ভোলার চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারে মৃত্যুবরণ হলেই চওড়া দামে সমাধান করেন গ্রাম্য লর্ডরা

ভোলা সদরের বিভিন্ন ইউনিয়নে চরদখলসহ নানান সময়ে আধিপত্য বিস্তারে তাজাপ্রাণ ঝড়ে গেছে অনেক। তাজাপ্রাণ ঝড়ে গেলেও বেশিরভাগ ঘটনার চওড়া দামে অপরাধীদের রক্ষা করেন গ্রাম্য লর্ডরা। চরাঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন সময়ে যে হত্যার ঘটনা ঘটে এর বেশির ভাগই টাকা ও জমিতে সমাধান হয়ে যায় এবং যে পক্ষের লোক মৃত্যুবরণ করেন সে পক্ষ ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে জমিদখলে নিলেও পরবর্তীতে মৃত্যু ব্যক্তির স্বজনদের খোঁজ রাখেনা কেউ।
গত কয়েক বছর পূর্বে ভোলা সদরের ইলিশা তালুকদার চরে ছাদেক নামের এক যুবককে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুইগ্রুপের সংঘর্ষে মৃত্যুবরণ করেন, ঘটনার পর মামলা হয় কিন্তু পরবর্তীতে ছাদেকের পরিবার কে কিছু জমি দিলেও আর খবর নেইনি কেউ, তিন সন্তান নিয়ে আজ কষ্টে দিনযাপন করছেন ছাদেকের পরিবার।
এদিকে মামলার কি অবস্থা জানেন না ছাদেকের পরিবার।
ছাদেকের পর আবু কালাম মাল, ইউনুস পন্ডিত হত্যা, কালু হত্যাসহ একাদিক হত্যার ঘটনা ঘটেছে, একদিকে মামলা চলমান অন্যদিকে গ্রামের লর্ডরা লক্ষ লক্ষ টাকা বাণিজ্য করেন।
সাম্প্রতিক সময়ে ইলিশার গাজীপুর চরে নিহত কেন্টু বেপারীর জীবনের মূল্য নির্ধারণ করলেন গ্রাম্য লর্ডরা ৬ লক্ষ টাকা এবং দশ কানি জমি। তাজা একটি প্রাণ কে হত্যা করে মাটি চাপা দিয়ে রেখে প্রতিপক্ষ কে ঘায়েল করার চেষ্টা করলে পুলিশের জালে আটক হয়ে নাটকের নায়করা এখন কারাগারে এবং কেন্টু ব্যাপারীর ছেলে সালাউদ্দিন বাদী হয়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
নিহত কেন্টু বেপারীর মৃত্যু ইলিশার সকলের হ্নদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং নাটকের অভিনেতাদের সব্বোর্চ শাস্তির দাবীতে ফুঁসে উঠেছে গ্রামবাসী কিন্তু কেন্টু ব্যাপারীর কবরের বাঁশ না শুকাতেই পশ্চিম ইলিশা, পূর্ব ইলিশা ও রাজাপুরের কিছু লর্ড টাকার বিনিময়ে সমাধান করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং মূল্য ধার্য করেছেন ৬ লক্ষ টাকা।
নিহত কেন্টু ব্যাপারীর স্ত্রী শাহানুর বেগম কান্না ভেঙ্গে পড়েন স্বামীর হত্যার ঘটনার বননা দিতে গিয়ে, তিনি বলেন আমরা গরীব মানুষ মামলা চালাতে পারবো না, তাই মঞ্জু মিঝি সমাধান করে দিয়েছে।
টাকা পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন ২ লক্ষ টাকা দিয়েছে আর বাকিটা এখনো দেইনি।
আপনার স্বামী হত্যাকারীদের বিচার চান? এমন প্রশ্নের জবাবে দীর্ঘনিশ্বাস পেলে শাহানুর বলেন, কার কাছে বিচার চাইবো? আমরা গরীব মানুষ।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকতা ইলিশা ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, কেন্টু বেপারী হত্যা মামলার আসামীরা কারাগারে রয়েছে আমি তদন্তসাপেক্ষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিবো, কোন তদবির সুপারিশে কাজ হবে না বলেও জানান তিনি।
এদিকে টাকায় যদি হত্যার আসামীরা মুক্ত হয়ে যায় তাহলে সমাজে অপরাধ করতে অপরাধীদের বুক কাঁপবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সচেতন মহল।
অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত না হলে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে এবং গ্রাম্য লর্ডরা টাকার বিনিময়ে এই অপরাধীদের শেল্টার দিচ্ছেন বলে মনে করেন সচেতন মহল।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।