সর্বশেষঃ

শতাব্দীর মহানায়ক অনন্য মুজিব : পর্ব-০৪

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন) :

(গত পর্বে র পর) : স্ত্রী একখানা পরিস্কার লাল পেড়ে অথবা কালো পেড়ে শাড়ী পড়েই খুশি থাকতেন। সাধারণ ছিল তাদের বাড়ীর খাওয়া-দাওয়া চলা ফেরা। পোলাও কেরমা, জরদা, ফিরনি, কাবাব, চপ কাটলেটের গল্প তাদের মুখে শুনিনি। সাধারণ বাঙ্গালী বৌ-ঝিদের মত ছিল তাদের জীবন যাত্রার প্রণালী।
অথচ শেখ কামালের বিয়ের পর দেশে একটা সাড়া পড়ে গেল, বঙ্গবন্ধু ছেলের বউয়ের মাথায় সোনার মুকুট। সাড়া গায়ে সোনার গহনা। অথচ আমরা দেখি সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের বৌ-ঝিদের বিয়েতে বা বৌ-ভাতে গা ভর্তি গহনা। মাথায় প্রায়ই দেখি সোনার জড়োয়া সেটিং মুকুট। লালবাগ, ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, ইন্দিরা রোড, ক্যান্টনমেন্ট প্রায় সব জায়গায় দেখি মেয়ের বা বৌয়ের গা ভর্তি গহনা ও মাথায় মুকুট। বাবা, মা, শ্বশুর, শাশুরীরা আদর করে অনেক সময় সাধ্যমত বা সাধ্যের বাইরেও দিয়ে থাকেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বা তার ভাই-বোনেরা যদি আদর করে তাদের পুত্রবধূকে দিয়ে থাকেন, তবে তা দিয়ে দেশে-বিদেশে এক রণডঙ্কা বাজিয়ে উলুধ্বনি করে দেশের লাভ কি হল ? জানি না। শেখ মুজিবের মুখেই শুনেছি এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম। তোমাদের যার যা কিছু আছে শত্রুর সাথে মোকাবিলা করার জন্য এগিয়ে যাও। শেখ মুজিব না থাকলে বাংলাদেশ হত না। তার মুখেই শুনেছি ছয় দফা আন্দোলনের কথা। কালই বাংলার ভাগ্য নির্ণয় করল।
শেখ মুজিবকে উদ্দেশ্যকারীরা স্ত্রী, পুত্র, পুত্রবধূসহ রাতের গভীরে এক মস্তবড় অজগর সাপের মত গিলে খেয়ে ফেলল। সেই উনিশ শ’ পচাত্তরের পনেরো আগষ্ট আমাদের বাঙ্গালী জাতির জীবনে ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্রে পরিয়ে দিল আমাদের জাতীয় জীবনে এক কলঙ্কের দুর্ভাগ্যের লাল রক্তের শিখা।
সেই দিনটির কথা আমার আজ জাগে স্মরণের বেদিমূলে। দেশ নিরব, নির্বাক, নিস্তব্ধ, হতভম্ব। কেউ হয়তো কাঁদতেও ভুলে গেছে। কেউ হয়তো জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। পথে ঘাটে লোকজনের কোন আনা-গোনা নেই। মনে হয়েছে কোলাকুলি যেন কেন নিঝুম পুরীতে পাড়ি জমিয়েছে দলে দলে, কাতারে কাতারে। কেন দেশের লোক সেদিন রুখে দাড়াল না ? কেন উচ্চ-বাচ্য করল না ? ঢাকায় আওয়ামীলীগের নেতৃস্থানীয়রা নিজ নিজ বাসভবনে অবস্থান করেছিল।

 

(চলবে——-)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।