নোয়াখালী হাতিয়ার সোনাদিয়া ইউনিয়ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় এক মেম্বার প্রার্থী নিহত হয়। এতে এই ঘটনায় ৪ জন গুরুত্বর আহত হয়। শুক্রবার সকালে হাতিয়ার সোনাদিয়া ইউনিয়নের চরচেঙ্গা বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এদিকে শুক্রবার হামলা ও হত্যার সাথে জড়িত ৫ জন স্পীডবোটযোগে মনপুরায় পালিয়ে আসে। ঘটনাটি দুপুর ২ টায় হাতিয়া থানা পুলিশ মনপুরা থানাকে অবহিত করে। একপর্যায়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৫ জন মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের জনতা বাজার থেকে স্পীডবোট করে পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ-জনতা ধাওয়া করে। পরে জড়িত ৫ জন জনতা বাজার সংলগ্ন বনবিভাগের কেওড়া বাগানের গহীন বনে আতœগোপন করে। পরে সন্ধ্যা ৬ টায় কেওড়া বাগানে পুলিশ-জনতা-কোস্টগার্ড অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করলেও অপর ২ জনকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
মনপুরা পুলিশে কাছে আটককৃতরা হলেন, সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোসলেহউদ্দিন ফারুক, খোকন ও রাসেদ। এরা তিন ভাই হাতিয়ার সোনাদিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম চরচেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবদুল আউয়ালের ছেলে।
এদিকে হামলায় নিহত মেম্বার প্রার্থী জোবায়ের হাসান সোনাদিয়া ইউনিয়নের মধ্য চরচেঙ্গা গ্রামের মৃত আবু তাহেরের ছেলে। সে সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী ছিল। আহতরা হলেন, মেহেদী হানান জীবন (২২), মোঃ ইরাক (৩৫), মোঃ রাজু (৩০), মোঃ রহিম (৩৮)। এদের সবার বাড়ি সোনাদিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।
অন্যদিকে ঘটনার পর হত্যায় জড়িতরা যে স্পীডবোট করে মনপুরা পালিয়ে আসছিল তখন হাতিয়ার কোস্টগার্ড ওই স্পীডবোটকে ধাওয়া করে। পরে দুপুর ৩ টায় হাতিয়া কোস্টগার্ডের লে. কমান্ডার বিশ্বজিত এর নের্তৃত্বে একটি টিম মনপুরার চরফৈজুদ্দিন থেকে যে স্পীডবোট করে ঘটনার সাথে জড়িতরা পালিয়ে মনপুরা আসে সেই স্পীডবোটের ড্রাইভার রাজীব ও স্পীডবোটটি হাতিয়ায় নিয়ে যায়। পরে ঘটনার সাথে জড়িত মনপুরায় পালিয়ে আসা ৫ জনকে ধরতে পুলিশ, মনপুরা কোস্টগার্ড বিভিন্নস্থানে অভিযান চালায়।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে চরচেঙ্গা বাজারে ইউনিয়ন পরিষদের চাল বিতরন করা হয়। এসময় বিতরণে অনিয়মের কথা বলে কয়েকজন প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যানের লোকজন এসে তাদের প্রতিহত করে। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর উত্তর দিক থেকে চেয়ারম্যানের লোকজন অস্ত্র নিয়ে এসে বাজারে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় বাজারে অবস্থান করা নৌাকার প্রার্থীর সমর্থকদেরকে পিটিয়ে বাজার থেকে বের করে দেয় নুরুল ইসলামের লোকজন। পরে সোনাদিয়া মেম্বার প্রার্থী জোবায়ের হোসেনের অফিসে প্রবেশ করে সন্ত্রাসীরা হামলা করে ও পায়ের রগ কেটে দেয়। পরে নিহত মেম্বারপ্রার্থীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। অপরদিকে আহত ৪ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, হাতিয়ায় হামলা ও নিহতের ঘটনায় জড়িতরা মনপুরায় পালিয়ে আসার খবর পেয়ে পুলিশ-জনতা দক্ষিণ সাকুচিয়া জনতা বাজার সংলগ্ন কেওড়া বাগানে অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করে। পরে রাত ৮টায় হাতিয়া থানার পুলিশের একটি টিমের কাছে আটককৃত ৩ জনকে হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে হাতিয়ার থানার ওসি আবুল খায়ের জানান, এই ঘটনায় হাতিয়ায় ৬ জন ও মনপুরায় ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।