সর্বশেষঃ

লালমোহন গজারিয়া খালগোড়ার মূর্তিমান আতঙ্ক মোস্তফা বলি ও তার বাহিনী

ভোলার লালমোহনের পশ্চিম চর উমের ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড গজারিয়া খাল গোড়ার সরকারী সুভধা আদর্শ গ্রামের অসহায় নারী পুরুষদের মূর্তিমান এক আতঙ্কের নাম মোস্তফা বলি। আবাসন প্রকল্পের সকল বাসিন্ধারা মোস্তফা বলি ও তার ছেলে মনির বলির কাছে জিম্মি হয়ে আছে। স্থানীয় বিচার শালিস কোন কিছুই মানছে তারা। কথায় কথায় তাদের বাহিনী রামদা বগিদা নিয়ে ছুটে আসে। গত বুধবার স্থানীয় খালগোড়া বাজারে শালিসে বিচার শেষ হওয়ার পর পরই প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষের ৯জন কে কুপিয়ে জখম করে। কারও হাত, কারও পা, কারও মাথায় কুপিয়ে জখম করে মোস্তাফা বলির বাহিনীর সদস্যরা। মোস্তফা বলি এতই ক্ষমতাবান যে, তার ক্ষমতার কারনে আহতরা ভয়ে লালমোহন হাসপাতালে এসে চিকিৎসা পর্যন্ত নিতে পারছে না।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সে আবাসন প্রকল্পে নতুন ঘর দেয়ার নাম করে প্রত্যেকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যাদেরকে আবাসিক প্রকল্পের ঘর দেয়া হয়েছে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছে। যারা কম টাকা দিয়েছে তাদেরকে বকেয়া টাকার জন্য বেধম মারপিট করা হয়েছে। আবাসন প্রকল্পের বাসিন্ধা আবুল কালাম বলেন আমাদের পরিবারে ২ টি ঘর দিবে বলে ১৫ হাজার টাকা নিয়েছে। ১টি ঘর দিয়েছে অন্যটির জন্য আরও ১৫ হাজার টাকা দিতে না পারায় ঘর দেয়নি। নুরনবী বলেন আমি মোস্তফা বলির ছেলে মনিরের কাছে ১৫ হাজার টাকা দিয়েছি একটি ঘরের জন্য। আমাকে আজও ঘর দেয়নি এবং আমার টাকাও ফেরত দেয়নি। আবদুল মালেক মাঝি বলেন আমি ১০ হাজার টাকার দিয়েছি মোস্তফা বলিকে, বাকী ৫ হাজার টাকা দিতে না পারায় আমাকে মারপিটসহ রামদা দিয়ে কোপ দেয় মনির বলি। সকিনা বিবি জানান সরকারী ঘর পাইছি এই জন্য ১৫ হাজার টাকা চেয়েছে মোস্তফা বলি, আমি ১০ হাজার টাকা দিয়েছি বাকী ৫ হাজার টাকার জন্য আমাকে কুপিয়েছে তার ছেলে মনির বলি। সে এখনও টাকা চাচ্ছে।
আবাসন প্রকল্পের ঘের/পুকুরটি সদস্যরা ভোগ দখল করার কথা। প্রতি বছর ঘেরে মাছ ছাড়ার কথা বলে সকলের কাছে থেকে ১ হাজার করে টাকা নেন। কিন্তু মোস্তফা বলি একাই পুরো ঘের দখল করে খাচ্ছে। কাউকে মাছ ধরতে দিচ্ছেনা। সে গত শুকনো মৌসুমের সময় প্রায় ৯/১০ লক্ষ টাকার মাছ বিক্রি করে পুরো টাকা নিজে একাই ভোগ করেছেন। আবাসনের কাউকে একটি টাকা ও মাছ দেয়নি মোস্তফা বলি। সব টাকা নিজে একা ভোগ করেছে।
আদর্শগ্রামের আলমগীর বলেন মোস্তফা বলির কাছে এই এলাকার বিশেষ করে আবাসনের সকলে জিম্মি হয়ে আছে। আমি আমার ধান তাদের কলে না নিয়ে অন্য কলে নেয়ার কারনে আমাকে বেড়ধক মারধর করে মোস্তফা বলির ছেলে মনির বলি।
স্থানীয় মোঃ জসিম, মনির জানায়, আমরা মাছ বাজারে মাছ বিক্রি করি। আগে খাজনা দিতাম শতকরা ৪ টাকা করে। এখন মোস্তফা বলি খাজনা উঠায় তাকে এখন শতকরা ১০ টাকা করে দিতে হয়। বাজারের সকলে মিলে শালিস করে সিদ্ধান্ত দিয়েছে শতকরা ৫ টাকা করে খাজনা দিতে। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত মোস্তফা বলি মানেনা। বাজারে খাজনা দেয়া নেয়া নিয়ে সামান্য গ্যানঞ্জাম হয়েছে। শুধু বাজারে নয় নৌকার মধ্যে মাছ বিক্রি বা এই এলাকার জেলেরা অন্য এলাকায় মাছ বিক্রি করলে তাকে খাজনা দিতে হবে। এটা যেন মগের মুল্লুক। খাজনার গ্যাঞ্জামের ব্যাপারে গত বুধবার স্থানীয়রা শালিস বসে। শালিসে সকলকে মিলমিশ করে দেন শালিসদাররা। এরপর শালিসদারদের সামনেই মোস্তফা বলির বাহিনীর সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে এলোপাতারি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মারতে শুরু করে। এতে এলাকার প্রায় ৯জন কে কুপিয়ে এবং ১৫ জনকে পিটিয়ে আহত করে।
স্থানীয় শালিস মনির ডাক্তার ও আলাউদ্দিন ফরাজীকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, ঐ দিন আমরা অনেকে সেখানে ছিলাম শালিস করার জন্য। শালিসে সুন্দর ভাবে ফয়সালা করে দিয়েছি। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। আমরা ভিতরে বসে আছি। হঠাৎ মোস্তফা বলির লোকজন স্থানীয় আওলাদসহ সবাইকে মারধর শুরু করে। পরে জানতে পেরেছি মোস্তফা বলি বাইরে থেকে ২শ এর মত লোক সেখানে আগেই জড়ো করে রেখেছে। তার নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী বৃষ্টির মধ্যে প্রায় ঘন্টা খানেক তান্ডব চালিয়েছে।
অভিযুক্ত মোস্তফা বলির মোবাইল নাম্বারে বারবার রিং করলে তার নাম্বার বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে লালমোহন থানা অফিসার ইনচার্জ মাকসুদুর রহমান মুরাদ বলেন, এই ঘটনায় কেহ কোন অভিযোগ করেনি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।