ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: দৌলতখানে দেড় কোটি টাকার মাছের ক্ষতি ভেসে গেছে গরু মহিষ

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে ভোলার দৌলতখান উপজেলায় ৯৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ৭৪ মেট্রিক টন মাছ ও অবকাঠামো মিলে এক কোটি ৬১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে পুকুর ও ঘেরের মাছ হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষীরা।

এদের কেউ আবার ধার-দেনা বা ঋণ নিয়ে পুকুরে মাছের চাষ শুরু করছেন। কিন্তু ঝড়ের কারণে তাদরে মাথায়ও হাত পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই ঘুরে দাঁড়াতে পাড়ছেন না। তাদের মধ্যে অনেকেই গত বছরের ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষতি এখনও ঠিকমত পুসিয়ে উঠতে পারেন নি। বর্তমানে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দৌলতখান উপজেলায় ৫৫ হেক্টর জমির সবজি আক্রান্ত হয়েছে। এতে চাষীরাও ভেঙে পড়েছেন। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দৌলতখান উপজেলায় বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের পুকুরের মাছ পানের বরজ বসতঘর ও রবি শস্য পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাজিপুর , মদনপুর ইউনিয়নের চরের বাসিন্দাদের। নদীতে মাছ শিকার আর জমি চাষাবাদ- এই দুই পেশা সেখানকার মানুষের। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে এবার অনেকের ঘরে রান্না পর্যন্ত হয়নি সেখানে। আধুনিক এ সভ্যতার যুগেও এসব এলাকার মানুষ বেঁচে রয়েছেন চরম অবহেলায় মধ্যে। যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সরকারি সাহায্য সহযোগীতাও পৌঁছায় নি তাদের কাছে।

হাজিপুর চরের ইউপি সদস্য আবুতাহের জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অনেক পরিবারের গরু, মহিষ, পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়াও ঘর বাড়ি প্লাবিত হয়ে অনেকের গরু,মহিষ, ছাগল, মুরগি, মারা গেছে। সরকারি ভাবেও এখনও তারা কোন সহায়তা পায়নি। অনেকে এখনও রান্ন করতে পারেনি জোয়ারের পানির কারণে।

মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাছির উদ্দিন নান্নু মিয়া জানান, ‘পূর্ণিমার জোয়ার ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার ইটের রাস্তা , সাড়ে এগারো কিলোমিটার কাচা রাস্তা ভেঙে গেছে। রাস্ত ঘাট ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেই সাথে জেলেদের নৌকা ও ট্রলার নদীর ঢেউয়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ি। এবং ১৪টি সরকারি আবাসনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুল হাছনাইন জানান, ‘ক্ষয়ক্ষতির তালিকা আমরা ঊধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। সরকারের পক্ষ থেকে কোন সহায়তা এলে আমরা তা বিতরণ করবো। তিনি জানান,‘ক্ষতিগ্রস্ত পুকুরগুলো পরিদর্শন করেছি। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আগে মাছ চাষীদের ঘের রক্ষার জন্য চারপাশে নেট দেয়ার জন্য বলা হয়ছে। এর সু-ফল অনেক মাছ চাষীরা পেয়েছেন।

 

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।