ভোলায় দুই বোনকে এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় আসামী অপু’র আমৃত্যু কারাদন্ড

ভোলায় দুই বোনের ওপর এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মহব্বত হাওলাদার অপু নামে এক আসামিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৪(১) ধারায় যাবজ্জীবন (আমৃত্যু) কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার বিকালে ভোলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নূরুল আলম মোহাম্মদ নিপু এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামি মহব্বত হাওলাদার অপু ভোলা সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বালিয়া গ্রামের মো: মানিক হাওলাদরের ছেলে।


মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে জানা যায়, আসামি মহব্বত হাওলাদার অপু ২০১৮ সালের ১৪ মে রাত ২টার দিকে মামলার বাদী জান্নাতুল ফেরদৌসের মেয়ে তানজিম আক্তার মালা ও মারজিয়াকে এসিড নিক্ষেপ করে। এতে তানজিমের চোখ, মুখ, গলা ও বুকসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ঝলসে যায়। পরে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে এবং তার বোন মারজিয়ার গলার বাম পাশ, কাঁধ, ও পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে দগ্ধ হয়েছে। সে এখনও চিকিৎসাধীন আছে।


মামলার বিবরণী থেকে আরও জানা যায়, আসামী মহব্বত হাওলাদার অপু-কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড (আমৃত্যু) এবং ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে রাষ্ট্রপক্ষ তার বিরুদ্ধে একই আইনের ৪(২)(খ) ধারায় অপরাধ দোষী বাস্যস্ত করত সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। অর্থদন্ডের টাকা অত্র আইনের ১৫ ধারামতে ভিকটিমের পরিবার প্রাপ্ত হবে। আসামীকে প্রদত্ত সাজা একত্রে চলবে। অর্থদন্ডের টাকা অত্র আইনের ১৬ ধারামতে আদায় করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রদানের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনালকে অবহিত করার জন্য জেলা প্রশাসক-কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মৃত তানজিম আক্তার মালা ভোলা সদর উপজেলার আবদুল মন্নান মিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে এসএসসি পাস করেছে। আসামি মহব্বত হাওলাদার অপুর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পরে তানজিম অন্যত্র প্রেম করছে এমন কারণ ধরে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। এক পর্যায়ে আসামি ভিকটিমের বাড়িতে প্রবেশ করে রাতের আঁধারে এসিড ছুঁড়ে। এতে তানজিম ও তার বোন মালা এসিডদগ্ধ হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমদের মা বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত এ রায় দেয়।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।