বোরহানউদ্দিনে জ্বীনের বাদশা সেজে প্রতারণা ॥ হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা

(প্রতিকী ছবি)

দাদা বাবার দরবার, পাগলা বাবার দরবার, জ্বিন সাধক বাবা, মুরিদ বাবা, ইন্দ্রজাল বাবা, কালি সাধক বাবা, মোহাদেব সাধক বাবা, কামরুপ কামাক্ষা থেকে প্রশিক্ষণ তান্ত্রিক বাবা, পির বাবা, লজ্জাতুন নেসা তান্ত্রীক বাবা, কুফরি বাবা, জ্বীনের বাদশা বাবাসহ বিভিন্ন দরবার বাবা নামে ফেইসবুক আইডিসহ বিভিন্ন স্থানে বিজ্ঞাপন দেয় বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের কুঞ্জেরহাট, কালির হাট, দালাল বাজার, ফকিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫ শত জ্বীন প্রতারক।
জ্বীন প্রতারক চক্রটি বিজ্ঞাপনে মোবাইল নাম্বার যুক্ত করে সকল রোগ থেকে মুক্তি, স্বামী-স্ত্রীর মিল, বিদেশ প্রবাসিদেরকে লটারি পাইয়ে দেওয়া, প্রেমিক প্রেমিকাদের মিল করে দেওয়া, মেয়ে বাহির করা, অবাধ্যকে বাধ্যগত করাসহ বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হয় বলে যোগাযোগ করার জন্য বিজ্ঞাপনে মোবাই নাম্বার দেয়। ওই মোবাইল নাম্বারে ফোন করলেই প্রতারণার শিকার হয় মানুষ। বিকাশের মাধ্যমে টাকা আনেন প্রতারক চক্রটি। টাকা পয়সা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছে অনেক পরিবার। জ্বিন প্রতারক চক্রটি গত ২ বছর আগেও রিক্সা চালক কেহ দিন মজুরসহ বিভিন্ন পেশায় কাজ করতেন। বর্তমানে জ্বিন প্রতারক চক্রটি প্রতারণার মাধ্যমে কোটি- কোটি টাকার মালিক হয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন।
অন্যদিকে বিজ্ঞাপনে থাকা ওই নাম্বার থেকে বিভিন্ন মানুষকে মোবাইল করে জ্বীনের বাদশা সেজে ভয়ভীতি প্রদশন করে হুমকি দিয়ে বিকাশের মাধ্যেমে টাকা পয়সা আনেন ওই প্রতারক চক্রটি। এতে নিঃস্ব হয়েছে হাজারো পরিবার। প্রতারনার শিকার হয়ে ৪২ লক্ষ্য টাকা হারিয়ে প্রায় পাগলের মতো এক ভুক্তভোগী। ওই ভুক্তভোগী মঙ্গল মিয়া নিরুপায় হয়ে বোরহানউদ্দিন থানায় বাদি হয়ে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। যাহার নং-০৩। তারিখ-০৩-০৭-২০২২ইং।
কাচিয়া ইউনিয়নে ইয়াবাসহ জ্বিন প্রতারকের পেশায় জুকছে যুব সমাজ। এ যেনো এক জ্বিন প্রতারণার এলাকা নামে পরিচিত। স্কুল পড়ুয়া ছেলেরাও পড়ালেখা বন্ধ দিয়ে প্রতারণার পেশায় লিপ্ত হচ্ছে। সেই সাথে ইয়াবা সেবন করে কন্ঠ চেঞ্জ করে প্রতারণা করার জন্য বিভিন্ন মোবাইল নাম্বারে ফোন করেন প্রতারক চক্রটি।
অন্যদিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মাসিক মিটিংয়ে ইয়াবাসহ জ্বীন প্রতারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানান কাচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রব কাজিসহ বক্তারা। তারা বলেন, উপজেলার মধ্য কাচিয়া ইউনিয়নের মধ্যে ইয়াবাসহ জ্বীন প্রতারকদের বিরুদ্ধে প্রশাসন এখনি ব্যবস্থা গ্রহন না করলে হুমকির মুখে থাকবে যুব সমাজ।
তবে সচেতন মহল জানান, তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছে হাজার-হাজার মানুষ। এখনি প্রতারণার বিরুদ্ধে লাগাম টেনে ধরতে হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। তা নাহলে এ প্রতারণায় লিপ্ত হয়ে ধ্বংস হবে সমাজ। জ্বীন প্রতারণার মামলায় রবিবার দুই জনকে আটক করেছে বোরহানউদ্দিন থানা পুলিশ। তারা হলেন, আকবার ও জসিম। সোমবার তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহিন ফকির (বিপিএম) জানান, জ্বীনের বাদশা সেজে প্রতারণা করায় মানুষ নিঃস্ব হচ্ছে। এই প্রতারকদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছি। আমরা আজকেও ২ জনকে আটক করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছি। প্রতারণা বন্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে। প্রতারনার মামলার আসামীদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।