বৈরী আবহাওয়ার কারণে ভোলার বেতুয়া-মনপুরাসহ উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান চলাচল বন্ধ
লিসবনে জাতির পিতার ৪৬ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উদযাপন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৪৬ তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২১ উদযাপন করেন বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবন। দিনের শুরুতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বের কার্যক্রম সূচনা হয় এবং দ্বিতীয় পর্বে বঙ্গবন্ধুর উপরে আলোকচিত্রের শুভ উদ্ভোধন করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব তারিক আহসান। পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাষ্ট্রদূত, পর্তুগাল আওয়ামী লীগ, পর্তুগাল যুবলীগ, পর্তুগাল ছাত্রলীগ ও পর্তুগাল বাংলা প্রেসক্লাব।
জাতীয় শোক দিবসের মর্মের সাথে সংগতি রেখে দূতাবাস প্রাঙ্গণে উপযুক্ত ব্যানার ও পোস্টার লাগানো হয়, অংশ গ্রহণকারীগণ সাদা-কালো পোশাক পরিধান করে অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং কালো ব্যাজ ধারণ করেন।
বিকেলে, দূতাবাস চত্বরে রাষ্ট্রদূত আমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্রাবস্থা থেকে শুরু করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পর্যন্ত সময়ে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের যুগান্তকারী ঘটনাবলীর ঊপর “আলোকচিত্রে সংগ্রামী বঙ্গবন্ধু” শীর্ষক এক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ।শিরোনাম সম্বলিত এবং কালানুক্রমিকভাবে সাজানো আলোকচিত্র সমূহ দর্শনার্থীরা আগ্রহের সাথে পরিদর্শন করেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সন্ধ্যায় এক স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। এতে দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ, রাজনৈতিক দল, সংবাদ মাধ্যম, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্রবৃন্দ সহ সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশীগণ অংশগ্রহণ করেন। এ পর্বের শুরুতে রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ এবং বাংলাদেশী বিভিন্ন সংগঠণের নেতা ও কর্মীগণ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন। এর পর জাতির জনক ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। অতঃপর জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচকগণ জাতির পিতার অতুলনীয় অবদান ও তাঁর জীবনের উল্লেখযোগ্য দিকগুলো তুলে ধরেন এবং ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর বর্বর হত্যাকান্ড স্মরণ করে এর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত জনাব তারিক আহসান তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই ১৫ আগস্ট ১৯৭৫-এর অভিশপ্ত রাতে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির নীল নক্সায় শাহাদাৎ বরণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যগণসহ সকল শহিদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রাণনাশের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীরা শুধু ব্যক্তি মুজিবুর রহমান-কে হত্যা করেনি, তারা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিশ্চিহ্ন করতে। কিন্তু ঘাতকেরা বাঙ্গালির মন থেকে যেমন বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবিকে মুছে ফেলতে পারেনি; তেমনই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার চিরন্তন শিখাকেও নিভিয়ে দিতে পারেনি। তবে, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপর বারংবার আক্রমণের কথা উল্লেখ ক’রে তিনি সতর্ক করেন যে, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র কখনো থেমে থাকেনি। প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের এই হুমকী মোকাবেলা ক’রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রূপান্তর করার কাজে সবাইকে সংকল্পবদ্ধ হবার জন্য আহবান জানান।
আলোচনা পর্ব শেষে, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্র/সরকার প্রধান হিসেবে ”বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব” এবং ”বঙ্গবন্ধুর শাহাদৎ” বিষয়ের উপর নির্মিত দু’টি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। এর পর, বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ ক’রে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পর্ব নিবেদন করা হয়। এতে, জাতির পিতার শাহাদাৎ বরণের উপর রচিত কবিতা আবৃত্তি পরিবেশন করা হয় এবং “যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই” শীর্ষক গানের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। সবশেষে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।