ভোলার আলীনগরে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ ॥ আহত-১০

পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভোলার আলীনগরে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আতদের মধ্যে কেউ কেউ প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন এবং অন্য একজন ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রার্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত বাড়ছে। এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে ভোলা সদর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাচিয়া গ্রামে। এখানে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। বৃহস্পতিবার সকালের দিকে মেম্বার প্রার্থী আবুল কালাম ফরাজী (তালা প্রতীক) কয়েকজন লোক নিয়ে ৪নং ওয়ার্ডের ডাক্তার বাড়ী এলাকায় তার নির্বাচনী প্রচারণায় বের হন। এ সময় প্রতিপক্ষ প্রার্থী শাজহান হাওলাদার (মোরগ প্রতীক) এর ছেলে আনোয়ারের সাথে আবুল কালাম ফরাজির লোকজনের বাক-বিতন্ডা হয়। এ সময় শাজাহান হাওলাদারের ছেলের নেতৃত্বে মেম্বার প্রার্থী আবুল কালাম ফরাজির লোকজনের উপর হামলা চালায়। এ সময় আবুল কালাম ফরাজির ছেলেকে দা দিয়ে কোপ দেয় আনোয়ার। তাৎক্ষণিক মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ইসমাইল হোসেন শান্ত। এ সময় তার চিৎকারে অন্যান্য লোকজন তাকে উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসলে তাদের উপরও শাজাহানের লোকজন লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায়। আকষ্মিক এ হামলায় দিশেহারা হয়ে পড়েন আবুল কালাম ফরাজির লোকজন। তাদের হামলায় আবুল কালাম ফরাজি, এমরান, রাকিব, রাশেদ, সাদ্দাম, রাবেয়া বেগম আহত হন। এদের মধ্যে সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে গেছেন। কিন্তু ইসমাইল হোসেন শান্ত’র মাথায় কোপ লাগায় সে গুরুত্বর আহত হয়ে ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ব্যাপারে মেম্বার প্রার্থী আবুল কালাম ফরাজির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সকালে নির্বাচনী প্রচারণায় নামি। এ সময় আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী শাজাহান হাওলাদারের ছেলের সাথে আমার লোকজনের তর্ক-বিতর্ক হয়। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে তারা পরিকল্পিত ভাবে আমার লোকজনের উপর দা, লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায়। দায়ের কোপে আমার ছেলে ইসমাইল হোসেন শান্ত’র মাথার উপরের অংশ কেটে গিয়ে গুরুত্বর জখম হয়। আমার উপর হামলা হয়েছে এমন খবর শুনে অন্যান্য লোকজন এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা চালায় তারা। এতে আমিসহ অন্তত ৬ থেকে ৭জন আহত হই।
তিনি আরো বলেন, আমি আমার লোকজনদেরকে শান্ত হয়ে থাকার পরামর্শ দিয়ে তাদের ফিরিয়ে দেই। এ ঘটনায় কোন মামলা করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, না; কোন মামলা করিনি। তবে প্রশাসনকে অবহিত করেছি। খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। আমি এ ধরনের হামলার ঘটনায় প্রশাসনের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি। পাশাপাশি আগামী নির্বাচন যাতে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ হয় তার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত মেম্বার প্রার্থী শাজাহান হাওলাদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী আবুল কালাম ফরাজী সকালে ৪নং ওয়ার্ডের ফরাজী কান্দি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা নামেন। এ সময় তার লোকজনের সাথে আমার লোকজনের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা আমার লোকজনের উপর হামলা চালায় এতে আমার ছেলে আনোয়ার, ইকবাল সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। আনোয়ার আর ইকবাল ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
আপনার ছেলে আনোয়ারের দায়ের কোপে প্রতিপক্ষ আবুল কালাম ফরাজির ছেলে শান্ত’র মাথা কেটে যায় এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। মারামারি সময় লাঠির আঘাতে তার মাথা ফেটে যায় বলে জানান তিনি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।