লালমোহনে সৎমা এর ইন্ধনে ছেলের ঘর চুরি, মালামাল উদ্ধার
লালমোহনে চুরি হওয়া ঘরের মালামাল উদ্ধার। ছবিঃ ভোলার বাণী।

অবশেষে ভোলার লালমোহনের রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড পূর্ব চরউমেদ গ্রামে সৎমা দিলারা বেগমের ইন্ধনে প্রথম পক্ষের ছেলে জোবায়ের হোসেন শাহীনের ঘরের চুরি করানো মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। পরে থানায় জানালে পুলিশ গিয়ে মালমাল উদ্ধার করে এবং শাহীনের পরিবারের কাছে জমা দেয়।
গত মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড চরমোল্লাজী গ্রামের জসিম কনটাক্টটরের ঘর থেকে থেকে এসব মালামাল উদ্ধার করে শাহীনের পরিবার ও স্থানীয়রা।
জানা যায়, জসিম কনটাক্টটরের মেয়ে ঝুমুর ও দিলারা বেগমের বড় মেয়ে লিজা একইসাথে পড়াশোনা করে। সে সুবাদে সৎ ভাইয়ের ঘরের মালামাল চুরি করে ঝুমুরের বাড়িতে নিয়ে রাখে।
ঝুমুর জানায়, লিজাদের সংসারে ঝামেলা ছিল সেটা জানতাম। তাই লিজা এসে বলল, সৎ ভাইয়ের সাথে তারা যে ঘরে থাকে সেখান থেকে তাদের কে চলে হবে। তাই আাপাতত নিজেদের ঘরের মালামাল এনে আমাদের বাড়িতে এনে রাখার অনুমতি চায়। অনুমতি পেলে ছোট বোন বিথির মাধ্যমে রিকশাযোগে এসব মালামাল আমাদের বাড়িতে পাঠায় লিজা।
জানা যায়, পূর্ব চরউমেদ গ্রামের বাসিন্দা শাহাজান মাস্টারের দুই কন্যা ও এক ছেলে রেখে ১৯৯৭ সালে স্ত্রী হোসনে আরা বেগম মৃত্যুবরণ করেন। পরে সন্তানদের লালন পালনের জন্য ১৯৯৮ সালে দিলারা বেগম নামে এক নারীকে বিয়ে করেন তিনি। সে ঘরেও লিজা এবং বিথি নামে তার দুই কন্যা রয়েছে। অবশেষে প্রায় তিনমাস আগে শাহাজান মাস্টার মৃত্যুবরণ করেন।
জোবায়ের হোসেন শাহীন জানান, পিতার মৃত্যুর পর তাদেরকে পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত ও ঘর থেকে তাড়াতে বিভিন্ন সময় নানা কুটকৌশল শুরু করে তার সৎমা দিলারা বেগম। এনিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে শালিস বৈঠক হলে ঘরের বাবদ সৎমাকে কিছু টাকা দিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন শালিসগণ এবং আপাতত থাকার জন্য ঘরের মাঝখানে দুভাগ করে উভয়পক্ষকে থাকতে দেয়া হয়। তবে ঘরে স্ত্রী ও সন্তান রেখে ঢাকায় ব্যবসা করতেন শাহীন।
শাহীন আরও বলেন, গত ৬ আগস্ট (শনিবার) সন্তানকে ডাক্তার দেখাতে ঘরে তালা মেরে ঢাকায় চলে যান তার স্ত্রী। এসুযোগে গত রবিবার (১৪ আগস্ট) দিবাগত রাতে নিজের মেয়ে ও স্থানীয় কয়েকজনের সহায়তায় শাহীনের ঘরের স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাও মূল্যবান আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলা হয়। একইসাথে নিজের ঘরের মালামালও সরিয়ে চুরির নাটক সাজায় সৎমা দিলারা বেগম। এতেই ক্ষ্যান্ত হননি তিনি, উল্টো সাজানো চুরির ঘটনায় শাহীনকে জড়িয়ে থানায় অভিযোগ দিতে যান তিনি।
এদিকে ওই বাড়িতে থাকা আইপি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সৎবোনদেরকে শনাক্ত করেন জোবায়ের হোসেন শাহীন।
শাহীন আরও বলেন, ঘর থেকে সরিয়ে ফেলা মালামালগুলোর মধ্যে কাপড়-চোপড় ও হাঁড়ি-পাতিল উদ্ধার হয়েছে। তবে স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিস এখনও উদ্ধার হয়নি। তাই সৎমায়ের এসব কুটকৌশল থেকে বাঁচতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।