লালমোহনে মুক্তিযোদ্ধার নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ২০ বছরেও এমপিওভূক্ত হয়নি

দীর্ঘ ২০ বছরেও এমপিওভুক্ত হয়নি ভোলার লালমোহনে প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধার নামে প্রতিষ্ঠিত একটি বিদ্যালয়। শহীদ মোতাহার উদ্দিন মেমোরিয়াল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয় দীর্ঘদিনেও এমপিওভুক্ত হয়নি। এর জন্য প্রতিষ্ঠানটির ১৩ জন শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন হতাশায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১০ বছর ধরে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করে আসছে। সুনামের সঙ্গে পুরো এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে বিদ্যালয়টি, কিন্তু রহস্যজনক কারণে এমপিওভুক্ত হয়নি। এতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ আর অসন্তোষ বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রামের কোমলমতী শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন। কিন্তু শিক্ষকেরা সব সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এতে তাঁরা পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০০১ সালের দিকে লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের কাশমির (বর্তমানে মোতাহারনগর) গ্রামে ৫০ শতাংশ জমির ওপর বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। ওই সময় স্থানীয় সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী নুরুজ্জামান হাওলাদার স্কুলটির জমি দান করেন।
তৎকালীন সময়ে সাবেক এমপি মরহুম মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার উদ্দিন মাস্টারের নামে স্কুলটির নামকরণ করা হয়। স্কুলটির বর্তমান নাম ‘শহীদ মোতাহার উদ্দিন মেমোরিয়াল নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়’। ২০১০ সালের পর থেকে গত ১০ বছর ধরে জেএসসিতে ছাত্রছাত্রীরা শতভাগ পাসের রেজাল্ট অর্জন করে। ২০১০ সালে স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর শাওনের প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি একতলা পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এমপিওভুক্ত হওয়ার জন্য দুই দফা আবেদন করেও সুফল পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আয়শা খাতুন ও মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমাদের সব শিক্ষক দক্ষতার সঙ্গে পাঠদান করে এলেও বিদ্যালয়টি গত ২০ বছর ধরে এমপিওভুক্ত না হওয়ায় আমরা কোনো বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। এতে আমাদের অনেক কষ্ট করে চলতে হচ্ছে।’ তারা সরকারের কাছে দ্রুত স্কুলটি এমপিওভুক্ত হওয়ার দাবি জানান।
বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধার নামে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি এলাকায় বেশ সুনামের সঙ্গে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়ে আসছে। কিন্তু তবু এটি এমপিওভুক্ত হয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা দুই দফা আবেদন করলেও এমপিওভুক্ত হয়নি। ফলে শিক্ষকেরা অনেকটা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।’
এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, এটি অনেক পুরোনো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটা এমপিওভুক্ত হওয়া প্রয়োজন। এতে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।