সর্বশেষঃ

এককালীন চাঁদা নেয়া কে ওই ব্যক্তি ?

ভাড়ায় চলছে ভোলার সার্কুলার রোড, বোরাক প্রতি এককালীন ৫ হাজার, মাসিক ৪শ’, একবার ঢুকলেই ১০টাকা

ভোলায় মহাজনপট্টি সার্কুলার রোডের সড়ক দখল করে বসানো হয়েছে বোরাকের অবৈধ স্ট্যান্ড। এতে সড়ক সংকুচিত হয়ে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ ভিবিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সার্কুলার রোডের উভয় পাশে ৮ ফুট করে দখলে নিয়ে বোরাক স্ট্যান্ড বসানো হয়েছে। এখান থেকে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টি বোরাকে করে শত শত যাত্রী খেয়াঘাট, শান্তির হাট, ভেলুমিয়া ও ভেদুরিয়ায় যাতায়াত করছে। এ স্ট্যান্ডে লাইন পেতে স্থানীয় এক নেতাকে বোরাক প্রতি এডভান্স ৫ হাজার (অফেরতযোগ্য), মাসে ৪শ’ এবং প্রতিবার যাত্রী পরিবহনে ১০ টাকা করে চাঁদা দিতে হচ্ছে। তাতে দৈনিক একটি বোরাকের জন্য ৫০ টাকা করে চাঁদা দিতে হচ্ছে। আর এই চাঁদা তুলছেন শহরের চরনোয়াবাদ এলাকার শাহ আলম মৃধার ছেলে শাহ আলম জুয়েল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে প্রতিদিন যদি টাকা দিতে হয়, তা হলে আবার এককালীন টাকা কিসের ? তবে বাধ্য হয়েই বোরাক ড্রাইভাররা এককালীন ৫ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। কে নিচ্ছে এই টাকা, তার নাম কেউ বলছেন না ভয়ে।
আরো জানা গেছে, একটা সময় ভোলা পৌর সভায় বিভিন্ন স্থানে যেমন- ভোলা বাসস্ট্যান্ড, নতুন বাজার, ইলিশা বাসস্ট্যান্ড, ওয়েষ্টার্ণপাড়া, কালিনাথ রায়ের বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে পৌরসভার নাম ভাঙ্গিয়ে ১০/২০ টাকা করে বোরাক প্রতি চাঁদা তোলা হত। কিন্তু এর কিছুই জানতেন না ভোলা পৌর মেয়র। তখন অনেক ড্রাইভাররা ভোগান্তিসহ অনেক সময় দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দিতে পেরে লাঞ্ছনার শিকার হতেও হয়েছে। এমন খবর যখন ভোলার অভিভাবক, ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ কানে পৌছে, তখন তিনি বলেছেন ভোলা পৌর সভার এলাকায় কোন প্রকার বোরাক থেকে চাঁদা তোলা যাবে না। এরপর ভালই চলছিল বোরাক ড্রাইভারদের যান চলাচল। কিন্তু হঠাৎ করে নেতার কথা কে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বোরাক ড্রাইভারদের কাছ থেকে অবৈধভাবে চাঁদা তুলছেন কে ওই ব্যক্তি ?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বোরাক ড্রাইভার বলেন, আমরা এখন এখানে জিম্মী অবস্থায় আছি। এদিকও যেতে পারছি না, ওদিকও যেতে পারছি না। আমরা প্রতিদিন একটি বোরাকে ৫-৬ বার লাই পাই। ওই সময় যাত্রী পাই, আর না পাই বোরাক প্রতি আমাদের প্রতিদিন অন্তত এই ৫-৬ বারে ৫০ টাকা, মাসে ৪শ’ টাকা দিচ্ছে হচ্ছে। শুধু এটাই নয় এ রুটে বোরাক চলাচাতে হলে এককালীন ৫ হাজার টাকাও দিতে হচ্ছে। এভাবে যদি চলতে থাকে, তা হলে আমাদের না খেয়ে-ই মরতে হবে।
অপর এক ড্রাইভার বলেন, আমাদের লাইন ম্যান মঞ্জু ভাই’র পোয়া বারো। তিনি একদিকে চাঁদা তুলেন, অন্যদিকে ট্রাফিক দিয়ে মামলা দিয়ে তিনিই আমার তা মিমাংশা করেন।
অভিযুক্ত লাইনম্যান মঞ্জু’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা সামান্য কিছু টাকা উঠাই। এগুলো প্রশাসনসহ বিভিন্ন ঘাটে খরচ করতে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা এম রহমান বলেন, এমনিতেই তো আমাদের এই রাস্তাটা চিপা। অপরদিকে সারি সারি বোরাক লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখে। এতে করে আমাদের চলাচল করতে অসুবিধা হয়। শুধু তাই নয় এখানে যে সমস্ত পরিবারগুলো বসবাস করছে তাদেরকেও পড়তে হচ্ছে নানান বিরম্ভনায়। এছাড়াও এখানে দাঁড়িয়ে থাকা বোরাকগুলোতে বিভিন্ন লোকজন ইয়াবা, গাঁজাসহ অন্যান্য মাদক সেবন করে আসছে। এদের কারণে আমাদের এখানকার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ ভোলার সুশীল সমাজ।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।