মুজিব শতবর্ষে ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ প্রকল্প

মনপুরায় টাকা ছাড়া মিলে না সরকারী বিদ্যুতের খুঁটি

গ্রাহকের থেকে প্রতি খুঁটি ৫ হাজার টাকা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান

ভোলার মনপুরায় মুজিব শতবর্ষে ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ পৌঁছানের লক্ষ্যে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান জে.এন.জে এর মাধ্যমে বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ চলছে। কিন্তু টাকা ছাড়া গ্রাহকরা পাচ্ছেনা বিদ্যুতের খুঁটি। বিনামূল্যের সরকারী বিদ্যুতের খুঁটি গ্রাহকের কাছ থেকে খুঁটি প্রতি ৫ হাজার টাকা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জে.এন.জে কোম্পানীর বিরুদ্ধে।
বিদ্যুতের গ্রাহক মনির উদ্দিন জানান, বধুকান্দি মসজিদের পাশে বাড়িতে আমরা আট পরিবার বসবাস করি। একটি বিদ্যুতের খুঁটি হলে আট পরিবারের বিদ্যুতের অসুবিধা হয়না। কিন্তু বিদ্যুত অফিসে একাধিকবার ধরনা দিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করতে পারেনি। পরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা সোহানকে ৫ হাজার টাকা দিলে একটি খুঁটি বসিয়ে দেয়। একইভাবে ঠিকাদর প্রতিষ্ঠানকে খুঁটি প্রতি ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন কামাল, মামুন, কামরুল, হান্নান সহ অনেক গ্রাহক।


এছাড়াও গ্রাহক বিপ্লব, আলমগীর, আলাউদ্দিন জানান, তাদের বাড়িতে পুরানো লোহার খুঁটি ভেঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ওই সমস্ত খুঁটি অপসারন করে নতুন সিমেন্টের খুটি বসানোর আবেদন করলেও টাকা না দিলে খুঁটি বসানো হবে না বলে জানান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষানা অনুযায়ী মুজিব শতবর্ষে ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় ‘ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিতরণ, পরিবর্ধন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় দুই টেন্ডারে ১৩৬০টি বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ পায় জে.এন.জে কোম্পানী। এতে দুই প্রকল্পে ১৩৬০ খুঁটি বসাতে আনুমানিক ১ কোটি টাকার ওপরে প্রকল্পের ব্যয় ধরা রয়েছে। খুঁটি স্থাপন করার কাজ পাওয়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি মেইন লাইন সহ সাইড লাইনে নতুন সিমেন্টের তৈরী বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করবে। তাছাড়াও পুরাতন লোহার খুঁটি সরিয়ে নতুন খুঁটি স্থাপন করবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে দরপত্রের মাধ্যমে ১৩৬০ খুঁটি বসানোর কাজ পাওয়া জে.এন.জে কোম্পানীটি গ্রাহকদের কাছ থেকে খুঁটি প্রতি ৫ হাজার টাকা করে আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ভূক্তভোগী বিদ্যুতের গ্রাহকদের।


এ ব্যাপারে খুঁটি বসানোর কাজ পাওয়া ঠিকাদরী প্রতিষ্ঠান জে.এন.জে কোম্পানীর স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ও মোঃ সাজু জানান, সরকারী ম্যাপ অনুযায়ী খুঁটি বসানোর কাজ চলছে। সরকার খুঁটি বসানোর জন্য কোন টাকা নেওয়া হয়না। তবে সাইড দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা সোহান কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন কিনা আমরা জানি না।
এ ব্যাপারে আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মোঃ আবদুছ ছালাম জানান, গ্রাহকদের টাকা না দেওয়ার জন্য মাইকিং করানো হয়েছে। এ অনিয়মের ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পরিতোষ চন্দ্র সরকার জানান, সরকারী খুঁটি বসানোর জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিধান নেই। যদি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান টাকা নিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা জানান, বিদ্যুতের খুঁটির জন্য টাকা নিচ্ছে এমন মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।