হুমকিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ হাজার হাজার বসতভিটা

মেঘনার ভাঙ্গনে দিশেহারা ভোলার রাজাপুরবাসী

দ্বীপজেলা ভোলার মানুষের কাছে আতঙ্কের নাম মেঘনা নদী। লক্ষ মানুষের আয়ের উৎস যেমন মেঘনা তেমনি লক্ষ লক্ষ মানুষকে ফকির বানিয়েছে এই মেঘনা নদী। মেঘনার তীব্র ভাঙ্গনে দিনদিন ছোট হয়ে আসছে ভোলার সিমানা, ভোলার কয়েকশ গ্রামসহ অনেক ইউনিয়ন আজ মেঘনার ভাঙ্গনে বিলীন। ভোলার আলোচিত, পরিচিতো ও নামিদামি বাড়ী, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাক্ষসী মেঘনার গর্ভে আজ।
দ্বীপজেলা ভোলা একটি সম্ভাবনাময় জেলা হলেও নদী ভাঙ্গনের কারনে বড় কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান আজও গড়ে উঠেনি। ভোলায় দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদরা থাকলেও স্থায়ী টেকসই বাঁধ আজও হয়নি। নামমাত্র সিসি ব্লক দ্বারা নদীভাঙ্গন রোধ হলেও তার কোন স্থায়ী নিশ্চয়তা নেই, ব্লকে ফাটল শুরু হয়েছে ইলিশা রাজাপুর সিমানাবর্তী এলাকায়। মেঘনার তীব্র ভাঙ্গনে প্রতিদিনই বসতভিটা হারাচ্ছেন সদর উপজেলার রাজাপুরের বাসিন্দারা।


রাজাপুর জোরখাল থেকে চর মোহাম্মদ আলী পর্যন্ত প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় ফসলি জমি ও বসতভিটা বিলিন হয়ে যাচ্ছে মেঘনায়। নদীর তীরঘেষা চর সিতারাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর রামদাসপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর মোহাম্মদ আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কোড়ালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মসজিদ, মাদ্রাসা ও কয়েকটি বাজার হুমকিতে রয়েছে। খুব দ্রুতই যদি নদী ভাঙ্গন রোধে গুরুত্বপূর্ণ কোন ভুমিকা সরকারী ভাবে না নেওয়া হয় তাহলে কয়েক কিলোমিটার ভিতরে প্রবেশ করবে মেঘনা নদী, এতে ৫ হাজারের মত পরিবার বসতভিটা হারাবে এবং হুমকিতে থাকবে ভোলা শহর।
রাজাপুরের ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে যে কোন মুহুর্তেই দারোগাখাল পর্যন্ত চলে আসবে নদী, দারোগাখালের সাথে সম্পৃক্ত ভোলার খাল অথাৎ দারোগাখালে নদী মানেই ভোলা। এলাকাবাসীর দাবী রাজাপুর নয় শুধু ভোলা শহর রক্ষা বাঁধের জন্য হলেও ভাঙ্গনরোধে কার্যকরী ভুমিকা নেওয়া উচিত।
এদিকে ভাঙ্গনরোধ করার জন্য এলাকাবাসীর উদ্যােগে রাজাপুর জোরখাল ও ঢাকা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়েছে। স্বারকলিপি দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরসহ সংশিষ্ট দপ্তরে। মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুতই জিওব্যাগ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তদারকি করে টেকসই সিসি ব্লক দিয়ে ভোলা কে রক্ষা করার দাবী তুলেন।
এদিকে রাজাপুরের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের একটি প্রতিনিধি দল ভোলা সদর আসনের এমপি তোফায়েল আহমেদ এর সাথে দেখা করলে তিনি দ্রুতই নদী ভাঙ্গন রোধ করার আশ্বাস দিয়েছেন এবং ওই কথার সূত্র ধরেই গতকাল পাউবোর একটি প্রতিনিধি দল নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।