বরিশালে ইউএনও ও পুলিশের পৃথক মামলা ॥ আ’লীগের ১৩ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবনে হামলা ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৩ জন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সংঘর্ষে আহত ৩ জনকে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে আসে গোয়েন্দা পুলিশ। এর আগে বুধবার রাতে ইউএনও এর বাসায় হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবুকে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ দিকে বুধবার রাতের ঘটনায় কয়েকশত আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীকে আসামি করে সদর ইউএনও এবং পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের ১৩ নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তার ও দুটি মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সদর উপজেলার রায়পাশা-কড়াপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমেদ শাহরিয়ার বাবু, আওয়ামী লীগ কর্মী হারুন অর রশিদ এবং তানভীর। এ ছাড়া নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অলিউল্লাহ অলিসহ আরও ৭ জনসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
বুধবার রাতে হামলার সময় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবুকে জাপটে ধরে আটক করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান।
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে বাসভবনে হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান বাদী হয়ে ৩০-৪০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা কয়েক শ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। এ ছাড়া সরকারি কাজে বাঁধা, জনগণকে লাঞ্ছিত ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করে। আটক ১৩ জনকে উভয় মামলাতে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুধবার রাত ১০টায় সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের পক্ষে ১৫ আগস্ট উপলক্ষে লাগানো ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করতে যান সিটি করপোরেশনের কর্মী পরিচয়ে একদল যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতা। এ সময় অনুমতি ছাড়া সরকারি দপ্তরে প্রবেশে বাঁধা দেন কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা। এক পর্যায়ে ইউএনও মুনিবুর রহমান সেখানে উপস্থিত হলে তাঁর সঙ্গে তর্কে জড়ান যুবলীগ ছাত্রলীগ কর্মীরা। একপর্যায়ে তাঁরা ইউএনও এর বাসভবনে ঢুকে হামলার চেষ্টা চালালে আনসার সদস্যরা গুলি করেন। এ নিয়ে রাত ২টা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।