২০২৪-২৫ বাজেটে সব ধরনের তামাকপণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে বিড়ি শ্রমিকদের মানববন্ধন
মধ্যরাত : পর্ব-১৩
ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন),
(গত পর্বের পর) : আমি বললাম, সুশান্ত তোর ডোরার কথা মনে পড়ে ? সুশান্ত বলল, খু-উ-ব। ডোরা এখন ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটিতে আছে। সুশান্ত বলল থাক না। সুশান্ত বলল, ওকে দিয়ে আর কি হবে ? এই ক্ষনিকের ভিতর উমা এসে আমার পাশের চেয়ারে বসল। আমি বললাম জানিস সুশান্ত ডোরা আকাশের কত রং নামে একখানা উপন্যাস লিখেছে এবং খুব নাম করেছে। সুশান্ত বলল কে বলেছে, আমি বললাম-ওর সঙ্গের প্রফেসাররা বলেছে। যদিও ডোরার সাথে আমার অনেক আলাপ হয়েছে। কিন্তু ডোরা আমাকে ওর উপন্যাসের কথা কিছুই বলেনি। বলতে বোধ হয় ভুলে গেছে।
উমা বলল, প্রশান্ত বাবু দুপুরে কি খাবেন ? ভাত না লুচি। মাছের ঝোল ভাত। উমা উঠে চলে গেল। বেধ হয় পাকের আয়োজন করতে। সুশান্ত ইউনিভার্সিটিতে চলে গেল। আমি শুয়ে শুয়ে নিউজ পেপারটা দেখছিলাম। নিরব, নিঝুম ঘর-বাড়ী। কোন শিশুর কল-কাকলী মুখরিত মিঠে সোর-গোল নেই। ফ্লাওয়ার ভাজএ গোলাপের মিষ্টি সুবাস আমার নাকে এসে লাগছে। আমি নিউজ পেপারটা পড়তে পড়েত একটু ঝিমিয়ে পড়ছিলাম। হঠাৎ এসে উমা বলল, চা খাবেন ? একি ঘুমুচ্ছেন ? একটা গল্প বলুননাা ? আমি চমকে গিয়ে বললাম, কি গল্প বলব ? বরং আপনি আপনার দেশের কথা বলুল।
উমা বলল, কি গল্প বলল, অনেক দিন-ত দেশে যাইনি। আর যাবইবা কার কাছে, সকলেই ইন্ডিয়ায় চলে গেছে। বাবা মারা যাওয়ার পর মা বিধবা হয়ে কয়েক বছর বেঁচে ছিলেন। পরে কোলকাতায় গিয়ে মা হার্টফেল করেন। শ্বশুর মশায় আমায় খুব ভালবাসতেন। দেবররাও খুব ভক্তি শ্রদ্ধা করত। দুই দেবরের চার ছেলে-মেয়ে। ওরা বাংলাদেশে পাবনায় আছে। দুই দেবরের ছেলে মেয়েরাও খুব উচ্চশিক্ষিত। ছোট দেবরের দুই ছেলে লন্ডনে। একজন ইঞ্জিনিয়ার আর একজন চ্যাটার্ডএকাউনটেন্ট। ওরাও বিয়ে করেছে।
আমার বড় দাদা কলকাতায় আছেন। মাঝে মাঝে চিঠি লিখেন। ছোড়-দা একবার টরেন্টোতে আমাকে দেখতে এসেছিলেন। আমার ছোড়-দা যা দেখতে সুন্দর। কাঁচা হলুদের মত গায়ের রং। যা সুন্দর, গাইতে পারে। মাস খানেক আমার এখানে ছিল। বছর চার হয় দাদাদের দেখিনা। আমি কতদিন পাবনায় যাইনি। এই দেশে বরফ গলার রাজ্যে দিন অতিবাহিত করছিত, দিন আসে-রাত যায়, রাত আসে-দিন হয়। গরম আসলে দেশটা যেন মুখর হয়। গরমে হাসে দেশের নদী-নালাগুলি। বসন্তে পেখম তুলে নাচে। কত রং-বেরংয়ের ফুল সঞ্জিবীত হয় গাছে গাছে। নতুন পাতা, যে গাছগুলি বরফে ঢেকে গিয়েছিল, সেগুলি বসন্তে মুখ তুলে নব বধূর সরম রাগে আবেশে আবেগে যৌবনের ভারে থরথর করে কাঁপে। এখানে ওখানে যাই মনটা আমার চাঙ্গা হয়ে উঠে। বাবা-মার কথা মনে পড়ে। ভাই-বোনের কথা মনে পড়ে। উমা বলল, আপনার কথা বলুন। শুনলাম বিয়ে করেন নি ?
হাসলাম। বললাম বেশ আছি। খাই-দাই, ঘুরে বেড়াই। আমি কারুর জন চিন্তা করি না। কেউ আমার জন্যও চিন্তা করে না। উমা বলল, কোন ভাগ্যবতিকে নাকি খুব ভালবাসতেন ? মেয়েটি জীবনে খুব পূণ্য করেছিল বুঝি ? আমি বললাম, জানি না।
(চলবে———–)