দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ভোলায় বিডিইআরএম’র মানববন্ধন

রংপুরের পীরগঞ্জে জেলে পল্লীতে অগ্নিসংযোগ এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দিরে হামলা ও ভাংচুর এবং দলিত ও হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ভোলায় মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে।

বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠি অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম) ভোলা জেলা শাখার আয়োজনে রবিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় ভোলা প্রেসক্লাবের সামনে উক্ত মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়।

সংগঠনটির জেলা কমিটির সভাপতি চন্দ্র মোহন এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলা সুজন এর সভাপতি মোবাশ্বের উল্যাহ চৌধুরী, আরটিভির জেলা প্রতিনিধি অমিতাভ রায় অপু, জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুল ইসলাম, জেলা বিডিইআরএম এর উপদেষ্টা মোঃ আলাউদ্দিন, সহ-সভাপতি সম্ভু লাল হেলা, সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার দে, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভানু লাল দে,  সংগঠনের সদর উপজেলা শাখার সভাপতি রনজিত চন্দ্র বেপারী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, শারদীয় দূর্গাপূজা চলাকালিন সময়ে কুমিল্লার নানুয়ার দীঘির পাড়ে দূর্গা প্রতিমার পাশে পরিকল্পিতভাবে রেখে দেওয়া একটি পবিত্র কোরআন শরীফকে নিয়ে সেখানে মন্দিরসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি ঘরভাংচুর ও হামলা করা হয়। এরপর গত ১৭ অক্টোবর রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক তরুনের ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে রংপুরের পীরগঞ্জের মাঝিপাড়া জেলে পল্লীর ৬০টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে ২৯টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। মর্মান্তিক এ ঘটনায় মুহুর্তেই ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয় ৬০ টি পরিবার। হামলা করা হয় ফেনী, নোয়াখালী, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এতে সারাদেশে ৭০ টি পূজামণ্ডপে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে এবং অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বক্তার আরও বলেন, আইন ও শালিস কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আট বছর নয় মাসে সারাদেশে দলিত ও হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর ৩ হাজার ৬৭৯টি হামলা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৫৯টি বাড়িঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনা এবং হিন্দুদের ৪৪২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। প্রতিমা, পূজমন্ডপ, মন্দিরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১ হাজার ৬৭৮টি। এসব হামলায় আহত হয়েছে ৮৬২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী এবং নিহত হয়েছেন ১১ জন। বাংলাদেশের মতো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশে বিশেষ এক গোষ্ঠীর উপর এধরণের হামলা ও নির্যাতনের ঘটনা দেশের ভাবমূর্তিকেই ক্ষুন্ন করছে না সেইসাথে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে দেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে।

মানববন্ধনে বক্তারা সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ সময় মন্দিরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দলিত ও হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা, নির্যাতন, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, এ ধরনের ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা জোরদার ও এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে অবিলম্বে আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে জোর দাবী জানান।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।