সর্বশেষঃ

বজ্রপাতে ‘আহত’ হলে কী করবেন ?

দেশে আগের তুলনায় বজ্রপাতে হতাহতের ঘটনা বেশি ঘটছে। সাধারণত বর্ষার সময় বজ্রপাত হতে দেখা যায়। এ বছর বর্ষার শুরুতেই ব্যাপকহারে বজ্রপাত হতে দেখা গেছে। বিশেষ করে গত দুই সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবছর এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বজ্রপাতের প্রকোপ বেশি থাকে। বজ্রপাত বাড়তে থাকায় ২০১৬ সালে এটিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বজ্রপাত সাধারণত ৩০-৪৫ মিনিটি পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এ কারণে ঘন কালো মেঘ দেখা দিলে ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। সাধারণত বজ্রপাতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বেশিরভাগই তৎক্ষণাৎ মারা যায়। আহত হয়ে অল্প কিছু মানুষ বেঁচে যায়। কোনো ব্যক্তির ওপরে বজ্রপাত হলে তার শরীরের ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎ বয়ে যায়। যার ফলে হৃৎপি- বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় যেসব বিদ্যুৎ সঞ্চালনের লাইনে এক হাজার ভোল্টেজ বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি হয়ে থাকে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমেদ বলেন, বজ্রপাত থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় সেটি আল্ট্রা হাই-ভোল্টেজ। বজ্রপাত দুই ধরনের হয়। কোনো ব্যক্তির ওপর সরাসরি পড়তে পারে অথবা একটি বড় এলাকা জুড়ে বজ্রপাত হতে পারে। ‘কোনো ব্যক্তির ওপর সরাসরি বজ্রপাত হলে সে সঙ্গে সঙ্গে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়। বজ্রপাতে ভোল্টেজ এতো বেশি যে সেটা ১০ হাজার থেকে মিলিয়ন পর্যন্ত চলে যায়।
যদি কোনো আশপাশের গাছ, বৈদ্যুতিক খুঁটি, টাওয়ার কিংবা উঁচু ভবনের ওপর বজ্রপাত হয় তখন সেখান থেকে আল্ট্রা লো-ডিউরেশন বিদ্যুৎ সৃষ্টি হয়। আশপাশে যদি কেউ থাকে তখন তার শরীরে অতি দ্রুত বিদ্যুৎ প্রবেশ করে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে যায়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বজ্রপাত নিয়ে সতর্কবার্তায় বলেছে, বজ্রপাতে কেউ আহত হলে বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতো করেই চিকিৎসা করতে হবে। বজ্রপাতে আহত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন দ্রুত ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। কয়েক মিনিটের মধ্যে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে পারলে বাঁচানো সম্ভব হতে পারে। বেশি দেরি হলে আহত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
এ বিষয়ে চিকিৎসক তানভীর বলেন, ‘বজ্রপাতে আহত হলেও কিছু কিছু মানুষের হৃদপি- বন্ধ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবেই মারা যায়। আবার কারো-কারো হার্ট একটু বন্ধ হয়ে আবার চালু হয়। তাদের যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন হয়তো আমরা কাউকে-কাউকে রক্ষা করতে পারি। যদি আহত ব্যক্তির হৃৎপি- সচল থাকে তাহলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে সিপিআর দিতে হবে। সেজন্য সিপিআর সম্পর্কে জ্ঞান থাকা জরুরি।
সিপিআর দিয়ে হৃদপি- সচল রাখতে হবে। এর মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স বা কোনো গাড়ি ডেকে দ্রুত আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিতে হবে। আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব করা যাবে না। এ চিকিৎসক বলেন, বজ্রপাতে আহত ব্যক্তিকে ধরার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। কারণ আহত কিংবা মৃত ব্যক্তির শরীরে বিদ্যুৎ থাকে না। সুত্র : বিবিসি বাংলা।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।

You cannot copy content of this page