সর্বশেষঃ

কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও অতিরিক্ত জোয়ারে বরগুনার স্যানিটেশনসহ ফসল ও রাস্তা ঘাটের ব্যাপক ক্ষতি

জেলার বরগুনা সদর উপজেলা, পাথরঘাটা পৌরসভার, পাথরঘাটা উপজেলা, আমতলী পৌরসভা, আমতলী উপজেলাসহ জেলার ৬টি উপজেলার ইউনিয়নগুলির কৃষক, জেলেসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মানুষের গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষন ও অতিরিক্ত জোয়ারের ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছ। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পুকুরের মাছ, জমির ফসল, রাস্তা ঘাট, দরিদ্র মানুষের টয়লেটের অবস্থা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বেড়ি বাধের বাহিরে ও চরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০১৯ইং সাল থেকে করোনা মহামারীর সমস্যা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম দরদ্র মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। এমতাবস্থায় কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ ও অতিরিক্ত জোয়ারের ফলে উপকূলীয় এলাকার মানুষের মরার উপর খাড়া হয়ে দাড়িয়েছে।
উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ বার বার তাদের টয়লেটগুলি স্বাস্থ্যসম্মতভাবে তৈরি করে। করতে না করতেই বছরের মধ্যে ২/৩ বার প্রাকৃতি দূর্যোগে আবার নষ হয়ে যায়। অনেক পরিবারের বার বার মেরামত করার মত স্বামর্থ থাকে না। এমতাবস্থায় সরকার স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২০ ইং সালের পানি ও স্যানিটেশনের দারিদ্র্য সহায়ক কৌশল পত্রের আলোকে অন্যান্য সামজিক সরক্ষা প্রকল্পের মত তালিকা তৈরি করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বিভন্ন দূর্যোগের সময় অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির সাথে পানি ও স্যানিটেশনের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে সেই অনুযায়ী সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহন করতে পারে। এমনটা সাধারণত দেখা যায় না।
পাথরঘাটা, আমতলী পৌরসভা, বরগুনা সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া, আয়লা পাতাকাটা, বুড়িরচর, বরগুনা সদর ইউনিয়ন, ঢলুয়া, এম বালিয়াতলী, নলটোনা ইউনিয়নের কয়েক জন ভুক্তভোগীর সাথে সরেজমিনে আলাপ কালে তারা বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে টয়লেটগুলি মেরামত করেছি। অতিরিক্ত জোয়ার ও প্রবল বর্ষণের কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। এগুলি মেরামত বা নতুন করে তৈরি করার মত সামর্থ্য আমাদের নাই। সংসার চালাতেই আমরা হিমসিম খাচ্ছি। অন্যদিকে এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, সদস্য ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, বিভিন্ন দূর্যোগের পরবর্তী সময়ে টয়লেট মেরামত ব স্থাপনের জন্য আমাদের নিকট বরাদ্দ থাকে না বা বরাদ্দ পাওয়া যায় না।
বরগুনা জেলায় ওয়াশ এসডিজি প্রোগ্রামের আওতায় নাগরিক কমিটির সদস্য ও ডরপ এর কর্মীগণ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনকালে আমতলী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের হাসিনা বেগম বলেন, আপনাদের পরামর্শে আমরা অনেক কষ্ট করে টাকা খরচ করে টয়লেট তৈরি করেছিলাম। এখন টয়লেটি জোয়ারের পানিতে নষ্ট হয়েগেছে। এখন আমার পক্ষে নতুন টয়লেট তৈরি করা আমার পরিবারের পক্ষে সম্ভব না।
পাথরঘাটা পৌরসভার লাইলী বেগম, বরগুনা সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কুমির মারা গ্রামর কামাল হোসেন, বালিয়াতলী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের পালের বালিয়া তলী গ্রামের মং রাখাইন, ঢলুয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড মল্লিকা খাতুন, বরগুনা সদর ইউনিয়নের কলি বেগম, বুড়িরচর ইউনিয়নের মালেকা বেগম, আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হিন্দু পাড়ার মঞ্জু রানী, শারমিন আক্তার, কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়ন রিনা বেগমসহ অনেকেই বলেন, ধারদেনা করে হলেও টয়লেট তৈরি করেছি। এখন আমাদের টয়লেট নষ্ট হয়েগেছে। নতুন করে তৈরি করার সামর্থ্য আমাদের নাই।
সুশীল সমাজ প্রতিনিধিগণ মনে করেন বিভিন্ন দূর্যোগের সময় নিরাপদ খাবার পানি ও টয়লেট ব্যবস্থা জরুরি ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা রাখা উচিত। অন্যদিকে শহর গ্রাম মিলে স্যানিটেশন কভারেজ আছে ৫৮% গ্রাম পর্যায়ে এই হার আরো কম। তারা মনে করেন ২০৩০ সালের মধ্যে সকলের জন্য নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নিশ্চিত করতে হলে এই খাত বরাদ্দ বাড়াতে হবে। বিশেষ করে বরগুনাসহ উপকূলীয় অঞ্চলের জেলা গুলির জন্য জলবায়ু ফান্ড ও বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।