শ্রীপুরের রুবেল বাহিনীর বর্বরতা

নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ভোলার চর চটকিমারার মানুষ

(অগ্নিকান্ডের দৃশ্য, ইনসেটে অভিযুক্ত রুবেল কাজী)

ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন এলাকা চর চটকিমারা। ভোলা বরিশাল সিমানায় তেঁতুলিয়া নদীর বুকে জেগে উঠা চর চটকিমারায় কয়েক হাজার নারী পুরুষ বসবাস করে কৃষি ও মাছ ধরে জীবিকা নিবাহ করছে। ভালোই কাটছিলো খেতেখাওয়া চরবাসীর জীবন। হঠাৎ এই চরবাসীর জন্য আতঙ্কের নাম হয়ে উঠে শ্রীপুরের বাসিন্দা সাকাওয়াত হোসেন ওরুপে রুবেল কাজী। শ্রীপুর থেকে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ভোলার চরচটকিমারা প্রবেশ করে কৃষকের ধান, গরু, মহিষ লুটপাট করে নিয়ে যেতো রুবেল বাহিনী।
রুবেল বাহিনীর অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে ভেদুরিয়ার প্রয়াত চেয়ারম্যান মরহুম সরোয়ার হোসেন এর সহযোগীতা চায় চরবাসী। চেয়ারম্যান সরোয়ার এর হস্তক্ষেপে কিছুদিন ভালো গেলেও সরোয়ার চেয়ারম্যানের মৃত্যুর উপর আবারো অত্যাচার শুরু করেন রুবেল বাহিনী বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়েন সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ কাজীর ছেলে ও চারদলীয়জোট সরকারের সমর্থিত বরিশাল-৪ আসনের সাবেক এমপি কাজী মেজবাউদ্দিন ফরাদের চাচাতো ভাই শাকাওয়াত হোসেন ওরুপে রুবেল কাজী। ভোলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চর চটকিমারাকে শ্রীপুর দাবী করে প্রায় এক কিলোমিটার ভোলার সিমানায় প্রবেশ করে বাড়ী ঘর উত্তোলন করে দখলে নিয়েছেন। জমিদখল করেই তৃপ্তি মিটেনি রুবেল বাহিনীর। তারা চরচটকিমারা বাসিন্দাদের উপর হামলা, লুটপাট, নির্যাতন অব্যাহত রেখেছেন। জমির ফসল, গরু, মহিষ, হাস মুরগী লুটপাট যেন তাদের নিত্যদিনের খেলা।
গত বুধবার গভীর রাতে গুচ্ছগ্রামে ঘুমন্ত কৃষকের ঘরে আগুণ দিয়ে ৪০টি ঘর পুড়ে ছাই করে দিয়েছেন রুবেল বাহিনী, এসময় ঘরে থাকা ১০ জনের মত আহত হয়। বুধবার থেকে রুবেল বাহিনীর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে ভোলার ভেদুরিয়ার চরচটকিমারার মানুষ। এ ঘটনা সমাধানে শুক্রবার বিকালে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি ও ভোলা সদর থানার ওসি (তদন্ত) আরমান হোসেন ও ভেদুরিয়ার চেয়ারম্যান কামাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ বিষয়ে রুবেল বাহিনীর প্রধান শাকাওয়াত হোসেন ওরুপে রুবেল কাজীর বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার ব্যবহারকৃত মোবাইল কল দিলে মোবাইল রিসিভ করেনি বিধায় তার কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে ভেদুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামাল হোসেনকে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনিও রিসিভ করেনি।
শ্রীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুন রশিদ বলেন, রুবেল কাজী ভোলার সিমানায় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে মানুষের বাড়ীঘর লুটপাট করেছে এটা আমি শুনেছি এবং রুবেল কাজীর বিরুদ্ধে ১৬ থেকে ১৭ টি মামলা চলমান। ভোলা সদর থানার ওসি (তদন্ত) আরমান হোসেন জানান, মেহেন্দিগঞ্জ থানার পুলিশসহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি সফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং দুইপক্ষকে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ করেছি তবে এই ঘটনায় এখনো কোন মামলা হয়নি। রুবেল কাজীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে বলে নিশ্চিত করেছেন ওসি সফিকুল ইসলাম।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।