১২ বছরের আইনি লড়াই শেষে রিকশাচালক জাহাঙ্গীর পেলেন ন্যায়বিচার
সচেতনতার কোন বিকল্প নেই

কলেজ জীবনের খুব ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর সাথ
অনেক দিন পর আজ ফোনে কথা হলো। কথার মাঝে বন্ধু জানালো ও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। ৭ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গত ২৫ এপ্রিল বাসায় এসেছে। এখন করোনা নেগেটিভ। কিন্তু কিছু অসুস্থতা এখনো আছে, বাসা থেকেই সেগুলোর চিকিৎসা নিচ্ছে। ওর ফুসফুস আক্রান্ত হয়েছে শতকরা ২০ ভাগ। চার দিন অক্সিজেন দেয়া লেগেছে। চিকিৎসা খরচ কত হয়েছে – জিজ্ঞাসা করতে ও জানালো যে ও যেই হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে সেটি মোটামুটি মানের কোভিড ১৯ বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতাল। বিভিন্ন টেস্ট সহ সাত দিনের মোট হাসপাতালের বিল হয়েছে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা। বন্ধু ঢাকায় একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করে। পাশাপাশি প্রাইভেট টিউশন করে। এই অসময়ে ওর জন্য এই চিকিৎসা খরচ ম্যানেজ করতে যে কতটা বেগ পেতে হয়েছে তা সহজেই অনুমান করতে পারছি। সাতদিনের চিকিৎসা খরচ যেখানে লাখ টাকার উপরে, নিন্মবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে এ টাকা যোগার করা অনেকক্ষেত্রেই অসম্ভব হয়ে পরে। অনেকের সুস্থ হতে আরো বেশি সময় লাগে। অনেকের আবার আই সি ইউ সাপোর্টেরও প্রয়োজন পরে অনেক সময়। এই সব কিছু ব্যবস্থা করতে দরকার হয় মোটা অংকের টাকার।
সংক্রমণের মাত্রা কমাতে দেশব্যাপী লকডাউন চলছে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার গত কয়েক দিন কিছুটা কম। আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার তুলনামুলক কম হওয়াকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা লকডাউনের সুফল হিসেবে দেখছেন। তারা আরো কয়েক সপ্তাহ লকডাউন কার্যকর রাখার সুপারিশ করেছেন।
ব্যবসায়ীদের দাবীর মুখে সরকার গত ২৫ এপ্রিল থেকে দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মার্কেট, শপিংমল খোলার অনুমতি দেয়। ঈদ যত কাছে আসছে মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে উপচে পরা ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে চরম অবহেলা করেই চলছে ক্রয় বিক্রয়।
অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এবং একটি বৃহৎ শ্রেনীর জীবিকার প্রয়োজনে মার্কেট খুলে দেয়া ছাড়া সরকারের বিকল্প কোন উপায় ছিল না, দুই এক দিনের মধ্য গণপরিবহনও স্বাভাবিক নিয়মে চলাচল করবে। এখন সুস্থ ও সুরক্ষিত থাকার চাবি আমাদের নিজেদের হাতে। দোকান, মার্কেট, শপিংমল যতই খোলা থাক না কেন, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে অবস্থান না করি। নতুন পোশাক না কিনলেও ঈদ হবে, কিন্তু পরিবারের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে ঈদের আনন্দটাই মাটি হয়ে যাবে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ একেবারে চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মাস্ক, সামাজিক দুরত্ব, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, নিয়মিত হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলা- এই বিষয়েগুলোকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের অতিবাহিত করতে হবে আগামীর দিনগুলো। নিজেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য সচেতনতার কোন বিকল্প নেই।