ভোলার বিভিন্ন দাবী নিয়ে চট্টগ্রামস্থ ভোলা জেলা ছাত্র ফেরামের সংবাদ সম্মেলন
তৃণমূল স্তরে মহিলাদের অন্তর্ভুক্তিকরণ ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্য : ‘ইভলভ’ প্রকল্প

ক্ষমতায়নের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর জোরদার করবে ‘ইভলভ’ প্রকল্প। জেন্ডার সংবেদনশীল অংশ্রগহণমূলক পরিকল্পনা এবং জলবায়ুবান্ধব অন্তভুক্তিমূলক বাজেট প্রণয়নসহ পরিবীক্ষণ করবে। সোমবার (২২শে আগস্ট) ডরপ-এর ঢাকা অফিসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে হেলভেটাস বাংলাদেশ এর নেতৃত্বে ঊঠঙখঠঊ (ঊহযধহপব ঠড়রপব ভড়ৎ ঃযব ওহপষঁংরড়হ ড়ভ ঃযব ঠঁষহবৎধনষব ধহফ ঃযবরৎ ঊসঢ়ড়বিৎসবহঃ) প্রকল্প পরিচিতি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এসময়ে উপস্থিত ছিলেন ডরপ-এর উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান এবং ডরপ-এর অর্থ ও প্রশাসন পরিচালক মো. হায়দার আলী খান সহ ডরপ-পরিবারের সকল শীর্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস এর ডিপুটি ডাইরেক্টর এবং এসডিজি ফোকাল মো. আলমগীর হোসেন, হেলভেটাস বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শাহারিয়ার মান্নান, প্রথমআলোর সিনিয়র রিপোর্টার আরিফুর রহমান, ডেইলি সানর সিনিয়র রিপোর্টার মো. আল-আমিন।
ডরপ- এর উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান এর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির সূচনা হয়। ডরপ-এর রিসার্চ, প্লানিং এন্ড মনিটরিং ডিভিসানের প্রোগ্রাম কর্ডিনেটর মো. আমির খসরু প্রেজেন্টেশানের মাধ্যমে ইভল্ভ প্রকল্প এর পরিচিতি প্রদান করেন। তিনি প্রকল্পটির বিস্তারিত সবার সামনে তুলে ধরেন।
ডরপ-এর উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান বলেন, প্রকল্পটি আগামী ৩ বছর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ, খুলনা জেলার পাইকগাছা এবং কয়রা উপজেলায় হতদরিদ্র এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ে সিএসও ও সিবিওদের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণসহ স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্লাটফর্মে দাবী-দাওয়া উত্থাপন করবে। প্রকল্প এলাকার ১৪টি ইউনিয়নে ১৪ সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন (সিএসও) এবং এই সকল সিএসও একসাথে ৩ উপজেলায় নেটওয়ার্কের সদস্যদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তথ্য অধিকার, স্থানীয় সরকারের দায়-দায়িত্ব জানাসহ কমিউনিটির বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া নারীদের ক্ষমতায়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নেওয়ায় উৎসাহিত করা হবে।
ইভলভ জলবায়ু পরিবর্তনের বাজেটকে জেন্ডার-ভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করা এবং সেবা প্রতিষ্ঠানে নাগরিক সহায়তা প্রাপ্তিতে একত্রে দাবি তোলাসহ প্রচারাভিযান করবে। এই ১৪ ইউনিয়নের ১২৬ ওয়ার্ডের পক্ষ থেকে ছোট ছোট ১২৬টি সিবিও গ্রুপ থাকবে যারা একদম তৃণমূল পর্যায়ে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে ধাপে ধাপে ইউনিয়ন, উপজেলা এবং কোন কোন প্রয়োজনে জেলাতেও বিভিন্ন দাবি-দাওয়াসহ অধিকারত আদায়ে সোচার হবেন। ক্ষমতায়নের মাধ্যমে এই উদ্যোগে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর জোরদার করবে এবং জেন্ডার সংবেদনশীল অংশ্রগহণমূলক পরিকল্পনা এবং জলবায়ুবান্ধব অন্তভুক্তিমূলক বাজেট প্রণয়নসহ পরিবীক্ষণ করবে। এই বাজেট পরিবীক্ষণ বা বাজেট ট্রাকিং-এর মাধ্যমে স্বচ্ছ অংশগ্রহণমূলক ও জেন্ডারবান্ধব জলবায়ু বাজেট স্থানীয় সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে সহায়তা করবে। দরিদ্র-বান্ধব বাজেট প্রণয়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাস্তবায়নের কারণে আশা করা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ সুবিধাবঞ্চিত এবং জলবায়ু প্রভাবিত সম্প্রদায় বিশেষ করে ২ লাখ ১০ হাজার দরিদ্র ও অনগ্রসর এর-নারীর ক্ষমতায়ন হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারের পাশাপাশি তার দীর্ঘমেয়াদী কর্ম- পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অনেক আগে থেকেই উপকূলীয় এলাকার জনগণ বিশেষ করে নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি, নিরাপদ পানি, তথ্য অধিকার, প্রশিক্ষণ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করে আসছে। নতুন প্রজেক্ট ‘ইভলভ’ আমাদের এ পরিকল্পনারই একটা অংশ।
স্থানীয় জনপ্রনিধিদের সম্পৃক্ত করে উপকূলীয় অঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করাই এ প্রজেক্টের মূল লক্ষ্য” বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস এর ডিপুটি ডাইরেক্টর এবং এসডিজি ফোকাল মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এসডিজি লক্ষ্য পূরণে সকলের অংশগ্রহণের সুযোগ আছে। এসডিজি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং এর সরাসরি উপকারভোগীদের একই সমান্তরালে নিয়ে এসেছে। সকলকে একসাথে এসডিজি লক্ষ্য পূরণে কাজ করতে হবে। জনগণ বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের সমস্যা ও চাহিদাগুলো চিহ্নিত করে তাদের ক্ষমতায়নে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। আমি আশা করি ডরপ তাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে উপকূলীয় মানুষের ক্ষমতায়নে অবদান রাখবে।
হেলভেটাস বাংলাদেশ এর পক্ষ থেকে শাহারিয়ার মান্নান বলেন, উপকূলীয় অঞ্চলে কাজ করা সব সময়ই চ্যালেঞ্জের। জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন উপকূলীয় এলাকার মানুষজন। ‘ইভলভ’ প্রজেক্টে আমরা মূলত খুলনা ও বাগেরহাট জেলার কয়রা, পাইকগাছা ও মোরেলঞ্জ উপজেলার পিছিয়ে পড়া উপকূলীয় জনগোষ্ঠীকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাদের প্রাপ্য অধিকার সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষিত করবো এবং জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়নে সাহায্য করবো। আমরা আশা করবো জন-ক্ষমতায়ন বিষয়ক এই কার্যক্রমে গণমাধ্যম একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখএবং আমাদের পাশে থাকবে।