তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করণের দাবীতে ভোলায় মানববন্ধন

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শাক্তিশালী করণের দাবীতে ভোলায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোলার সিএসও, মাদার পার্লামেন্ট সদস্য, যুব গ্রুপ এবং সুশীল সমাজের সদস্যবৃন্দ এবং বাংলাদেশের প্রথম সারির বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুয়র (ডরপ) এর সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোলা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ডরপ ভোলার অ্যাডভোকেসি অফিসার তরুন কান্তি দাশ এর পরিচালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল সদস্যবৃন্দ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি ৬টি সংশোধনীর দাবি জানান। ৬টি দাবি হলো- (১) সকল প্রকার পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা (২) তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা (৩) বিক্রয় কেন্দ্রে তামাক দ্রব্যের প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা (৪) ই-সিগারেট/ভ্যাপ এর ব্যবহার, আমদানি, বাজারজাতকরণ বিক্রি নিষিদ্ধ করা (৫) তামাক পণ্যের সকল প্রকার খুচরা বিক্রয় বন্ধ করা (৬) সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধিসহ তামাকজাত দ্রব্য মোড়কীকরণে কঠোর নিয়ম আরোপ করা তথা প্লেইন প্যাকেজিং বাস্তবায়ন করা।


মানববন্ধনে উপস্থিত প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিএসও সভাপতি এবং ভোলা প্রবীণ সাংবাদিক মো: আবু তাহের। এ সময় তিনি বলেন, নতুন আইন করে কী হবে ? আইনের প্রয়োগ দরকার। কথাটা খুবই চমৎকার। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনি যে আইনের প্রয়োগ চাচ্ছেন তা আইনে আছে বলেই চাইতে পারছেন। সুতরাং আইন প্রয়োগের জন্য হলেও একটি শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন করা প্রয়োজন। তাই আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবি জানাই।
সিএসও সদস্য ও ভোলার বাণী’র সম্পাদক মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের অধিকাংশ ভোলাবাসী ধূমপান ও তামাক ব্যবহারের স্বাস্থ্য ক্ষতির বিষয়ে সচেতন। কিন্তু সব ধরনের পাবলিক পরিবহন ও পাবলিক প্লেসে ধূমপান নিষিদ্ধ না থাকার কারণে আমরা সাধারণ অধূমপায়ী জনগণ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হই। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে সকল পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধের দাবি জানাই।
পার্লামেন্টের সদস্য হালিমা খাতুন বলেন, “পরিবার থেকে হাজার সতর্কতা বজায় রাখা সত্ত্বেও সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রির কারণে আমাদের অনেক তরুণরা সহজে এটা ক্রয় করার সুযোগ পায়। তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আমরা বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধের আইন প্রণয়নের দাবি জানাই।
এ সময় সিএসও সদস্য ও দৈনিক বাংলার কণ্ঠের সম্পাদক মো: হাবিবুর রহমান, সিএসও’র সহ-সভাপতি প্রফেসার রুহুল আমীন জাহাঙ্গীর, সিএসও সদস্য ও দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক মো: শওকাত হোসেন, সিএসও সদস্য ও যুগান্তর প্রতিনিধি অমিতাভ অপুসহ শিক্ষক, সাংবাদিক, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, টোব্যাকো অ্যাটলাস ২০২০ সালের গবেষণা অনুযায়ী, ধূমপান ও তামাক পণ্য ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লক্ষ ৬১ হাজারেরও বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। এছাড়াও ধূমপান ও তামাক সৃষ্ট রোগে অসুস্থ হয় হাজার হাজার মানুষ। সুতরাং তামাকের এই স্বাস্থ্যক্ষতি থেকে জনগণকে রক্ষা করতে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।