দৌলতখানে একই সম্পত্তির দাবীদার দুই পক্ষ ॥ পৃথক পৃথক মামলা দায়ের

ভোলার দৌলতখান উপজেলার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নে কিছু জমি নিয়ে দুই পক্ষ দাবী করছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। উভয় পক্ষই জমির মালিকানা দাবীর পক্ষে বিভিন্ন কাগজ উত্থাপন করছেন। মিমাংশার জন্য একাধিকবার শালিস বৈঠক হলেও কোন সুরাহা হয়নি। বিরোধীয় সম্পত্তি নিয়ে উভয় পক্ষ-ই পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করেছেন।
সূত্রে জানা গেছে, দৌলতখান উপজেলার উত্তর জয়নগর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোঃ আলমগীর গংদের পৈত্রিক এবং ক্রয়সূত্রে এসএ ৬৫৯ নং খতিয়ানে ৩.২৯ শতাংশ, এসএ ৮১৪ নং খতিয়ানে ১০০ শতাংশ, এসএ ৪৪৯ নং খতিয়ানে ৬৩ শতাংশ জমি নিয়ে একই এলাকার বাসিন্দা লোকমান গংদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছে। উক্ত বিরোধীয় সম্পত্তি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিস মিমাংসার জন্য বসা হলেও কোন সমাধানে পৌঁছা সম্ভব হয়নি। প্রত্যেক পক্ষই বিরোধীয় খতিয়ানগুলোতে জমি পাবে এমন দাবী করে আসছেন। বিরোধীয় সম্পত্তি নিয়ে লোকমান গং ভোলার সদর সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী মামলা করেন। যার নং-২৭৭, তারিখ-২২/১১/২০২০ইং। এবং আলমগীর গংরাও জমির মালিকানা দাবী করে পৃথক ভাবে ভোলার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে মামলা দায়ের করেন। যার নং-এমপি-১০৪/২১, দৌলতখান, ভোলা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক লোকের কাছ থেকে জানা গেছে, উপরোক্ত এসএ খতিয়ানভূক্ত জমিতে উভয় গ্রুপের মধ্যের বিরোধ চলে আসছে। কিন্তু বিরোধীয় সম্পত্তি আলমগীর গংদের ভোগদখলে রয়েছে। এদিকে গত ১২ মার্চ রাতে দুস্কৃতিকারীরা মোঃ আলমগীর গংদের বাড়ী পিছনে থাকা একটি খড়ের চাউলিতে আগুন দেয়। যা পরবর্তিতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন। এ জমি নিয়ে উভয় পক্ষই মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়াও লোকমান গংরা শক্তিধর হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে আলমগীর গংদেরকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। আমরা চাই জমি যার-ই হোক না কেন সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে একটি সমাধান হোক।
বিরোধীয় সম্পত্তি সম্পর্কে মোঃ আলমগীর এর সাথে যোগাযেগা করা হলে তিনি বলেন, উপরোক্ত দাগগুলোতে আমরা পৈত্রিক এবং ক্রয়সূতে মালিক এবং দীর্ঘ দিন যাবত ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু লোকমান গংরা হঠাৎ করে আমাদের জমিতে তারাও নাকি জমি পাবে এমন দাবী করছে। তাদের সাথে আমাদের জমি নিয়ে বিরোধ চলামান। স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার বসা হলেও কোন মিমাংশা হয় নি, বিধায় আমরা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করি। যার নং-এমপি-১০৪/২১, দৌলতখান, ভোলা। বর্তমানে ওই মামলা চলমান রয়েছে।
লোকমান গংদের সাথে বিরোধীয় সম্পত্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন দাগে রেকর্ডসূত্রে ১১ একর ৪০ শতাংশ জমির মালিক। কিন্তু আলমগীর গংরা তা আমাদের বুঝিয়ে দেন না। তারা জোরপূর্বক জমি ভোগদখল করছেন। স্থানীয়ভাবে মিমাংসা না হওয়ায় আমরাও পৃথকভাবে ভোলার সদর সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী মামলা করেন। যার নং-২৭৭, তারিখ-২২/১১/২০২০ইং। সেই মামলাও চলমান রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে আলমগীর গংদের খড়ের চাউলিতে আগুন দেয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের কুঢার চাউলিতে কারা আগুন দিয়েছে তা আমরা জানিনা।
এ ব্যাপারে দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বজলার রহমান জানান, বিরোধীয় জমি নিয়ে উভয় পক্ষই পৃথক পৃথকভাবে অভিযোগ দিয়েছেন, এমনকি মামলাও চলমান রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।