সর্বশেষঃ

মধ্যরাত : পর্ব-২৮

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন), 

(গত পর্বের পর) : ওরা দুপুরে মাছের ঝোল, ডালঘন্ট খেয়ে খুব সুখ্যাতি করল। উমা বলল কে রেধেছে, বোধহয় ডোরা দি। আমি বললাম তা ছাড়া আর কে রাধবে বল ? বেচারা এসেই সেদিন জ্বরে পড়েছিল। দুদিন জ্বরে ভুগে তবে উঠল। আমি ভিষণ ভয় পেয়েছিলাম বাবা, ভগবান বাঁচিয়েছেন। ডোরা মৃদু মৃদু হাঁসছিল, দু’গালে টোল খেল, সুশান্ত ওর দিকে বাংলা মুভির কথা বলল। রাতে খয়ে দেয়ে শুয়ে পড়লাম। আজি বিকেলে ভি,সি আর এ একটি হিন্দি মুভি দেখলাম এয়াসী জিন্দেগী। বেশি হিন্দি মুখি পাওয়া যায়। বাংলা ভাল মুভি খুব কম পাওয়া যায়। তবু সকলে বাংলা মুভির কথা বলল। রাতে খেয়ৈ দেয়ে শুয়ে পড়লাম।
শুশান্তকে আমার রুমেই গদি পেতে বিছানা করে দিয়েছি। ও আবার যেই হাত-পা ছড়িয়ে নাড়াচারা করে, আর ঘুমের ঘোরে ভীষণ চেঁচামেচি করে। আর অনেক বেলা পর্যন্ত ঘুমিয়ে থাকার অভ্যাস আছে। ছুটিতে এসেছে, যাক বেচারা একটু বিশ্রাম করুক। ডোরা উমা দু’জনেরই এর মধ্যে খুব ভাব হয়ে গেছে। আমিত খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। ডোরা খুব বুদ্ধিমতি, শিক্ষিতা, মানিয়ে নিয়েছে। সব সময়ে উমাদি উমাদি করছে। দিদি আপনার অসুবিধে হচ্ছেনা ত ? কাল প্রশান্ত বাবুকে বলে আপনার জন্য আর একটি বিছানা করে দেব। আজ রাতটা একটু কষ্ট করো।
ডোরা সকালে ঘুম থেকে উঠে ¯œান সেরে এসেছে। উমা বলল দিদি, আপনার কিছু করতে হবে না। ডোরা বলল, সেকি ? আপনি একাই সব করবেন ? আমি ডাইনিং টেবিল সাজাই। উমা গরম গরম লুচি, সুজির হালুয়া, একিট নিরামিষ টেবিলে রেখেছে। ঘন বুটের ডাল, ডিমসিদ্ধ, অনেক দিন হয় এত সুস্বাদু খাবার খাইনি। লুচি ও হলুয়ার গন্ধে মন প্রাণ ভরে গেল। সুশান্তকে আবার ডাকলাম এই তুইকি ঘুম থেকে উঠবি না ? আমরা সব খেয়ে নিলুম। এবার সুশান্ত একটু তাড়াতাড়িই উঠল। হাত মুখ ধুয়ে তাড়াতাড়ি খেতে বসল। খেতে খেতে বলল কে নাশতা তৈরী করেছে ? আমি বললাম তোর বউ উমা। সুশান্ত বলল আমি ভাবলাম বুঝি মিস প্রফেসার করছে। ডোরা বলল আপনার গিন্নি দেয়নি। আমি টেবিল সাজিয়েছি। আমরা সকলেই হো হো করে হেঁসে উঠলাম। ডোরা সকলকে চা করে দিল।
সুশান্ত চা খেয়ে খুব প্রসংশা করল। এত লেখা পড়া করে ভাল চা করতে শিখেছেন ত ? ডোরা বলল, মেয়েদের সব কিছুই শিখতে হয়। দুপুরে কি খাবে ? ডোরা সুশান্ত মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগল। সুশান্ত বলল খিচুরী, বেগুন ভাজা, আলুর দম, মাংস। আমি বললাম কে রান্না করবে ? সুশান্ত বলল উমা। সুশান্ত বলল মিস একটু বিশ্রামে থাকুক। দুপুরে খুব খাওয়া দাওয়া হল। আমরা একটি বাংলা মুভি দেখলাম। অতল জলের আহ্বান, রোমান্টিক সকলেই মন উচাটন হয়ে উঠল। ডোরার সাথে আমার কয়েক বার চোখের বিনিময় হল। দু’টি ডাগর চোখ ছল ছল করে আমাকে যেন কি বলতে চায়।

 (চলবে——-)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।