নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিআইডব্লিউটিসি কর্মচারী কামরুল ও জহির

ভোলার ইলিশা ফেরি ঘাটে চলছে টোলের নামে অর্থ বাণিজ্য

ভোলা সদরের ইলিশা ফেরিঘাটে টোলের নামে বিআইডব্লিউটিসি কর্মচারী কামরুল ইসলাম ও জহির এর নেতৃত্বে চলছে অর্থ বাণিজ্য। বিআইডব্লিউটিসি’র নিয়ন্ত্রণাধীন ফেরিগুলোতে নির্ধারিত টোলের বাহিরে প্রতিটি পিকআপ-ট্রাক-ভারী যানবাহনসহ প্রায় সকল যানবাহন থেকে অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী চালকগণ।
সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, যে ভোলা সদরের ইলিশা ফেরিঘাটে বিভিন্ন গ্রুপ এবং বিআইডব্লিউটিসির কর্মচারীদের নেতৃত্বে চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে। যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মচারী কামরুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলাম, নৈশপ্রহরী আলামিন সহ বিভিন্ন কর্মচারী। ফেরির প্রবেশমুখে কাউন্টারে টিকেট কাটার সময় প্রতিটি গাড়ির চালকদের নিকট থেকে টিকিটের নির্ধারিত টোল উল্লেখ থাকা সত্বেও অতিরিক্ত ৫০০, ৬০০, ৮০০, ১০০০, ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা অতিরিক্ত টোল আদায় করে থাকেন। তাদের নির্ধারিত চাঁদা কোনো চালক দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদেরকে ফেরিতে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না, তাদেরকে তিন-চারদিন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে রাখা হয়। পরে বাধ্য হয়ে তারা অতিরিক্ত টোল দিতে বাধ্য হন। এরকমই এক যাত্রীর টিকিটে দেখা যাচ্ছে গাড়ি নং ৭০৬২, টিকেটের ক্রমিক নং-৫০।
গাড়ির চালক অভিযোগ করেন, তাকে চারদিন ইলিশা ফেরিঘাটে বসিয়ে রাখা হয়েছে অতিরিক্ত টোল না দেয়ার কারণে। পরে নির্ধারিত ৩১২৫ টাকার টোল ৩৮০০ টাকা দিলে তাকে ফেরিতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। অনুরূপভাবে গাড়ি নং-৫১৪০, টিকিটের ক্রমিক নং-৩৭। এই গাড়ির চালক অভিযোগ করে বলেন, তার নির্ধারিত ২৩০০ টাকার টোল তার কাছ থেকে ৩০০০ টাকা নিয়ে তাকে ফেরিতে প্রবেশ করতে দেয় বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মচারী কামরুল ইসলাম ও জহির জহির ইসলাম।
এ ধরনের আরও অসংখ্য অতিরিক্ত টোল নেয়ার উদাহরণ রয়েছে যা আইনগতভাবে সম্পূর্ণ অবৈধ। এছাড়াও বিআইডব্লিউটিসি’র নৈশপ্রহরী আল আমিনের নেতৃত্বে ফেরি ঘাটের উপরে ছয়জনের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। যারা বিভিন্ন গাড়ি থেকে লাইনম্যানের নাম দিয়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে চাঁদা নিয়ে থাকেন। কেউ না দিলে তাদেরকে সিরিয়াল অনুযায়ী ফেরিতে উঠতে দেয়া হয়না। নানাভাবে হয়রানি করা হয়, হুমকি-ধামকি দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে আলামিনের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তিনি লাইনম্যানের টাকা উঠাচ্ছেন ৩০০, ৪০০ টাকা করে, তারা ছয়জন লাইনম্যানের টাকাটা উঠিয়ে থাকেন। তারা হলেন আলামিন, হানিফ, বাপ্পি নজরুল শাহ, আলম, আবুল সহ প্রমুখ।
বিআইডব্লিউটিসির দায়িত্বপ্রাপ্ত আলম সিকদার এর কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবেন। ভুক্তভোগী চালকগণ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ভোলা সদরের ইলিশা ফেরিঘাটে অতিরিক্ত টোলের নামে যে চাঁদাবাজির মহাউৎসব চলছে তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট আবেদন জানান।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে ইতিপূর্বেও ইলিশা ফেরিঘাটে বিআইডব্লিউটিসি কর্মচারী কামরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে অতিরিক্ত টোল এর নামে চাঁদাবাজি হয়েছিল। তখন স্থানীয় এমপি তোফায়েল আহমেদের হস্তক্ষেপে বেশ কিছুদিন তা বন্ধ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করে আবারো সেই কামরুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলামের নেতৃত্ব দিয়ে অতিরিক্ত টোলের নামে ব্যাপক হারে চাঁদাবাজি চালাচ্ছেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আমাদের সাইটের কোন বিষয়বস্তু অনুমতি ছাড়া কপি করা দণ্ডনীয় অপরাধ।