ভোলা সদর হাসপাতালে সুইপার যখন চিকিৎসক !

দ্বীপজেলা ভোলার মানুষের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল ভোলা সদর হাসপাতাল। আর সেই হাসপাতালে জোড়াতালি দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। চিকিৎসা সেবা নিতে আশা রোগী এবং তাদের স্বজনদের ভোগান্তি দেখার কেউ নাই। প্রতিদিনই হাসপাতালে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা সহযোগী চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্বপালন করেন। সচেতন রোগীর স্বজনরা প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হয় না, কারণ হাসপাতালের কর্তা তারাই। সুইপার ইনজেকশন পুস করেন রোগীকে। এটা কোন স্বাভাবিক কাজ নয়। এটা চলে যেতে পারে সাংঘাতিক আকারে। পত্রিকার পাতায় এ খবর পড়ার পর পাঠক নিশ্চই আঁতকে উঠবেন। ঘটনাটি নিত্যদিন চলছে ভোলা সদর হাসপাতালে।
দেখা গেছে, গত বুধবার এই হাসপাতালের জরুরী বিভাগে সেবা নিতে আসা এক রোগীকে ইনজেকশন পুশ করেন হাসপাতালে কর্মরত সুইপার চন্দন। অমনি কপাল ভাঁজে আঁতকে উঠলাম। সুইপারের কান্ড দেখে আমরা মনে মনে ভাবলাম হাসপাতালে না কি অন্য জগতে ? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্যই বলতে পারেন যে ওই সুইপারকে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে আসতে নিষেধ করা হয়েছিলো। এরপরও লোকবল-সংকটের কারণে জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকেরা ব্যক্তিগত কাজে লাগান চন্দনকে। কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও সুইপারের দুঃসাহস দেখে ভিরমি খাওয়ার মতোই হয়ছিলো ভোলার বাণী’র এ প্রতিবেদক দ্বয়ের। লোকবল থাকবে না বলে কি ইনজেকশন দেওয়ার লোকের এতই অভাব ? কে দেবে এর জবাব ? জবাবদিহিই-বা করবে কে ?
ভোলা সদর হাসপাতালে অভ্যন্তরে জসীম উদ্দীনের ফোড়া কাটা নাপিতের গল্পের মত চন্দন এখন চিকিৎসক বটে ! পাঠক ফোড়া কাটা গল্প শুনেছেন অনেকেই, তা আর নাই বললাম। তবে এমন সুইপার ডাক্তার থাকতে পাস করা ডাক্তারের কাছে কে যায় ? কিন্তু আমাদের ভোলার ‘নাপতে বুদ্ধি’ রাখা সুইপার চিকিৎসককে জরুরী বিভাগের ইনজেকশনের পুশকরার মত সাহসদাতা কে ? এমন প্রশ্নের উত্তর অজানাই থেকে গেল। তবে সুইপার দিয়ে সদর হাসপাতালে জরুরী বিভাগ চালানো কর্তাব্যক্তিরা অতি সেয়ানা। তারা কেবল রোগীর মাথায় কাঁঠালই ভাঙে না, কোয়া খেয়ে আঠাও লাগায়, আর আঠা ! তাও লাগায় অন্যের মুখে। সুপ্রিয় পাঠক নিশ্চয়ই আমাদের ইঙ্গিত না বুঝার নয়।
আরো জানা যায়, অযোগ্য চিকিৎসকের পরামর্শে রোগীর মৃত্যু এমন খবর সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই আসে। মুখোশ খুলে যাওয়ার পর ‘ভুয়া চিকিৎসক’ হয় বেমালুম ভেগে যান, নয়তো জেল-জরিমানা হয়। কিন্তু রোগীর স্বজনের খোঁজ নেবার কেউ থাকেনা। এমন পরিস্থিতিতে সুইপারের চিকিৎসায় রোগীর আশংকা দেখা দিলে এর দ্বায় কে নিবে ? এ প্রশ্নের উত্তরও আমাদের অজানা।
সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার লোকমান হোসেন বলেন, চন্দন তো পরিচন্নতা কর্মী। তিনি এমন কাজ করবে কেনো ? সেখানে তো জরুরী বিভাগের চিকিৎসক আছে, তারপরেও আমি বিষয়টি দেখছি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।