১২ টা বাজলেই মদনপুরের স্কুল ছুটি!

বিদ্যালয়ের সাথে বসবাস করেও বিদ্যালয়ে আগমন ও প্রস্থানের সময়সূচি জানেন না ভোলার দৌলতখান উপজেলার বিছিন্ন মদনপুরের ৩৮ নং চর পদ্মা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা শাহিনা। সকাল তখন ১০ঃ২০মিনিট সরেজমিন ঐ বিদ্যালয়ের ভবনে উঠে দেখাযায় কোমল মতি শিক্ষার্থীরা কোলাহল করছে, নেই কোন শিক্ষকের উপস্থিতি। জানতে চাইলে তারা বলেন আমাগো আপারা আইয়ে নায় অহনো। কোন সময় আসবে জানতে চাইলে তারা এক বাক্যে বলেন আরেকটু পরে আইবো । কোথায় থেকে আসবেন? বলতেই দেখিয়ে দিলেন এক ম্যাডাম থাকেন ঐ রুমে,আর একজন স্কুলের পিছনেই একটি এনজিও অফিসে থাকেন। প্রধান শিক্ষক সময় পেলে আসেন বলেও জানান শিক্ষার্থীরা। রুমের দিকে এগুতেই বেরিয়ে আসেন শিক্ষিকা রুনা। স্কুলে সাংবাদিক এসেছে শুনে এনজিও অফিসে থাকা শিক্ষিকা সাহিনা ছুটে আসেন তরিগড়ি করে। সহকারী শিক্ষিকা সাহিনা কে আপনার স্কুলে আগমন ও প্রস্থানের সময় জানতে চাইলে তিনি কাচুমাচু করে কিচুক্ষন নিরব থেকে পরে শিক্ষিকা রুনাকে জিজ্ঞেস করেন এবং তার স্কুলে শিক্ষার্থী কতজন জানতে চাইলেই তিনি তাও ঐ শিক্ষিকাকে জিজ্ঞেস করেন আমাগো ছাত্রছাত্রী কয় জন আপা? শুধু একটি নয় মদনপুরের প্রতিটা প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো সরকারের দেওয়া নির্ধারিত সময়ের পরে আসা এবং আগেই ছুটি দেওয়া হয়। এতে শিক্ষার মান ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে অভিভাবক মহলের।

এখানকার বিদ্যালয়গুলো দুপুর ১২টা থেকে ১২ঃ৩০ মিনিটের মধ্যে ছুটি দিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে শিক্ষকবৃন্দ। বিপাকে পড়ছে ছাত্র-ছাত্রীগন। এতে ওই চরবাসী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান দিনদিন কমে যাবার আশংকা রয়েছে। অভিভাবক মহল তাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়বে।
স্থানীয়দের অভিযোগ বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখন বিদ্যালয় খোলা হলেও খেয়া পার হয়ে শিক্ষকরা সকাল সাড়ে ১০ টা- ১১টার মধ্যে চলে আসেন , আবার নির্ধারিত সময়ের আগে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দিচ্ছেন। এতে করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের আগে বিদ্যালয় ছুটি হওয়ায় কারন জানতে চাইলে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন দুপুর ১টার পরে আবার খেয়া আসবে ৪টায় তাই তারা আগেবাগে চলে যায়। সরকারের দেওয়া নির্ধারিত সময়ের আগেই ছুটি দিয়ে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষার মান নষ্ট করছে ঐসব শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন অবিভাবকরা।

একই অবস্থা দেখা যায় অন্য প্রাইমারী স্কুলে গিয়ে শিক্ষিকা স্কুলের মধ্যেই বসবাস করেন কিন্তু নির্ধারিত টাইমে ক্লাসে আসেন না আবার ছুটিও দিয়ে দিচ্ছেন দুপুর ১ টার মধ্যে। বিদ্যালয়ের আশেপাশের লোকজন ও খেঁয়ামাঝি বলেন, প্রতিদিনই দুপুর সাড়ে ১২টা বা ১টার মধ্যে এখানকার সকল স্কুল ছুটি দিয়ে শিক্ষক যাদের বাড়ী নদীর ওপারে তারা চলে যায়।
খেঁয়ায় মাধ্যমিকের এক সহকারী শিক্ষকের সাথে দেখা হলে স্কুল বন্ধ কেন জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন খেঁয়া পারাপারের অসুবিধের কারণে সাড়ে ১২টায় ছুটি দেওয়া হয়েছে। ৩৮ নং চর পদ্মা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিহাব উদ্দিন বলেন সাহিনা ম্যাডাম বিদ্যালয়ের সময় জানেন না এটা তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার এখানে আমার কি বলার আছে।
দৌলতখাঁন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি আগামীকাল মাসিক মিটিংএ উপস্থাপন করবো এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।