাণ নাশের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। উপস্থিত স্থানীয় লোকজন পুলিশ সদস্য জেনে থানা পুলিশকে অবহিত করলে থানা পুলিশ এসে ভিকটিমকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
অভিযান পরিচালনা করে আইনের সংঘাতে জড়িত মোঃ ইব্রাহিম (১৬), সাং-চর আলগী, ০৭নং ওয়ার্ড, থানা-বোরহানউদ্দিন, এ/পি-ভদ্রপাড়া, ০৩নং ওয়ার্ড, (মোঃ হিরন চাপরাশির বাড়ীর ভাড়াটিয়া), ভোলা পৌরসভা, ২। মোঃ রাজিব (১৬), সাং-দক্ষিন চর আনন্দ, ওয়ার্ড নং-০১, ইউপি-পশ্চিম ইলিশা, থানা ভোলা সদর, এ/পি-আবহাওয়া অফিস রোড (জসিম স্যারের বাড়ীর ভাড়াটিয়া), ০১নং ওয়ার্ড, ভোলা পৌরসভা, থানা ও জেলা-ভোলাদ্বয়কে হেফাজতে নেয়া হয় এবং আসামী ৩। মোঃ রাকিব হোসেন (২১), সাং-ওয়েষ্টানপাড়া, ০৬নং ওয়ার্ড, সানজিদা কটেজ (ভাড়াটিয়া), আসামী ৪। মোঃ তারেক পাঠান (১৯), সাং-ভদ্রপাড়া, ০৩নং ওয়ার্ড, ভোলা পৌরসভা, আসামী ৫। মোঃ তোহান আহম্মেদ (২৩), সাং-রতনপুর, ইউপি-শিবপুর, থানা ও জেলা-ভোলা, এ/পি-কালীবাড়ী রোড, ভোলা পৌরসভা (মোস্তাফিজুর রহমান এর ভাড়াটিয়া), ০৩নং ওয়ার্ড, থানা ও জেলা-ভোলাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ সংক্রান্তে ভোলা সদর মডেল থানায় জিআর-৫৭১/২০২২, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/২০০৩) এর ১০ তৎসহ ১৪৩/৩৪২/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬ পেনাল কোডে মামলা করা হয়। যার নং-৪১, তারিখঃ-২৪/০৯/২০২২ইং। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তাদের দেয়া তথ্য পর্যবেক্ষণ করে ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য সদস্যদেরও গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ভোলায় পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডস্থ জেলা পরিষদের উত্তর পশ্চিম পাশে পার্কের ভিতর (বক ফোয়ারার) নিকট পুলিশ সদস্যের উপর হামলা ও ছুরিকাঘাত এবং তার স্ত্রীর উপর হামলা করা হয়।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।