একদিকে তেলের মূল্যে বৃদ্ধি অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়া। লাখ টাকার বাজার করে একেকটি ট্রলার সাগরে পাঠানো হচ্ছে, সেই ট্রলার মাছ না নিয়েই কূলে ফিরছে। এ যেন মড়ার উপর খাঁরার ঘাঁ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভোলার উপকূলের জেলেদের। গত ৫ আগস্ট রাঁতে সরকার দেশের ইতিহাসে জ্বালানি তেলের সর্বোচ্চ দাম বৃদ্ধির ফলে প্রভাব পড়েছে জেলে পল্লীতে। আয়ের চেয়ে ব্যায় বেড়েছে কয়েকগুন। সোমবার (২২ আগষ্ট) বিভিন্ন মাছঘাট ঘুরে দেখা যায় জেলে শূন্য হয়ে পড়েছে ভোলার মাছের আড়ৎগুলো। শত শত ট্রলার ঘাটে নোঙ্গর করা রয়েছে। সাগরে মাছ শিকারে ভরসা পাচ্ছেনা। জ্বালানি তেল ও ভোগ্যপণ্য’র ব্যায় বেড়েছে অনেক। সাগরে গিয়ে যে মাছ পাওয়া যায় তার দাম দিয়ে খরচের টাকাও উঠেনা। এ অবস্থায় মহাসঙ্কটে রয়েছে ভোলার লক্ষাধিক জেলে।

জেলেরা জানান, একেকটি জালের সাভার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে গেলে লাখ টাকা খরচা হয়। নদীতে লাগে কয়েক হাজার টাকা। যে মাছ পাওয়া যায় তা দিয়া খরচার টাকাই উঠেনা তার উপর নিজেগো সংসার, সমিতির কিস্তি, মহাজনের দেনা কি দিয়া চালাবো তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। সরকার হঠাৎ কইরা তেলের দাম বাড়ানোর কারনে এখন চোখ মুহে আন্ধার দেহি।
মেঘনার জেলে আব্দুর রহিম জানান, সারে ৮’শত টাকায় ১০ লিটার ডিজেলা নিয়া নদীতে গেছি, ফিরে এসে আড়ৎ এ মাছি বিক্রি করছি ৫’শত টাকার। পরের দিন সকালে তেল কিনতে গিয়ে দেখি ১০ লিটার তেলের দাম চায় ১ হাজার ১’শত ৫০ টাকা। সেই দিন তেল না কিনে বাড়ি ফিরে আসি আর নদীতে যাই নাই। এই পরিস্থিতিতে কি করমু ভাইবা পাইতাছিনা।

তেঁতুলিয়ার আড়ৎদার নলী মেম্বার ও আবু মিয়া জানান, ৫০ টা সাভারে জেলেদের প্রায় কোটি টাকার দাদন দিয়েছি। মাছ শিকারের জোবা (সময়) থাকলেও জেলেরা নদী/সাগরে মাছ শিকারে যায়না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভোলার আড়ৎ মালিকরা কয়েক কোটি টাকার লোকসানে পড়তে হবে।
ভোলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভোলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা এক লাখ ৪৪ হাজার। এর মধ্যে সাগরে মাছ শিকারে যায় ৬৪ হাজার জেলে। বাকিরা মাছ শিকার করে নদীতে তবে নিবন্ধিত ছাড়াও আরো প্রায় কয়েক হাজার জেলে রয়েছে।
ভোলার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ জানান, তেলের মূল্যে বৃদ্ধিতে জেলেদের ওপর প্রভাব পড়বেই। তেলের ওপর নির্ভর করেই জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে যেতে হয়। তবে তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে মাছের মূল্যও বৃদ্ধি পাবে। আশা করি পরিস্থিতি বদলে যাবে।