বোরহানউদ্দিনে স্কুলের মাঠে ব্লেড ও কাঁচ ভাঙা দিয়ে খেলাধুলায় বাঁধা !

স্কুলের মাঠে ব্লেড ও কাঁচ ভাঙা দিয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় শিশু-কিশোরদের খেলাধুলায় বাঁধার সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে সোহেল হাওলার নামে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। স্কুলের ছাত্র ও এলাকার শিশু-কিশোররা স্কুল মাঠে খেলাধুলা করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতার ভাই সোহেল হাওলাদার ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৮ জুলাই স্কুলমাঠে ব্লেড এবং কাঁচ ভাঙা দিয়ে শিশু-কিশোরদের খেলাধূলায় বাঁধা সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডেও ফুলকাচিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় লোকজন ও স্কুলের ছাত্ররা মিলে মাঠে বিছানো সেই ব্লেড ও কাঁচ ভাঙা তুলে ফেলে। কিন্তু প্রভাবশালী সোহেল হাওলাদার মাঠের কাঁচ ভাঙা উঠানো দেখে পরদিন ২৯ জুলাই সকালে তিনি ফের বাজার থেকে ব্লেড এনে সম্পূর্ণ মাঠে ছিটিয়ে দেন।
এতে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করে। স্কুলের ছাত্ররা বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার ও স্কুলের সভাপতিকে জানানো হলে তারা বিষয়টি আমলে না নেয়ায় তারা বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তাকে জানান। ইউএনও পুলিশ নিয়ে গত ২ আগষ্ট ও ৩ আগষ্ট সেই স্কুল মাঠে গিয়ে ঘটনা সরেজমিনে পরিদর্শনে যান এবং স্কুল মাঠে ব্লেড ও কাঁচ ভাঙা দেখতে পেয়ে সেগুলো অপসারণের ব্যবস্থা করেন। ওই সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রব কাজীও উপস্থিত ছিলেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কাচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রব কাজী বুধবার সকালে বলেন, সোহেল হাওলাদারের বাড়ির সামনে স্কুল হওয়ায় সেই স্কুল মাঠে এলাকার পোলাপান (ছোট ছোট ছেলে) খেলাধুলা করায় সোহেল হাওলাদারের সমস্যা হয়। তাই সে স্কুল মাঠে ব্লেড ও কাঁচ ভাঙা বিছিয়ে দিয়েছে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ সাইফুর রহমান গত সোমবার ও মঙ্গলবার দুই দিন ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি আরও বলেন, সোহেল এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন। বিষয়টি এখন মিমাংসা হয়ে গেছে বলেও জানান ইউপি চেয়ারম্যান।
এ ব্যাপারে বোরহাউদ্দিন উপজেলা নির্বাহি অফিসার মোঃ সাইফুর রহমানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সকালে বলেন, স্থানীয় সোহেল হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি ফুল কাচিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের স্কুলমাঠে ব্লেড ও কাঁচ ভাঙা ফেলে রেখেছে এমন খবর পেয়ে আমি দুই দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে এর সত্যতা পেয়েছি। যদিও সোহেল হাওলাদার স্কুলমাঠে ব্লেড ও কাঁচ ভাঙা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। তবে, স্কুলের শিক্ষকরা বলেছেন তারা স্কুলমাঠটি ঠিকটাক করে দিবেন।
স্কুলমাঠে ব্লেড ও কাঁচ ভাঙা বিছিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে কাচিয়া ইউনিয়নের ব্যবসায়ী, লেখক ও সাংবাদিক গাজী তাহের লিটন বলেন, করোনার এ সংকটময় মুহূর্তে স্কুলমাঠে কাঁচ ভাঙা ও ব্লেড দিয়ে শিশুদের খেলাধুলায় বাঁধা দেওয়া এবং স্থানীয় প্রভাবশালীর পেশিশক্তি দেখানো খুবই খারাপ একটি কাজ করেছে। তিনি এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।