শুনেছি, দেখি কি করা যায় : বিভাগীয় কমিশনার
ভোলায় কাটছে বালু, ভাঙ্গছে জনপদ
ভোলার তেঁতুলিয়া নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধই হচ্ছে না। যেন বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। অব্যাহত বালু উত্তোলনের কারণে শান্ত তেঁতুলিয়া নদী ভেঙ্গে এখন অশান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে, নিঃশ্ব হচ্ছে শত শত অসহায় পরিবার। নির্বাক অসহায়ের মতো মুখ বুজে আছে সাধারণ মানুষ। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকায় প্রশাসনও নিরব ভূমিকা পালন করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, তেঁতুলিয়া নদীর বালুর উপর ভিত্তি করে সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদি ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় গড়ে উঠেছে নতুন নতুন একাধিক বালু মহাল। সরকারের কোন অনুমতি ছাড়াই বছরের পর বছর এ অবৈধ বালু উত্তোলনের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ওই মহলটি। এখানে সব লোকাল বালুই আসে তেঁতুলিয়া নদী থেকে। একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এ ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে ক্ষমতার দাপটে। ওই সিন্ডিকেট রাস্তার বালু প্রতি ফুটে নিচ্ছে ত্রিশ পয়সা ও বালু মহলের বালুর প্রতি ফুটে নিচ্ছে পঞ্চাশ পয়সা। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয়দের কাছ থেকে। কোনভাবেই থামছেনা এ বালু উত্তোলনের মহোৎসব।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, হারুন গাজী, ফারুক মাঝি, নুরনবী, বজলু হাওলাদার ও জামাল মেম্বার, তাদের ড্রেজার দিয়ে দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের বাঘমারা, শান্তিরহাট এলাকায় বালু উত্তোলন করে আসছে। দিন রাত ২৪ ঘন্টাই চলে বালু উত্তোলনের কাজ। প্রতিদিন বড় বড় জাহাজে করে বালু পাড়ে এনে খালাশ করা হচ্ছে। আর এ বালু চলে যায় বিভিন্ন বালু মহলে ও ভোলার ৪ লেন রাস্তার কাজে।
বালু কাটার ফলে শান্ত তেঁতুলিয়া নদী এখন অশান্ত হয়ে উঠেছে। তেঁতুলিয়া নদীতে দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন আতঙ্ক। প্রতিদিন সর্বহারা হচ্ছে এ জনপদের মানুষগুলো। ভাঙ্গনের তীব্রতা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অব্যাহত ভাঙ্গন রোধে সর্বহারা মানুষগুলো ভোলা-১ আসনের এমপি জননেতা তোফায়েল আহমেদ এবং প্রধানমন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ভোলার জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিক-লাহী চৌধুরী শনিবার দুপুরে ভোলার বাণীকে যানান, খবর পেয়ে আমাদের প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়েছে। এখন আর তেঁতুলিয়া নদীতে বালু উত্তোলন করার কথা নয়। তারপরেও কোথাও বালু উত্তোলনের খবর পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। অন্যদিকে, স্থানীয়রা বলছেন, প্রশাসনের অভিযানের খবর পেয়ে বালু খেকোরা দিনের আলোতে তেঁতুলিয়া নদীতে বালু উত্তোলনের বদলে এখন রাতের আঁধারে বালু কাটছে।
বিষয়টি বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ সাইফুল হাসান বাদল’কে বিষয়টি সম্পর্কে জানালে তিনি বলেন, শুনেছি, দেখি কি করা যায়।