সর্বশেষঃ

জীবনের ডায়েরী থেকে গল্প সমগ্র : পর্ব-৯২

ড. তাইবুন নাহার রশীদ (কবিরত্ন) :

(গত পর্বের পর) : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মালয় জাতীয়তাবাদ মাথা তুলে দাঁড়ায়। গঠিত হয় বিভিন্ন সংগঠন। জাপানী দখলদারিত্বেও সময় জাতীয়বাদী আন্দোলন আরো তীব্র হয়ে ওঠে। ১৯৪৬ সালে জাতীয়তাবাদী বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে “ইউনাইটেড মালয় অরগানাইজেশন” (ইউ.এম.এন.ও)। এই সংস্থার প্রধান লক্ষ্য হয় জাতীয় স্বাধীনতা অর্জন। যুদ্ধেও পর ব্রিটিশ সামরিক প্রশাসন চালু করা হয়।
১৯৪৬ সালের এপ্রিল মাসে গঠন করা হয় মালয়ান ইউনিয়ন। স্টেটস সেটলমেন্টস বাতিল করা হয়। সিঙ্গাপুরকে সরাসরি বৃটিশ অধীনস্থ করা হয়। অন্যদিকে মালয়ী শাসকদের কাছ থেকে ক্ষমতা নিয়ে নেওয়া হয়। ফলে ১৯৪৮ সালে জাতীয়তাবাদীদের প্রবল বিরোধীতার মুখে মালয় ইউনিয়ন বাতিল করা হয়। সৃষ্টি করা ফেডারেশন অব মালয় এগ্রিমেন্ট। এর বলে একজন হাইকমিশনার দেওয়া হয়। ফেডালে লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের মাধ্যমে রাজ্যগুলোকে যথেষ্ট ক্ষমতা দেওয়া হয়। ১৯৫৩ সালে ভোর্নিও ও সারওয়ার্কেও জন্যও এ ব্যবস্থা করা হয়। এর মাধ্যমে ১৯৫৫ সালে নতুন সংবিধান রচিত হয়। এর আওতায় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলা হয়। নির্বাচনে ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশ (ইউ.এম.এন.ও), মালয় চীনা এসোসিয়েশন (এমসিএ) ও মালয় ভারতীয় কংগ্রেস (এম.আই.সি) এর মিলিত কোয়ালিশন মোট ৫২টি আসনের ৫১টি জয়লাভ করে। এভঅবে স্বাধীনতার পক্ষে কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়।
মালয়েশিয়া ১৯৫৭ সালে স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে মালয়েশিয়া এ পর্যন্ত (১৯৯৫) ৯ বার নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনের বছরগুলো হচ্ছে- ১৯৫৯, ১৯৬৪, ১৯৬৯, ১৯৭৪, ১৯৭৮, ১৯৮২, ১৯৮৬, ১৯৯০, ১৯৯৫। এই নির্বাচনগুলোর মধ্যে প্রথম ৩টি নির্বাচনে এশিয়ান পার্টি জয়লাভ করে। টুংকু আব্দুর রহমান প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রশাসন চালান। ১৯৭০ সালে তিনি টুন আবুল রাজ্জাকের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। ১৯৭৪ সালের নির্বাচনে আরো কয়েকটি বিরোধী দল নিয়ে গঠিত ন্যাশনাল ফ্রন্ট জয়ী হয় এবং টুন আব্দুল রাজাক প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৭৬ সালের ১৫ জানুয়ারী তিনি পরলোকগমন করলে তার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হন টুন হুসাইন ওয়ান। ১৯৮১ সালের ১৬ জুলাই টুন হুসাইন ওয়ান অবসর নিলে ড. মাহাথির মুহাম্মদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিতন হন। ১৯৮২, ১৯৮৬, ১৯৯০ ও ১৯৯৫ সালের নির্বাচনেও ন্যশনাল ফ্রন্ট বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়। ড. মাহাথির মুহাম্মদ ১৯৮১ সাল থেকে দীর্ঘদিন প্রধানমন্ত্রীর পদ অলংকৃত করে ছিলেন। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া অল্প সময়ের ব্যবধানে স্বাধীনতা লাভ করলেও বাংলাদেশের তুলনায় মালয়েশিয়া বহুগুনে এগিয়ে রয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে একমাত্র তাদের স্বচ্ছ রাজনীতির কারণে।

 

(চলবে——-)

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।