চরফ্যাশনে মাদকের টাকা দিতে অস্বীকার করায় স্ত্রীকে নির্যাতন

বাবার বাড়ি থেকে মাদকের টাকা এনে দিতে অস্বকীকার করায় স্ত্রী ফেরদাউস (৩০) কে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে মাদকাসক্ত স্বামী বেল্লাল সিকদার (৪০)। গত ২৫ আগস্ট রাতে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানার চরকলমী ইউনিয়নের নাংলাপাতা গ্রামের স্বামী বেল্লাল সিকদারের বসত ঘরে এই ঘটনা ঘটে। আহত গৃহবধূ ফেরদাউস চরফ্যাশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে বলে গৃহবধূ ফেরদাউস জানান।
শনিবার সন্ধ্যায় চরফ্যাশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফেরদাউস জানান, ১৯ বছর আগে একই গ্রামের বেল্লাল সিকারের সাথে তার বিয়ে হয়। দুই ছেলেসহ তিন সন্তানের মা তিনি। ৫ বছর আগে স্বামী বেল্লাল সিকদার ২য় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী কুলসুম বেগমকে আলাদা ভাড়া বাসায় রাখেন। দীর্ঘদিন ধরে পেশায় জেলে স্বামী বেল্লাল গাঁজা-ইয়াবার মতো মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। দিনের পর দিন মাদকাসক্ত সঙ্গী-সাথী নিয়ে প্রথম স্ত্রী ফেরদাউস বেগমের বসতঘরেই মাদকের আড্ডা বসান। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই আছে। নিত্য অশান্তির মধ্যে বেপরোয়া স্বামী বেল্লাল সিকদার মাদক কেনার জন্য বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে ফেরদাউসকে মানসিক ভাবে অত্যাচার নির্যাতন শুরু করেন। বিভিন্ন সময় যৌতুক হিসেবে স্বামী বেল্লাল সিকদারের চাওয়া অনুযায়ী ফেরদাউস বেগম বাবার বাড়ি থেকে আড়াই লাখ টাকা এনে দিয়েছিলেন। এখন আরো দেড় লাখ টাকা এনে দিতে স্ত্রী ফেরদাউস বেগমকে নানানভাবে ফুসলিয়ে ব্যর্থ হয়ে মারধর শুরু করেন। স্বামীর নতুন করে দাবী করা দেড় লাখ টাকার যৌতুক এনে দিতে অস্বীকার করায় ২৫ আগস্ট রাতে স্বামী বেল্লাল সিকদার স্ত্রী ফেরদাউসকে মারধর করে গুরুতর জখম করেন। ওই রাতে আহত ফেরদাউসকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফেরদাউস বেগম গৃহবধূ এই আরোও জানান, ব্যবসা বাড়ানোর অজুহাতে দফায় দফায় বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দিয়েও কোন লাভ হয়নি। সব টাকা গাঁজা আর ইয়াবা খেয়ে শেষ করেছে। এখন আর স্বামীর হাতে টাকা তুলে দিতে মন সায় দেয়না। আর বাবার বাড়ি থেকে এনে মাদকের টাকা দিতে পারবো না বলায় মারধর করছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় মামলা করতে পারিনি। হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করবেন বলে জানান তিনি।
ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত বেল্লাল সিকদার আত্মগোপনে থাকায় তার বক্তব্য জানাযায়নি। তবে তার বাবা আলী একাব্বর জানান, তার ছেলে তার অবাধ্য। নেশাগ্রস্ত হয়ে পুত্রবধূকে মারধর করেন। এবং প্রতিবাদ করলে তাকেও একাধিকার মারধর করেছেন ওই পাষন্ড ছেলে।
শশীভূষণ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।

You cannot copy content of this page