ভোলায় বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিকদের প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান

বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশন এর আয়োজনে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ভোলা খেয়াঘাট থেকে জেলা প্রশাসক এর কার্যালয় প্রজন্ত লকডাউন এর নামে লঞ্চ বন্ধ করে রাখার কারণে অসহায় লঞ্চ শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
এই সময় জেলা প্রশাসক এর কার্যালয এর সম্মুখে আবুল কালাম, ক্রিস্টাল ক্রুজ, শহিদুল শেখ কর্ণফুলী, আব্দুর রব হাওলাদার, কর্ণফুলী ও মোঃ ইমন সহ বক্তব্য প্রদান করে বলেন, শত সমস্যা সংকটের মধ্য দিয়ে কোভিড-১৯ করোনা মহামারী এর শুরু থেকেই সরকারের আহ্বান ও নির্দেশনা অনুসরণ করেই নৌ-যান শ্রমিকরা দায়িত্ব পালন করে আসছেন এবং ভবিষ্যতেও পালন করবেন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঘাতের পর একইভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে নিদারুণ শত কষ্টের মধ্যবিও যাত্রীবাহী নৌযান শ্রমিকদের জীবন চলছে আজকে প্রায়। দেড় মাস যাবত লকডাউন চলতে থাকার কারণে অধিকাংশ শ্রমিক এই ঈদের আগেই মালিকদের কাছ থেকে কোনো বেতন ও বোনাস না পেয়ে আমরা নৌ-যান শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দুঃসহ জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছি।
এ বিষয়ে ৬ মে চেয়ারম্যান বিআইডব্লিউটিএ এর মাধ্যমে একটি স্মারকলিপি মাধ্যমে নৌযান চলাচলের অনুমতি প্রদানের আবেদন করা হয়েছিল আমরা ওই সময় বলেছিলাম, ব্যাংক, শপিং মল, হাট-বাজার, দোকানপাট, ইফতার কেনাবেচা সহ সব কিছু খোলা রেখে, শুধুমাত্র দূরপাল্লার বাস লঞ্চ ও ট্রেন বন্ধ রেখে লকডাউন এর কোন সুফল পাওয়া যাবে না। এমন-ই অবস্থায় সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে নৌ-যান চলাচলের আবেদন প্রধান করা হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের আবেদন অগ্রাহ্য হলেও ঈদে দরিদ্র যাত্রী সাধারণের চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে ৫ থেকে ৭ গুণ অতিরিক্ত ভাড়া ব্যয় করে অত্যন্ত যানজটের মধ্যে দিয়ে এ লকডাউনের উদ্দেশ্যকে চরমভাবে লংঘন করে ফেরিঘাটসহ সর্বোচ্চ লোকজনের যে প্রচ- ভিড় পরিলক্ষিত হয়েছে। এমনকি পদপিষ্ট হয়েও মানুষ মারা যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এমনি অবস্থায় আমরা আশা করেছিলাম মানুষের চরম ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে সরকারও নীতিনির্ধারক মহল দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য আমরা প্রত্যক্ষ করলাম আবারও এক সপ্তাহের জন্য দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে যা দেশবাসীকে হতবাক করেছে। আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল ঈদের পুর্বে নৌযান শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস প্রদান করা হবে এছাড়াও সরকারের তরফ থেকে প্রণোদনা হিসাবে ২৫০০ টাকা প্রদান করা হবে, কিন্তু এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি। সারা বাংলাদেশে ৫ ভাগ নৌ-শ্রমিক ও ঈদের পুর্বে বেতন ও বোনাস এবং সরকারি সহযোগিতা না পেয়ে চরম অমানবিক ভাবে ঈদ উদযাপন করেছেন। দরিদ্র যাত্রীসাধারণ ও তাদের সর্বোচ্চ রাস্তায় রেখে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করেছেন।
বর্তমানে বেতন ও বোনাস না পাওয়ায় শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছে। এমনই অবস্থা ঈদের জামা কাপড় তো দূরের কথা পরিবার পরিজনকে মুখে দু’বেলা দু’মুঠো ভাত তুলে দিতেই তাদের হিমশিম খাচ্ছে। এমনি অবস্থায় আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী নিকট সবিনয় আবেদন জানাচ্ছি। আমাদের নৌযান শ্রমিকদের চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থা এবং দরিদ্র যাত্রী সাধারণকে স্বল্প ব্যয়ে রাজধানীতে ফিরে আসতে এবং নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদান করতে পারে এ বিষয়ে বিবেচনা করবেন। সরকার আমাদের আবেদন এর যুক্তিকতা উপলব্ধি পুনঃবিবেচনা করে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে অতিদ্রুত নৌযান চলাচলের অনুমতি প্রদান করবেন।