উপকূলীয় অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা শুধু কাগজে, বাস্তবে নয়

উপকূলীয় জেলা ভোলাসহ ১৫ই মার্চ থেকে ১৫ই অক্টোবর পর্যন্ত ডেঞ্জার যোন ঘোষণা ও পরিপত্র প্রকাশ থাকলেও তা শুধু আদেশ ও কাগজে রয়েছে। বাস্তবে রুপ নেয়নি সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা। আর এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলাচল করা নৌযানে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনার কারণে জীবন বিপন্ন হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। এসব নৌযানের চালকদের অদক্ষতাও দূর্ঘটনার একটি বিশেষ কারণ বলে মনে করছে সাধারণ যাত্রী। সোমবার (২৯ আগষ্ট) ভোলার ইলিশা ঘাট এলাকায় একটি ১০ বছরের বেঁদে শিশু অদক্ষ স্পীড বোট চালকের অবহেলার কারণে গুরুতর আহত হন। তবুও ইলিশা ঘাটে অদক্ষ স্পীড বোট চালকরা থেমে নেই। তারা থেমে নেই আদেশ অমান্য করে যাত্রী নিয়ে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিতে।
সরেজমিন ইলিশা ঘাটে দেখা যায়, ছোট একটি স্পীড বোট ১০ জন যাত্রী নিয়ে পাড়ি দিচ্ছে উত্তাল মেঘনা নদী। যদি এসব দেখভাল করা বা নিষেধাজ্ঞা মানতে বাধ্য করার জন্য এখানে সর্বদা পুলিশ কর্তব্যরত থাকেন। তাদের চোখের সামনে দিয়ে আসাযাওয়া করছে এসব ছোটো ছোটো নৌযান। দেখলে বুঝার উপায় নেই পুলিশ তাদের চলতে নিষেধ করছে নাকি সেল্টার দিয়ে চলার আদেশ দিচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, অবৈধ এসব নৌযান চলাচল ঠেকাতে অভিযান চললেও আড়ালে ঘাট থেকে দূরে ব্লগের পাশে,ফেরীর পন্টুনে যত্রতত্র থেকে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। তবে লক্ষ্মীপুর থেকে ভোলাগামী ট্রলার ও স্পিডবোটের সংখ্যাই বেশি। নৌ-দুর্ঘটনা এড়াতে এসব নৌযান চলাচল বন্ধে কঠোর অভিযানের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের মেঘনা নদী ডেঞ্জার জোনের আওতায়। তাই এ রুটে সি-সার্ভে সনদ এবং ৬৫ ফুটের নিচে ছোট ছোট স্পীড বোট, লঞ্চ, বা ট্রলার চলাচল নিষিদ্ধ।
স্পীড বোট যাত্রী আল আমিন অভিযোগ তুলে বলেন, অনেক ঝুঁকি নিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছি, কিন্তু ভাড়া বেশি আদায় করা হচ্ছে। জামাল উদ্দিন বলেন,ছোটো ছোটো লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকার সুযোগ নিচ্ছে স্পীড বোটগুলো। উত্তাল মেঘনায় অতিরিক্ত যাত্রী উঠিয়ে পারাপার করা হচ্ছে, এতে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
তবে অবৈধভাবে ছোট নৌ-যান চলাচল বন্ধে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন ভোলা নৌ অফিসার ইনচার্জ শাহজালাল। তার পরও কিছু নৌযান অভিযানের আড়ালে চলছে, আমরা তাদের ধরতে কঠোর অভিযান চালাচ্ছি।
ভোলা বিআইডব্লিউটিএ সহকারী পরিচালক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুট ডেঞ্জার জোনের আওতায়। সেখানে ছোট ছোট ট্রলার বা স্পিডবোট চলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সি-সার্ভে ছাড়া নৌযান চলার কোন অনুমতি নেই। গত সোমবারের দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কোষ্টগার্ড ও নৌ পুলিশ, জেলা পুলিশ সুপার মহদয়কে বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে চিঠি দিয়েছি। এখানে নৌ পুলিশ, জেলা পুলিশ সদস্যরা কাজ করেন। তাদের উপস্থিতিতে কিভাবে এসব নৌযান চলাচল করে তা আমার বোধগম্য নয়।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।