লালমোহনে শামীম মেম্বারের কাছে জিম্মি ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের এলাকাবাসী

লালমোহনে ফরাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শামীম মেম্বারের কাছে জিম্মি এলাকাবাসী। জমি দখল, ঘর উচ্ছেদ, মাদ্রাসার মাঠ, কক্ষ দখল করে চলছে তার ব্যবসা। শামীম মেম্বার ও তার বাহিনীর ভয়ে কেহ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রায় ৮মাস আগে শামীম ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হন। মেম্বার নির্বাচিত হয়ে পুরো ৫নং ওয়ার্ডবাসীকে তিনি জিম্মি করে রেখেছেন। ৫নং ওয়ার্ডের আনিছল হক মিয়ার বাজারে শামীম মেম্বার কর্তৃক জোরপূর্বক বাজারের দোকানঘর উচ্ছেদ করে সেখানে ইটের ব্যবসা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, গত ইউপি নির্বাচনে শামীম মেম্বারের প্রতিদ্বন্ধী মেম্বার প্রার্থী ছিল কাঞ্চন ডাক্তারের ছেলে মামুন। মামুন নির্বাচনে হেরে যায় এরপর থেকে শামীম মেম্বারের চক্ষুশূল হয় মামুন ও তার পরিবার। বাজারের মসজিদের সামনে প্রায় ৪৫ বছর যাবত দোকান ঘরে ব্যবসা করছেন কাঞ্চন ডাক্তার। মাসখানেক আগে দোকান মেরামত করাকালীন সময়ে শামীম মেম্বার ও তার বাহিনী এসে দোকান ঘর করতে না দিয়ে পুরো দোকান ভেঙ্গে নিয়ে যেতে বলে এবং বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে থাকে। উপায়ান্ত না দেখে কাঞ্চন ডাক্তার তার ৪৫ বছরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঘর ভেঙ্গে নিয়ে যায়। বর্তমানে ঘরের সামনে ইট রেখে তা দখলে নিয়েছে শামীম মেম্বার। সেখানে এখন ইটের ব্যবসা করে শামীম মেম্বার। এছাড়া এতাধিক অভিযোগ রয়েছে এই মেম্বারের বিরুদ্ধে।
বাজারের পাশে রয়েছে মুসলিমিয়া দাখিল মাদ্রাসা। মাদ্রাসার মাঠ ও কক্ষ দখল করে ইট বালির ব্যবসা করার অভিযোগ রয়েছে শামীম মেম্বারের বিরুদ্ধে। মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, জোর করে মাদ্রাসার উত্তর পাশের ঘর ভেঙ্গে গরুর ঘর তৈরী করা হয়েছে। প্রায় ৩০০ গাছ নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। মাদ্রাসার জমি দখল করে নিয়েছে। মাদ্রাসার জমি মোট ১ একর। এরমধ্যে মাদ্রাসার বর্তমানে দখলে রয়েছে ৬৮.১০ শতাংশ। বাকীটা দখল হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামছুল আরিফ স্যারকে লিখিত দিয়েও কোন ফয়সালা হয়নি। তিনি সকল রেজুলেশন, চিঠি ও বিভিন্ন ডকুমেন্টস আমাদের কাছে দেখান।
কে এই দখলের সাথে জাড়িত এই প্রশ্নের জবাবে সুপার বলেন, এলাকার শামীম মেম্বারের নেতৃত্বে দখল করেছে তার বাহিনীর প্রধান ইব্রাহীম। এদের প্রভাব এখানে এত বেশি যে কেহ তাদের কিছু করতে ও বলতে পারেনা।
বাজারের সমজিদের সামনে ৬শতাংশ জমির উপর কাটা কাপড়ের দোকান ছিল মোঃ মনিরুল ইসলাম এর। সেখান থেকে তাকে উৎখাত করে এই শামীম মেম্বার ও তার লোকজন। ব্যবসায়ী মনির জানান, আমার জমির দলিল রয়েছে তারপরও আমাকে দোকান থেকে উৎখাত করে তারা দখল নিয়েছে। এর ভয়ে কেহ তার বিচার করছে না। বর্তমানে চলছে কঠোর লকডাউন এরই মধ্যে শামীম মেম্বার স্বাস্থ্যবিধি না মেনে আইনকে তোয়াক্কা না করে জনসমাবেশ এর আয়োজন করে। এলাকাবাসী শামীম মেম্বারের এসব অনৈতিক কর্মকান্ডের ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শামীম মেম্বারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, কাঞ্চণ ডাক্তারের ঘরের পুরো জায়গাটি মসজিদের। ঘরের পিছনে মসজিদের গাছ কেটে ফেলে কাঞ্চন ডাক্তার। গাছ কাটার কারণে সমজিদ কমিটি তাকে তার জায়গা থেকে চলে যেতে বললে সে ঘর সরিয়ে নেয়। আমি মসজিদ কমিটির সদস্য হিসাবে সেখানে ছিলাম।
ডাক্তারের ঘরের সামনে ইট রাখার সত্যতা স্বীকার করে শামীম মেম্বার বলেন, সামনের খালি যায়গায় আমি ইট রেখেছি, ঘরের ভিটা বা মধ্যে রাখিনি। মাদ্রাসার মাঠ, ঘর, গাছ কাটা সম্পর্কে বলেন, মাঠের ইটগুলো মসজিদের। আমি কোন ঘর দখল করিনাই, গাছও কাটিনাই, এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ব্যবসায়ী মনিরের যায়গা দখল সম্পর্কে বলেন, এটা মসজিদের জায়গা মনিরের জায়গা না।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।