সর্বশেষঃ

নানা আয়োজনে আলতাজের রহমান কলেজে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আলতাজের রহমান ডিগ্রি কলেজে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২২ উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি পালনের লক্ষ্যে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। কলেজের পক্ষ হতে নেয়া হয়েছে ব্যাপক কর্মসূচি।

শনিবার (২৬ মার্চ) দিনের প্রথম প্রহরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কলেজ ক্যাম্পাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

এ দিকে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সকাল ১০ টায় আলতাজের রহমান ডিগ্রি কলেজের আয়োজনে কলেজের হল রুমে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও কলেজের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কবিতা আবৃত্তি ও রচনা লিখন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

আলতাজের রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জাহান-জেব আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয়ের স্মৃতিবিজড়িত ইতিহাস সম্পর্কে বিশদভাবে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোঃ শফিকুল ইসলাম।

এসময় তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন স্বাধীনতা আমাদের আজন্ম সাধনার ফসল। এত প্রাণ, রক্ত ও সম্ভ্রমের বিনিময়ে আর কোনো জাতিকে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমাদের মহান নেতার নির্দেশে ‘যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে’ আমরা একাত্তরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধে। ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক সর্বস্ব বাজি রেখে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমার কত সহযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে আর ফেরেনি। আমরা অনেকে অমূল্য স্বজন ও সম্পদ হারিয়েছি। তাই এই স্বাধীনতা আমাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এর ভাষণে বঙ্গবন্ধু প্রথম স্বাধীনতার ডাক দিয়ে সকলকে যার যা কিছু আছে তা নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে বলেন। বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানী বাহিনী গ্রেফতার করে আটকে রাখার পরে ২৬শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন মেজর জিয়া। আমাদের স্বাধীনতা-সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের মূল প্রেরণা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করি। এসময় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাক-হানাদার বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন ও লুন্ঠনের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা রক্ত ঝরিয়ে সম্ভ্রম হারিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি সেই স্বাধীনতা রক্ষা করতে তোমাদের দেশ প্রমিক হতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করে দেশকে মনেপ্রাণে ভালোবাসতে হবে। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে যদি তোমরা দেশের কল্যাণে নিজেদের বিলিয়ে দিতে পারো তাহলেই আমাদের মুক্তির সংগ্রাম স্বার্থক হবে। এসময় শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার আহবান জানিয়ে তিনি শিক্ষার্থদের বেশিবেশি মুক্তিযুদ্ধের বই পড়ার তাগিদ দেন।

বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হালিমা আকতার এর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন-কলেজের উপাধ্যক্ষ ফেরদৌস আহমেদ,  ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফেরদৌসী নাসরিন মুন্নি, সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মাহাবুবুল আলম, ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক মোঃ তানভীর ইসলাম রনি প্রমুখ।

এসময় আলোচনা সভায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ এনায়েত উল্লাহ, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আনোয়ার হোসেন, ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক লায়লা আঞ্জুমান, কৃষি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন, জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ শাহাবুদ্দিন, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দিলরুবা ফেরদৌস, ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রামকৃষ্ণ বনিক, ইসঃ স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহা. সিরাজুল আলম, ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওবায়দুর রহমান, দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রোকেয়া শারমিনসহ কলেজের অন্যান্য সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অফিস সহকারীগণ উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধান অতিথি ফিতা কেটে ‘শেখ রাসেল দেয়ালিকা’ নামে কলেজের একটি দেয়ালিকার উদ্বোধন করেন।

আলোচনা সভা শেষে কলেজ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।