বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভোলার বেতুয়া-মনপুরাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ
ভোলায় যৌতুকের দাবীতে শিশুকে আটক রেখে মা’কে নির্যাতনের অভিযোগ
ভোলায় যৌতুকের জন্য দু’বছরের শিশুকে আটক করে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতা মা ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়, আর শিশুটি রয়েছে নির্যাতনকারি পরিবারটির কাছে। ঘটনাটি গত ১৬ আগষ্ট বিকাল ৩ টার সময় ভোলা পৌরসভার যুগীরঘোল সংলগ্ন পৌর কাঠালির ৮ নং ওয়ার্ডের বাবু সর্দার বাড়ি-তে ঘটেছে। শিশুটির নাম সায়েম আব্দুল্লাহ (২) ও নির্যাতিতা মায়ের নাম মোসাম্মদ কলি আক্তার (২৫)।
সুত্র থেকে জানা যায়, ভোলা শহরের যুগীরঘোল সংলগ্ন পৌর কাঠালির ৮ নং ওয়ার্ডের বাবু সর্দার বাড়ির ও জিয়া মার্কেটের দর্জী মোঃ মামুনের বড় ছেলে মোঃ আল-আমিন টিপুর সাথে পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের নাগাসী বাড়ির জামাই হারুনের বড় মেয়ে কলি আক্তারের সাথে পারিবারিক ভাবে গত আট বছর আগে ৩ লক্ষ টাকা দেন মহরে বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহর কয়েক মাস পড় থেকেই স্বামী টিপু, শশুর মামুন দর্জী ও শাশুরি নিরুতাজ বেগম মিলে যৌতুকের দাবীতে প্রায়ই কলিকে মারধর করতো। সামর্থ অনুযায়ী পিতা তার মেয়ের সুখের জন্য কয়েক লাখ টাকা এই পরিবারটিকে দিয়েছে। গত একবছর পর্যন্ত এই পরিবারটি নতুন করে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে। যদি টাকা না দেয়া হয় তাহলে কলিকে প্রায়ই প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি ধামকি দিত। ঘটনার দিন গৃহবধু কলি আক্তার তার দুধের শিশু সায়েমকে কোলে নিয়ে সেলাই মেশিনে কাজ করছিল। এই অবস্থায় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে শাশুরি নিরুতাজ ও স্বামি টিপু কলির কোল থেকে শিশু টিকে মাটিতে ফেলে কলিকে এলোপাথারিভাবে মারধর করে ঘর থেকে বেড় করে দেয়। কলি তার শিশুটিকে নিতে চাইলে শিশু সায়েমকে টিপু গলাটিপে হত্যা করতে চাইলে কলি তাদের পায়ে পড়ে সন্তানের জীবন ভিক্ষা চায়। এই অবস্থায় নিরুতাজ কলিকে লাথি দিয়ে সরিয়ে বাবার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে আসতে বলে এবং এও বলে তাহলেই তোর সন্তান ফিরে পাবি। ঘটনাটি কলির বাবা জানতে পেরে মেয়েকে দ্রুত ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। হাসপাতালের বেডে কলি সন্তান সন্তান করে বার বার মুর্ছা যায়। আর অন্যদিকে শিশু মায়ের স্নেহ ভালবাসার জন্য কাতরাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় কলির বাবার সাথে। তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মায়ের কোল থেকে শিশুকে নিয়ে মা ও শিশুকে নির্যাতন এটাই হয়তো প্রথম। আমি টাকা দিতে রাজি, কিন্তু আমার নাতিটাকে আমার মেয়ের কোলে ফিরিয়ে দিন। এই প্রতিবেদক গৃহবধূ কলি আক্তারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার সিয়ামকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিন, আমি ওকে নিয়েই বাঁচতে চাই। এই রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত ভিকটিমের পরিবার নারী ও শিশু আইনে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অভিযুক্ত আল-আমিন টিপুর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তিনি ঘটনাটি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, এটা আমাদের পারিবারিক বিষয়। আমি আমার সন্তান বা স্ত্রী কে মারিনি আর আমার পরিবার এর সাথে জড়িত নয়। ও এমনি এমনি হাসপাতালে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলার ষড়যন্ত্র করছে। ও যদি মামলা দেয় আমি ওকে তালাক দিব বলে হুমকি দেন। তাছাড়া যৌতুকের বিষয়টি নেহাত দুষ্টুমি বলে মন্তব্য করেন।